Скачать или смотреть নতুন ধানে জমজমাট আশুগঞ্জ ধানের মোকাম, দিনে বিক্রি সাত কোটি টাকা। মৌসুমের নতুন ধানে জমে উঠেছে।

নতুন ধানে জমজমাট আশুগঞ্জ ধানের মোকাম, দিনে বিক্রি সাত কোটি টাকা। মৌসুমের নতুন ধানে জমে উঠেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ধানের মোকাম। সরবরাহ বাড়ায় দেশের পূর্বাঞ্চলের বৃহৎ এই মোকামটিতে এখন চাঙা ভাব। প্রতিদিন অন্তত ৬০ থেকে ৭০ হাজার মণ ধান কেনাবেচা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে ভেজা ধানের কারণে পাইকার ও ব্যাপারীরা দাম কম পেয়ে হতাশায় থাকলেও, শুকনো ধান আসতে থাকায় বাড়তে শুরু করেছে দাম। মোকামে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম, প্রতি বস্তায় বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিউসি ঘাটে, দেশের পূর্বাঞ্চলের হাওর বৃষ্টিত অঞ্চলের ধানে জমজমাট। বিস্তীর্ণ এলাকার মোকাম জুড়ে থরে থরে রাখা আছে ধানের বস্তা। এছাড়াও, নদীর তীরে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ধানবাহী নৌকা, নোঙর করে ধানের বস্তা বাঁধতে ব্যস্ত সময় পার করছে। মিল মালিকরা এসব নৌকায় গিয়ে ধানের তাপমাত্রা ও গুণগত মান যাচাই-বাছাই শেষে দরদাম করা নিয়ে ব্যস্ত। ব্যাপারীরাও ক্রেতাদের নজর কাড়তে, নিজেদের আনা ধানের গুণগত মান তুলে ধরে দাম হাঁকাচ্ছেন।

দামে বনলে ঘাটে ধান কেনাবেচা শেষ করে ট্রাকে করে এসব ধান বিভিন্ন মিলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভরা মৌসুম হওয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর থাকে প্রাচীন এই মোকাম। মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিউসি ঘাটের এই মোকামে বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সহ অন্তত সাতটি জেলা থেকে হাজার হাজার মন ধান আমদানি হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে দেশের সবচেয়ে বড় ধানের মোকাম, প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাটে ধান বেচা-কেনা হয়।

প্রতিদিন বিউসি ঘাটে ধান বোঝাই নৌকাগুলো ভিড়তে থাকে। ধানের মৌসুমে প্রতিদিন অন্তত ১ লাখ মণ ধান বেচা-কেনা হয় এ হাটে, যার বাজার মূল্য অন্তত সাত কোটি টাকা। মৌসুম ছাড়া বাকি সময়গুলোতে বেচা-কেনা অর্ধেকে নেমে যায়। ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের হাত বদল হয়ে এসব ধান চলে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৩৫০টি চাতাল কলে। শুধুমাত্র আশুগঞ্জ উপজেলাতেই ২৫০ টি চাতাল কল রয়েছে।

শত বছরের পুরনো এই হাটটি দেশের পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ধানের হাট। প্রায় ১০০ বছর আগে আশুগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদীর বিউসি ঘাটে ধানের বেচা-কেনা শুরু হয়। মূলত এই হাটটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও এর আশেপাশের এলাকার হাওর অঞ্চলে উৎপাদিত ধানের একমাত্র ও জনপ্রিয় মোকাম হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ হাটের ধান থেকে চাল তৈরি করে সরবরাহ করা হয় চট্টগ্রাম বিভাগ ও সিলেট বিভাগের সব কটি জেলায়।

এছাড়া ঢাকা বিভাগের কয়েকটি জেলাতেও চাল যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চাল কলগুলো থেকে। উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চলে উৎপাদিত ধান বেচা-কেনা হয় আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় ধানের হাট বিউসি ঘাটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনা নদীর পাড়ে অবস্থিত হাট কেন্দ্র করে চার শতাধিক চাল কলের হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

তাছাড়া, বাইরেও আশুগঞ্জের কয়েকশ শ্রমিক দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে এখানে কাজ করে থাকেন। অপরদিকে, বড় বড় নৌকা ও চালানের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা হয়েছে। ৬০ থেকে ৭০ হাজার মন ধান বিক্রি হচ্ছে। তাপমাত্রা বাড়ায় ধানের আদ্রতা।