Pied Piper Of Hamlin,hamiloner bashiwala,Hamiloner bashiwalar golpo,Pied Piper Of Hamlin in Bengali,rupkothar golpo,bangla fairy tales,bangla cartoon,bangla golpo,bangla story,bangla rupkothar golpo,hamiloner bashiwala cartoon bangla,fairy tail bangla,the pied piper of hamelin bangla,pied piper of hamelin,Hemilion's Whistles,Great story of Hemilions,story-telling,bengali cartoon video
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা,হ্যামলিনের পাইড পাইপার,রুপকথার গল্প,আজব বাঁশির সূর,বাঁশির সুর
জার্মানির, লোয়ার স্যাক্সনির হ্যামেলিন শহর। সালটা ছিল ঠিক ১২৮৪। হ্যামেলিন শহর তখন ইঁদুরের প্রকোপের শিকার। হঠাৎ একদিন কোথা থেকে যেন এসে হাজির এক বাঁশিওয়ালা; তার গায়ে ছিল হরেক রঙের পোশাক। সে এক উপায় বাতলে দিল হ্যামেলিনের মেয়রের কাছে।
মেয়র মল্ডিন বললেন,
"ঠিক আছে, ইঁদুর তাড়িয়ে দাও, তাহলে তোমাকে আমি ১০০০ সোনার মুদ্রা দেব।"
বাঁশিওয়ালা রাজি হয়ে গেল, তার বাঁশি বাজালো আর সুড় সুড় করে সবগুলো ইঁদুর পেছন পেছন এসে তলিয়ে গেল শহরের পাশের ওয়েসার নদীর জলে।
তবে, কীভাবে যেন একটা ইঁদুর বেঁচে গেলো! বাঁশিওয়ালা ফিরে এল, তার প্রাপ্য চাইল। কিন্তু মেয়র তাকে ১০০০ সোনার মুদ্রা দিতে চাইলেন না, দিলেন মাত্র ৫০!
সাথে আরও বলে বসলেন,"বাঁশিওয়ালা নিজেই এই ইঁদুরগুলো এনেছিল যেন তাড়িয়ে টাকা আয় করতে পারে!" বাঁশিওয়ালা চলে গেল রেগে, যাবার আগে বলে গেল প্রতিশোধ নিয়ে ছাড়বে।
১২৮৪ সালের জুন মাসের ২৬ তারিখ, শহরে ফিস্ট চলছিল, রোমে জন এবং পলের শহীদ হবার স্মরণে সেন্ট জন-পল দিবস পালন করা হয়।
এটিই চলছিল সেদিন, সবাই ছিল চার্চে। সেই বাঁশিওয়ালা ফিরে এল, তবে এবার মোটেও রঙ বেরঙের পোশাকে নয়, একরঙা সবুজ পোশাকে। সবুজ মানে ছিল শিকারী। তখন বাজে সকাল ৭টা। সে বাজানো শুরু করল তার মায়াবী বাঁশি। শহরের সব ৪ বছরের বড় শিশু বেরিয়ে এল, গুণে গুণে ১৩০ জন শিশু। মেয়রের মেয়েও ছিল সেখানে!
বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুরে শিশুগুলো সম্মোহিত হয়ে এক পাহাড়ের ওপাশের গুহায় ঢুকে গেল, আর কোনোদিন বেরিয়ে এল না। তাদের নাকি নিয়ে যাওয়া হয় ট্রান্সিল্ভানিয়াতে।
৩ জন শিশু বেঁচে গিয়েছিল। একজন কানে শুনতে পেত না, তাই সুর শোনে নি। আর অন্যজন অন্ধ হয়ে জন্মাবার কারণে দেখতে পায় নি কোথায় যেতে হবে। আরেকজন জ্যাকেট ফেলে গিয়েছিল বলে আবার ফেরত আসে, জ্যাকেট নিয়ে আবার গিয়ে দেখে সবাই চলে গেছে।
এই ৩ শিশুর মাধ্যমেই চার্চ ফেরত প্রাপ্তবয়স্করা পরে জানতে পারল কী হয়েছে। আরেকটি বেবি সিটার মেয়ে কোলে শিশু নিয়ে পেছন পেছন গিয়েছিল অনেকদূর দেখতে, সে সবার আগে ফেরত এসে কাহিনী বলেছিল।
ঘটনার আরেক ভার্সনে বলা হয় শিশুদের নিয়ে বাঁশিওয়ালা চলে যায় কোপেলবার্গ পাহাড়ের ওপারে।
হয়ত আপনি ভাবছেন, এ তো নিছক এক গল্প! কিন্তু না, ১২৮৪ সালের ঘটনার পরেই চার্চে Stained-glass জানালা লাগানো হয় ১৩০০ সালের দিকে। সেখানে এই করুণ ঘটনা লেখা ছিল। জানালাটা বানাবার উদ্দেশ্যই ছিল শিশুদের স্মরণ করা। জানালাটা ধ্বংস হয়ে যায় ১৬৬০ সালে, পরে ইতিহাসবিদ হ্যান্স ডবার্টিন ঐতিহাসিক লিখনি থেকে এই জানালা পুনঃনির্মাণ করেন। সেখানে দেখা যায় বাঁশিওয়ালা আর সাদা পোশাকে শিশুদের ছবি।
