Скачать или смотреть রমজান মাসে আসলেই কি শয়তান বন্দি থাকে? রমজান মাসে আমাদের কি কি করণীয়||মুসলিমদের জানা উচিত||

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সম্মানিত দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানি ও দয়ায় আপনারা সকলেই ভাল আছেন। মাহে রমজান উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য আল্লাহ তা'আলার অনেক বড় নেয়ামত ও পুরস্কার। কেননা, আহমাদ ও বায়হাকি হাদীস শরীফে হযরত আবু হুরায়রা রাদি আল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার উম্মতকে রমজান শরিফের ব্যাপারে পাঁচটি জিনিস বিশেষভাবে দান করা হয়েছে। তার মধ্য একটি হলো:-এই মাসে দুষ্টু ও অবাধ্য শয়তানদের কে আবদ্ধ বা বন্দি করে রাখা হয়। এর ফলে গুনাহ নাফরমানির কাজে জোর কমে যায়। যেহেতু রমজান মাস অধিক রহমত ও ইবাদতের মাস। কাজেই এ মাসে শয়তানের অবিরাম চেষ্টা ও মেহনতের ফলে গুনাহ নাফরমানীর কাজ সবচাইতে বেশি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় তুলনামূলক গুনাহ কম হয়ে থাকে। বহু মদপানকারী লোক আছে যারা রমজান মাসে মদপান হতে বিরত থাকে। এমনিভাবে স্পষ্ট দেখা যায় যে, অন্যান্য গুনাহের কাজও কমে যায়। এরপরেও গুনাহ অবশ্য হয়ে থাকে। আল্লাহ যদি তৌফিক দেন তাহলে, রমজান মাসে শয়তান বন্দি থাকার পরেও কেন আমরা পাপ করি এ বিষয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ এবং এ হাদীসের আরো চারটি বিষয় অন্যান্য ভিডিওতে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

হাদিসে বলা হয়েছে, চরম অবাধ্য ও বিদ্রোহী শয়তানকে বন্দি করা হয়। অতএব, সাধারণ শয়তান মুক্ত থেকে গুনাহের কাজে লিপ্ত করে। তাই উল্লেখিত হাদীসে কোন প্রশ্ন থাকে না। অবশ্য অন্যান্য হাদিসে 'চরম অবাধ্য ও বিদ্রোহী'শব্দটি উল্লেখ না করে শুধু শয়তানের কথা বলা হয়েছে। যদি এই সকল হাদীস দ্বারাও চরম ও বিদ্রোহী শয়তানই উদ্দেশ্য হয়, তবে তো আর কোন প্রশ্ন থাকল না। কারণ অনেক সময় অতিরিক্ত অর্থবোধক শব্দ উল্লেখ না করলেও অপরাপর হাদিস দ্বারা তা উদ্দেশ্য বলে বোঝা যায়।

আর যদি এই সকল হাদীস দ্বারা সব ধরনের শয়তান কে বন্দী করার কথা বোঝানোই উদ্দেশ্য হয়, তাও গুনাহ সংগঠিত হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রশ্ন ও জটিলতা থাকবে না। কেননা গুনাহ যদিও সাধারণত শয়তানের ধোকার কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘ এক বছর শয়তানের সাথে মেলামেশা এবং তার বিষক্রিয়া ছড়ে যাওয়ার কারণে নফসের সম্পর্ক শয়তানের সাথে এমন ঘনিষ্ঠ হয়ে যায় যে, এখন কিছুক্ষণের জন্য শয়তানের অনুপস্থিতি অনুভব হয় না, বরং শয়তানের খেয়াল, স্বভাবে পরিণত হয়ে যায়। তাই দেখা যায়, রমজান ছাড়া অন্য সময় যাদের দ্বারা গুনাহের কাজ বেশি হয়, রমজান মাসে তাদের দ্বারাই বেশি হয়। নফস যেহেতু সর্বদা মানুষের সঙ্গে থাকে, তাই ইহার প্রভাবও সবসময় থাকে।

