Скачать или смотреть বাবা আদম শহীদ মসজিদ ও মাজার (Baba Adam Shahid Mosque & Mazar) II প্রায় সাড়ে ৫00 বছরের পুরনো মসজিদ

বাবা আদম শহীদ মাজার ও মসজিদ ঢাকার অদূরে মুন্সিগঞ্জ জেলার কাজীকসবা গ্রামে অবস্থিত। বাবা আদম সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়না। তবে তাঁকে নিয়ে এলাকায় লোকমুখে অনেক চমকপ্রদ কাহিনী প্রচলিত আছে। তবে এই কাহিনী কতটুকু সত্যি তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। লোকমুখে জানা যায়, বাবা আদম ছিলেন পবিত্র মক্কা নগরীর বাসিন্দা এবং এ অঞ্চলের তখনকার রাজা ছিলেন বল্লাল সেন। প্রচলিত আছে, জনৈক ব্যক্তি তাঁর ছেলের আকিকার জন্য একবার একটি গরু জবাই করেন। এতে রাজা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হন এবং ওই ব্যক্তিকে হত্যার আদেশ দেন। প্রাণভয়ে ওই ব্যক্তি রাতের আঁধারে মক্কা নগরীতে পালিয়ে যান এবং বাবা আদমের কাছে বিচার চান। বাবা আদম তাঁকে সাহায্য করার অভিপ্রায়ে তাঁর অনুচরদের নিয়ে এখানে আসেন এবং রাজা বল্লাল সেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। যুদ্ধ চলাকালে কোন একদিন আসরের ওয়াক্তে বাবা আদম যখন নামাজ আদায় করছিলেন তখন রাজা বল্লাল সেন হত্যার উদ্দেশ্যে তরবারি দিয়ে তাঁকে আঘাত করেন। এতে বাবা আদম মৃত্যুবরণ করেন। তবে মৃত্যুর পূর্বে তিনি রাজাকে অভিশাপ দিয়ে যান এই বলে যে- তুই নির্বংশ হবি। রাজা যখন তাঁর রক্তমাখা তরবারি ধোয়ার জন্য পাশের ধলেশ্বরী নদীতে যান, তখন তাঁর সঙ্গে থাকা কবুতর উড়ে প্রাসাদে ফিরে আসে। কবুতর দেখে অন্তঃপুরের রমণীরা ধরে নেন যে, যুদ্ধে রাজার পরাজয় হয়েছে। সম্ভ্রম বাঁচানোর জন্য তাঁরা আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মাহুতি দেন। রাজার পুরো পরিবার শেষ হয়ে যায়। কার্যত ফলে যায় বাবা আদমের সেই অভিশাপ। তবে এই কাহিনীর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। ইতিহাসের সেন বংশের রাজা যে বল্লাল সেনকে আমরা চিনি, এই বল্লাল সেন যে সেই বল্লাল সেন নন তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। রাজা বল্লাল সেনের পুত্র লক্ষণ সেনও পরবর্তীতে বাংলার রাজা হয়েছিলেন। তবে তৎকালীন বিক্রমপুরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে, রাজা বল্লাল নামে একজন স্থানীয় ব্রাহ্মণ রাজার নাম পাওয়া যায়।

বাবা আদমের মাজারের পাশেই পুরনো একটি মসজিদের অবস্থান। যেহেতু বাবা আদমের মাজারের ঠিক পাশেই এর অবস্থান, তাই এটি বাবা আদম শহীদের মসজিদ নামেই বহুল পরিচিত। যদিও বাবা আদমের মৃত্যুর অনেক পরে সুলতানি আমলে এটি নির্মিত হয়। স্থানীয় অনেকেই অবশ্য একে মোঘল আমলের মসজিদ বলে ভুল করেন। মসজিদের প্রবেশপথের উপরে স্থাপিত একটি শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৪৮৩ সালে সুলতান জালালুদ্দিন ফতেহ শাহ এর শাসনামলে মালিক কাফুরব নামে তাঁর এক কর্মচারী এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। সেই হিসেবে মসজিদটির বয়স প্রায় সাড়ে পাঁচশ' বছরের কাছাকাছি।

#বাবাআদমশহীদমাজার_মসজিদ

যারা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভালবাসেন, ভালবাসেন ঐতিহাসিক জায়গাগুলো ঘুরে বেড়াতে; তারা চাইলে আমাদের পরবর্তী গন্তব্যের সঙ্গী হতে পারেন। চাইলে যোগাযোগ করুন এই ঠিকানায়ঃ [email protected]