Скачать или смотреть বঙ্গলতুলীতে সেনাবাহিনীর হয়রানিমূলক তল্লাশি, ৫ গ্রামবাসীর বাড়ি তছনছ !

বর্মাছড়িতে ব্যাপক সেনা অভিযানের আশঙ্কা,
দীঘিনালার বাবুছড়ায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তুতি, জনমনে উদ্বেগ
রামগড়ে আবারও উত্তেজনা, সেনা উপস্থিতিতে পাহাড়ি আটক
বঙ্গলতুলীতে সেনাবাহিনীর হয়রানিমূলক তল্লাশি, ৫ গ্রামবাসীর বাড়ি তছনছ

খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি এলাকায় বড় ধরনের সেনা অভিযানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাতে এবং আজ রবিবার ভোরে সেনাবাহিনীর প্রায় ৩০টি গাড়ি লক্ষীছড়ি জোনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে অফিসারের গাড়ি রয়েছে ৬টি এবং ৪টি অ্যাম্বুলেন্সও দেখা গেছে। সেনা সদস্যরা বর্তমানে জোনে অবস্থান করছে ও আশেপাশের এলাকায় টহল দিচ্ছে।

সূত্র জানায়, আজ রাতে সেনারা চারটি দলে বিভক্ত হয়ে বর্মাছড়ি, হুদুকছড়ি ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালাতে পারে। প্রতিটি দলের সঙ্গে স্থানীয় ঠ্যাঙাড়ে সদস্যও থাকবে বলে জানা গেছে।

এর আগে, গত ৬ নভেম্বর থেকে খিরাম ক্যাম্প কমান্ডার মেজর সাইফুর রহমান তুর্যের নেতৃত্বে সেনা সদস্যরা রিজার্ভ পাড়ায় তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নিচ্ছে এবং নিয়মিত টহল চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সেনাবাহিনী বর্মাছড়ি আর্যকল্যাণ বনবিহারের জমি দখল করে ক্যাম্প স্থাপনের চেষ্টা করেছিল, যা স্থানীয়দের প্রতিবাদে বন্ধ হয়। তবুও সেনাদের চলমান উপস্থিতি নতুন অভিযানের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া এলাকায় আবারও সেনা অবস্থান জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ রবিবার সকাল থেকে বাবুছড়া ইউনিয়নের নুনছড়ি তড়িৎ কান্তি কার্বারি পাড়া এবং দীঘিনালা ইউনিয়নের মনিভদ্র কার্বারি পাড়ায় ৯০ জনের বেশি সেনা সদস্য অবস্থান নিয়েছে।

নুনছড়ি এলাকায় সেনারা দীপক কুমার চাকমার বাগানের গাছ কেটে দিচ্ছে এবং সেখানে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে মনিভদ্র কার্বারি পাড়াতেও সেনারা ক্যাম্প স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে সাধনাটিলা-জারুলছড়ি সড়কে সেনা সদস্যদের পদযাত্রা টহল অব্যাহত রয়েছে।
সেনাদের এমন অবস্থান ও কার্যক্রমে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।


খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাঙ্গেল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা অনিল চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে খাগড়াবিল এলাকায় সেটলার বাঙালিরা আটকে রেখেছে। আজ (রবিবার) বিকেলে তিনি রামগড় বাজার থেকে ফেরার পথে খাগড়াবিলে পৌঁছালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতেই সেটলাররা তাকে সিএনজি থেকে নামিয়ে আটক করে রাখে।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে একই এলাকায় রূপাইছড়ি গ্রামের নয়ন চাকমাকে নিজ বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় ২০ থেকে ২৫ জন সেটলার।

এদিকে, পাম্প ওয়েল ও লিচু বাগান হয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল নাঙ্গেল পাড়ার দিকে প্রবেশ করছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি বাটনাতলী ক্যাম্প থেকে দুই গাড়ি সেনা সদস্য বড় বেলছড়ি এলাকায় টহল দেয়ার পর গুজাপাড়ার দিকে গেছে।

স্থানীয়দের মধ্যে ঘটনার পর চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।


রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতুলী এলাকায় সেনাবাহিনী ৫ জন গ্রামবাসীর বাড়িতে হয়রানিমূলক তল্লাশি চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে করেঙ্গাতুলি সেনা ক্যাম্প থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন সেনা সদস্য বঙ্গলতুলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নুয়ো দোকান এলাকায় যায়। সেখানে তারা প্রাক্তন মেম্বার রাজ মোহন চাকমার কাছে ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পরে সেনারা পূর্ব জারুলছড়ি, বুদ্ধশংকর কার্বারি পাড়া, শিশুতুলি, মিঠু কার্বারি পাড়া ও সমর জ্যোতি কার্বারি পাড়ার পাঁচ বাসিন্দার বাড়িতে তল্লাশি চালায়। তবে তল্লাশিতে কোনো অবৈধ কিছু না পেয়ে সেনারা পরে ক্যাম্পে ফিরে যায়।

এর আগেও ৩ নভেম্বর থেকে বঙ্গলতুলী এলাকায় একাধিক দফায় তল্লাশি চালানো হয়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।