দ্বিতীয়তঃ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষ যখন কোন গুনাহ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। এরপর যদি সে খাঁটি তওবা করে তবে ঐ দাগ দূর হয়ে যায়। নয়তো তা লেগে থাকে। পুনরায় যদি গুনাহ করে তবে তাদের অন্তরে সেরকম আরেকটি দাগ পড়ে যায়। এভাবে দাগ পড়তে পড়তে তার অন্তর সম্পূর্ণ কালো হয়ে যায়। এরপর থেকে ভালো কথা তার অন্তরে স্থান পায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই প্রসঙ্গে কুরআনে কারীমের সূরা মুতাফ্ফিফিনের 14 নম্বর আয়াতে বলেন--"তাদের অন্তরে মরিচা ধরে গেছে।"
এই অবস্থায় ঐ সমস্ত অন্তর গুনাহের দিকে নিজেই ধাবিত হয়। এই কারণেই বহু লোক এমন রয়েছে যারা অন্য কোন গোনাহ যখন তার সামনে আসে, তখন সে নির্দ্বিধায় সেই গুনাহের কাজ করে ফেলে। কিন্তু ঐ ধরনের অন্য কোন গুনাহ যখন তার সামনে আসে, তখন সেই গুনাহ করতে তার অন্তর রাজি হয় না। যেমন:-মদখোরকে যদি শূকরের গোশত খেতে বলা হয়, তবে সে খেতে চাইবে না। অথচ গুনাহের দিক থেকে উভয়ই সমান।
একইভাবে, রমজান ছাড়া অন্য সময় যখন গুনাহ করতে থাকে তখন তাদের অন্তর সেই গুনাহে অভ্যস্ত হয়ে যায়। অতঃপর রমজান আসার পর আর শয়তানের প্রয়োজন হয়না; এমনিতেই গুনাহ হতে থাকে।


মোটকথা, হাদিস দ্বারা যদি সব ধরনের শয়তানকে বন্দী করার উদ্দেশ্য হয়। তবুও রমজান মাসে গুনাহ হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রশ্নের কারণ থাকে না। আর যদি শুধু চরম দুষ্টু ও বিদ্রোহী শয়তানকে বন্ধ করার উদ্দেশ্য হয় তবে তো কোন প্রশ্নই থাকেনা। আশা করি কথাগুলো বুঝতে পেরেছেন।
হযরত শাহ ইসহাক রহমাতুল্লাহ আলাই-এর মতে, এই হাদিস দুটি ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি হিসেবে এসেছে। এক নম্বর হল. ফাসেক ও গুনাহগারদের জন্য শুধু দুষ্টু শয়তানদেরকে বন্ধ করা হয়। দ্বিতীয় নম্বর হল. নেককারদের জন্য সব ধরনের শয়তানকেই বন্ধ করা হয়।

আমরা যদি এই মাসকে নিয়ে চিন্তা ও পরীক্ষা করি তাহলে দেখতে পারি যে, অন্য মাসে নেক কাজ করার জন্য এবং গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য যতোটুকু পরিশ্রম করতে হয়, রমজান মাসে ততটুকু করতে হয় না। বরং সামান্য একটু মনের জোর এবং খেয়াল করলেই তা যথেষ্ট হয়ে যায়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে রমজানের পূর্ণ ফজিলত হাসিল করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন।




রমজানের সময় সূচি 2022
রমজান
রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২২
রমজানের সময় সূচি
রমজানের প্রস্তুতি
রমজানের ক্যালেন্ডার
রমজানের ক্যালেন্ডার ২০২২
রমজান মাস
রমজানের সময়সূচি
রমজানুল মোবারক
মাহে রমজান
রমজান মাস
রমজান ক্যালেন্ডার
মাহে রমজানের ছবি
রমজানের গজল
রমজানের ফজিলত
রমজানের হাদিস
Ramadan
romadan