Скачать или смотреть জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিম্নমানের খাবার

সুস্বাস্থ্যের জন্য চাই মানসম্মত খাবার । মেধা বিকাশ ও বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব অনেক বেশি । অথচ পুষ্টিকর এই খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী।

আবাসিক হলগুলোর ডাইনিং এবং ক্যান্টিনের খাবারের মান অনেক নিম্নমানের হওয়ায় শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসার জায়গা বটতলাস্থ খাবারের দোকানগুলো । পুরো বটতলা জুড়ে প্রায় ৬০ টি খাবারের দোকান রয়েছে ।

অথচ এখানের অবস্থা বর্তমানে আরো খারাপ । নিম্নমানের ভাত , রুটি-পরোটাগুলো শক্ত চামড়া, রান্না করা ডাল আর পানির মধ্যে তফাৎ খুব সামান্যই । খাবারে তেলের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত থাকে ।

এছাড়া আগের দিনের বিক্রি না হওয়া খাবার পরের দিনের খাবারের সাথে মিশিয়ে বিক্রি করার অভিযোগও শিক্ষার্থীদের ।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিজান বলেন, অধিকাংশ সময় বাসি পঁচা ভাত, নোংরা স্যাঁতসেতে পরিবেশে খাবার রান্না করা হয় । তাছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থাও খুব খারাপ।

বটতলার খাবারের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় হলো এখানের বাহারি রকমের ভর্তা । ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুর-দুরান্তের লোকজনও ভর্তা খেতে আসে এখানে । কিন্তু অভিযোগ রয়েছে একদিনে তৈরি করা ভর্তা সপ্তাহ ধরে খাওয়ানো হয় ।
এ বিষয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী হান্নান শাহ বলেন , কখনো কখনো ভর্তা থেকে গন্ধ বের হলে আমরা দোকানদারকে বললে সেগুলো ফেলে দেয় । না হলে ওগুলোই খাওয়ায় ।

প্রশাসনের নির্দেশিত খাবারের মূল্য তালিকা দেওয়া থাকলেও তা মানছে না দোকানগুলো । কিন্তু দোকান মালিক ও দোকান মালিক সমিতির দাবি করেন এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ।

দোকান মালিক সমিতির কোষাধ্যাক্ষ বারেক হোসেনের মতে, বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো খাবার পাওয়া যায় জাবি ক্যাম্পাসের বটতলায় ।

বাংলার স্বাদ হোটেলের মালিক আলী ইমাম বলেন,শিক্ষকবৃন্দ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন । আমরা এখন কোন বাসি-পঁচা খাবার খাওয়াই না ।

প্রশাসন বেশ কয়েকবার অভিযানও পরিচালনা করে কয়েকটি দোকান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে । কিন্তু ফলাফল শুন্য।

এ বিষয়ে আ.ফ.ম কামালউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষক জনাব ইখতিয়ার উদ্দীন বলেন, ইতোমধ্যেই কয়েকটি দোকান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছি । জমিরামানও করা হয়েছে পাঁচটি দোকানকে । সবাইকে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। দ্বিতীয়বার কেউ এমন কাজ করলে স্থায়ীভাবে দোকান বরাদ্দ বাতিল করা হবে ।

কনজিউমার ইযুথ (জে ইউ) এর সদস্য আরমান খান বলেন, আমরা প্রশাসনের সাথে মিটিং করে খাবারের তালিকা তৈরি করে দিয়েছি । মাঝে মাঝে হল প্রশাসন নিয়ে অভিযান পরিচালনা করি।

এ দিকে নিম্নমানের খাবার খেয়ে পেটের নানা সমস্যায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা । প্রতিনিয়ত তারা ভিড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ।

জাবির চিকিৎসা কেন্দ্রের ডাক্তার এম.কে মহিউদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা বাসি পঁচা ও তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পেটের নানা সমস্যায় ভুগে থাকে । মাঝে মাঝে কলেরা হাসপাতালে পর্যন্ত পাঠাতে হয়।

দেশের সবচেয়ে মেধাবি মুখগুলো গ্রহণ করছে সবচেয়ে পঁচা খাবার । অথচ মেধার বিকাশ ও বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই । তাই অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে সমস্যার আশু সমাধান করবে এমনটিই প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের ।