Скачать или смотреть টাকা মানুর মূল্য বাড়ায় নাকি? মানুষ টাকার মূল্য বাড়ায়// Niloy shikder//অমূল্য

টাকা মানুর মূল্য বাড়ায় নাকি? মানুষ টাকার মূল্য বাড়ায়// Niloy shikder//অমূল্য



সিরিজ: অমূল্য

পর্ব ২: প্রথম ধাক্কা

সকাল হয়। মায়ের কথা এখনো সফিকের মাথায় ঘুরছে, কিন্তু তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, “এসব ভাবলে চলবে না। আগে টাকা কামাই করতে হবে। টাকা ছাড়া এই দারিদ্র্য থেকে মুক্তি নেই।”

সকাল ৭টা বাজতেই দোকানে হাজির হয় সফিক। কাজ শুরু হয় নতুন উদ্যমে। তবে আজ রশিদ সাহেবের মেজাজ আরও খারাপ। সকালে কাস্টমার কম, কিন্তু মালগুলো দোকানে ঢোকানোর জন্য নতুন বড় সরবরাহ এসেছে।

“এই শোন, এই মালগুলো ঠিক করে তুলে রাখ। আর মনে রাখিস, কোনো কিছুর ক্ষতি হলে সেটা তোর বেতনের সঙ্গে কাটব।” রশিদ সাহেব তার রুক্ষ কণ্ঠে হুমকি দেন।

সফিক ভয়ে ভয়ে কাজ শুরু করে। মাল তোলার সময় হঠাৎ তার হাত ফসকে একটি বড় আটা ভর্তি বস্তা মাটিতে পড়ে যায়। বস্তাটি ছিঁড়ে যায়, এবং মাটি ভর্তি হয়ে যায় আটায়।

প্রথম ধাক্কা

রশিদ সাহেব রেগে লাল হয়ে যান।
“তুই কি কোনো কাজ ঠিকমতো করতে পারিস না? এই পুরো আটার দাম তোর বেতন থেকে কাটা হবে!”

সফিক থ মেরে যায়। একমাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করার পরও সে যদি এক টাকাও না পায়, তাহলে বাড়িতে কী করে খাওয়াবে? মাথা নিচু করে সে শুধু বলে, “চাচা, সরি। আর হবে না।”

“সরি বলে হবে না। তুই কাজটা চালিয়ে যেতে পারবি না, নাকি অন্য কাউকে আনব?”

অসহায় সফিক চুপ করে কাজ করতে থাকে।

রফিকের পরামর্শ

সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে তার বন্ধু রফিকের সঙ্গে দেখা হয়। রফিক জিজ্ঞেস করে, “কিরে, মুখটা এমন মলিন কেন?”

সফিক সব খুলে বলে। রফিক কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে, “শোন, তুই যদি রশিদ সাহেবের মতো লোকের কাছে কাজ করিস, এটাই হবে। তোর নিজের কিছু করার কথা ভাব। নিজের একটা ছোট ব্যবসা শুরু কর। সামান্য টাকায় হলেও তোর স্বাধীনতা থাকবে।”

সফিক একটু কাঁপা গলায় বলে, “কিন্তু ব্যবসা করব কী দিয়ে? আমার পুঁজি তো নেই।”

রফিক হাসে, “তুই চাইলেই পুঁজি জোগাড় করতে পারিস। নিজের যা আছে সেটা দিয়ে শুরু কর। কিন্তু একটা কথা মনে রাখিস, ব্যবসা টাকার জন্য করবি, কিন্তু টাকার জন্য নিজের আত্মা বিক্রি করিস না।”

মায়ের পরামর্শ

বাড়ি ফিরে সফিক রফিকের কথাগুলো নিয়ে ভাবতে থাকে। সে মায়ের কাছে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে।
মা শান্ত গলায় বলেন, “তোর বন্ধু ঠিক বলেছে। ছোট থেকে শুরু কর, কিন্তু সৎ থেকে কর। মনে রাখ, টাকা মানুষকে বড় করে না, মানুষ টাকাকে বড় করে তোলে।”

সফিক দ্বিধার মধ্যে পড়ে যায়।

গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত

পরের দিন সকালে রশিদ সাহেব আবারও তাকে বকাবকি করেন। এক পর্যায়ে রশিদ সাহেব বলেন, “তুই এভাবে কাজ করে বড়জোর মাসে ১৫০০-২০০০ টাকা কামাবি। আমি এতদূর আসছি, কারণ আমি জানি টাকা কীভাবে কামাতে হয়। তোর মতো গরীব লোকের জীবনে বড় হওয়ার কোনো রাস্তা নেই!”

এই কথা সফিকের আত্মসম্মানে আঘাত করে। সেদিন রাতে সে সিদ্ধান্ত নেয়, “নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। টাকা থাকলেই জীবন বদলাবে। কিন্তু এটা অন্যের কাজ করে হবে না, নিজের কিছু করতে হবে।”

পর্বের শেষ দৃশ্য

সফিক মাটিতে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবে,
“আমি কি সত্যিই ব্যবসা শুরু করতে পারব? আমার কি সেই সাহস আছে?”

শেষ প্রশ্ন:
“সফিক কি নিজের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য এগিয়ে যাবে, নাকি আরও একটি ধাক্কা তাকে ভেঙে দেবে?”

(পরবর্তী পর্ব: সফিকের ব্যবসা শুরু করার প্রথম পদক্ষেপ এবং নতুন চ্যালেঞ্জ!)


---

আপনার জন্য এমনভাবেই প্রতিটি পর্ব তৈরি করা যাবে, যাতে প্রতিবার শেষে দর্শক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করে। কেমন লাগল?