আমরা যেরকম ‘খ্রিস্টাব্দ’ বলি, যার মাধ্যমে খ্রিস্টের জন্ম স্মরণ করা হয়, তেমনই হ্যামেলিন শহরের সরকারি ঐতিহাসিক রেকর্ড শুরুই হয় এই ঘটনার রেফারেন্সে। প্রথম যে এন্ট্রি লিপিবদ্ধ আছে, সেটি হল ১৩৮৪ সালের, সেখানে লিখা- “১০০ বছর হতে চলেছে আমাদের শিশুদের হারিয়েছি।” ১৫৫৯ সালের বিস্তারিত বিবরণ থেকে ইঁদুরের ঘটনা পাওয়া যায়। তার আগ পর্যন্ত শিশুদের হারাবার করুণ ঘটনা প্রাধান্য পাওয়ায় আগের ইঁদুরের ঘটনা প্রাধান্য পেত না।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার, যদিও এই ঐতিহাসিক লেখনি সংরক্ষিত আছে, তারপরেও এই অদ্ভুত ঘটনার বাস্তবিক ব্যাখ্যা দিতে না পারায় অনেকেই অস্বীকার করে বসেন যে, আদৌ এ ঘটনা ঘটেছিল।
এখন পর্যন্ত কেউই এর নিশ্চিত ব্যাখ্যা দিতে পারে নি। কেউ বলেছেন, পাইড পাইপার আসলে এক শিশুকামী ছিল, তবে কীভাবে এতজনকে নিয়ে গেল তার ব্যাখ্যা নেই। কারও মতে, ব্ল্যাক ডেথ মহামারিতে সব শিশু মারা যাওয়াতে গ্রামবাসী এই কাহিনী বানিয়েছে। কেউ বলেছে, এই শিশুদের ক্রুসেডে পাঠানো হয়েছিল, গ্রামবাসী যখন দেখল শিশুরা আর ফেরে নি, তখন এই ধাপ্পাবাজি গল্প ফেঁদে বসল নিজেদের বুঝ দিতে। সেই ক্রুসেড ১২১২ সালে হয়েছিল বলে এই থিওরি বাদ দিতে হয়, অনেক আগের ঘটনা যে!
১৩৮৪ সালে হ্যামেলিনের ডেকান লুডের কাছে থাকা বইতে লাতিনে লিখা বাক্যে তার দাদীর ভাষ্যে নিজের চোখে দেখা হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার ঘটনা লিখিত ছিল। ১৭ শতকে এসে বইটি হারিয়ে যায়।
১৪৪০ সালের Lüneburg পাণ্ডুলিপিতে জার্মান ভাষায় লিখা আছে, হ্যামেলিনের এক বাড়ির দেয়ালে খোদাই করে লিখা এই অনুচ্ছেদ-
অর্থঃ “১২৮৪ সালের ২৬ জুন, সেন্ট জন পল দিবসে হ্যামেলিনে জন্ম নেয়া ১৩০ জন শিশু এক হরেক রঙা বংশীবাদকের সম্মোহনে পেছন পেছন হারিয়ে যায় কোপেনের পেছনের কাল্ভারিতে।”
বর্তমানের হ্যামেলিন শহরে যদি কখনও বেড়াতে যান তবে দেখবেন সেখানে বাঁশিওয়ালার মূর্তি, সাথে ইঁদুর।
২০০৯ সালে তারা এক টুরিস্ট ফেস্ট আয়োজন করে শিশুদের প্রস্থানের করুণ ঘটনার ৭২৫তম বার্ষিকীতে।
যে বাড়িতে খোদাই করা ছিল ইতিহাসটি, সেটিকে এখন “র্যাট ক্যাচার” এর বাড়ি বলে। প্রতি বছর ২৬ জুন পালন করা হয় র্যাট ক্যাচার দিবস। আছে পাইড পাইপার থিম রেস্তোরাঁ, আছে পাইড পাইপার মনোপলি! বর্তমানে আমরা যে ভার্সন পড়ি পাঠ্য বইতে সেটা মূলত উপকথা শুনে গ্রিম ভাই-দের পুনর্লিখন। যে রাস্তায় শিশুদের শেষ দেখা গিয়েছিল, সে রাস্তার নাম Bungelosenstrasse বাংগালাইসেনস্ট্রাছা (“ড্রাম ছাড়া রাস্তা”), সেখানে কোনো মিউজিক বাজানো নিষিদ্ধ!
বানানো হয় মুদ্রাও। আর বহু পরে বানানো মেইন গেটে খোদাই করা ছিল- “১৩০ শিশুকে জাদুকর নিয়ে যাবার ২৭২ বছর পর এই ফটক নির্মিত।” হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালাকে নিয়ে লিখা হয়েছে অনেক কবিতা, গল্প আর উপন্যাস, এমনকি ছায়াছবিও, অন্য দেশেও এর অনুকরণে রূপকথা চালু হয়ে যায়। কিন্ত হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার রহস্য আজও অমীমাংসিত। কী হয়েছিল সেই ১৩০ শিশুর ভাগ্যে?
Информация по комментариям в разработке