Скачать или смотреть মুকসুদপুরের ঐতিহ্যবাহী মহারাজপুর জমিদার বাড়িতে যা দেখলাম । Maharajpur Jaminder Bari

৬২ টি মৌজার জমিদার কৈলাশ চন্দ্র বসু বোস বাড়ি বা মহারাজপুর জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন এবং নামকরণ করে ‘শ্রী শ্রী কৈলাশ বাটী’। এ জমিদার বাড়িটি বোস বাড়ি জমিদার বাড়ি বা মহারাজপুর রাজবাড়ি বা মহারাজপুর জমিদার বাড়ি। অসাম্প্রদায়িক চেতনার ব্যক্তিত্ব জমিদার কৈলাসচন্দ্র নিজেদের জন্য মন্দির নির্মাণ করেছিলেন, পুজার আয়োজনও হতো নিয়মিত। একই বাড়ির প্রাঙ্গনে, অদূরেই, নির্মাণ করেছিলেন একটি ছোট আকারের মসজিদ মুসলমানদের জন্য, যাতে তারা জামাতের সাথে ওয়াক্তিয়া নামাজ আদায় করতে পারতেন। আজানও হতো নিয়মিত। কেবলা বিশিষ্ট সেই মসজিদ এখনো পরিত্যক্ত। পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ির প্রাসাদটি, পুকুর, ভিটেবাড়ি, মন্দির আর বড় আকারের রান্নাঘর। পরিত্যক্ত হয়ে গেছে একটি জমিদারিও। কেবল আছে অস্পষ্ট ইতিহাস।
এ জমিদার বাড়ির সবথেকে প্রভাবশালী জমিদার ছিলেন মনীন্দ্রনাথ বসু। বর্তমানে এ বাড়িটির একাংশে বনগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিচালিত হচ্ছে। বাড়িটির সোনালি অতীত ক্রমান্বয়ে বিলীন হবার পথে।
ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর পর পাকিস্তান আমলে জমিদারির অবসান হলে এ অঞ্চলের প্রায় সব রাজা এবং জমিদার দেশ ছেড়ে ভিনদেশে চলে গেছেন। প্রজাহিতৈষি জমিদার কৈলাশচন্দ্র বসুর পরিবার কিছুকাল এখানে বসবাস করেছেন। তার পর এক সময় চলে গেছেন ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য। তার আত্মীয়-স্বজনদের প্রায় সকলেই চলে গেছেন ভারতে। কেউ কেউ অবশ্য এখনো রয়ে গেছেন এ জমিদার বাড়ির কাছাকাছি। কিন্তু তারাও বসবাস করেন অনেকটা নিভৃতে। তারা কেউই আর এখন ঝুকিপূর্ণ বাড়িটিতে বসবাস করেন না। বাগান-পুকুর-সহ সামগ্রিক এলাকার চিত্র এখন করুণ। চোখে পড়ে না কোনোটি রক্ষণাবেক্ষণের লেশমাত্র। কেবল অবহেলার ছাপ দেখা যায় ধ্বংসস্তূপে, দেয়ালে, ছাদে, বাগানে, ভবনে, কক্ষে, শানবাধাঁনো পুকুর ঘাটে, স্থাপনায়—সবখানে।
কালের পরিক্রমায় অনিন্দ্যসুন্দর বাড়িটি হারিয়েছে জৌলুস, শ্রী এবং গৌরবময় ইতিহাস। রক্ষণাবেক্ষণ আর সংস্কারের অভাবে ভেঙে-ক্ষয়ে যাচ্ছে এর দেয়াল আর পলেস্তারা। বর্তমান আর ভবিষ্যত প্রজন্মকে ইতিহাসের সাথে পুরচয় করিয়ে দিতে এ সকল ঔতিহাসিক স্থাপনা সংস্কার আর সংরক্ষণ করা জরুরি। তাহলে পর্যটন খাত সমৃদ্ধ হবে।
BetaFaze