কাস্টমসের নতুন নির্দেশনা,
পণ্য আমদানি রপ্তানিতে বেনাপোল বন্দরে নতুন শর্ত
এম এ রহিম, বেনাপোল যশোর:-
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে
আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অধিকতর গতি সঞ্চার, সময় হ্রাসকরণ, বাণিজ্য সহজীকরণসহ করদাতা-বান্ধব পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সম্প্রতি বেনাপোল কাস্টমস হাউজ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানান বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আমদানি-রপ্তানি পণ্য চালানের খালাস তুরান্বিতকরণ, রাজস্ব সুরক্ষার পরিবেশ তৈরি ও শুল্ককর ফাঁকি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ চলমান রয়েছে। সেই সাথে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে শর্ত দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বেনাপোল আমদানি রফতানি কারক সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন জানান
ব্যবসা সহজিকরণে কাস্টমস যে ১২টি শর্ত দিয়েছে এটার বাস্তব প্রতিফলন নিয়ে দেখার বিষয় রয়েছে। তবে ব্যবসায়ি ও কাস্টম কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার মনোভাব থাকলে বাড়বে ব্যবসা ও রাজস্ব আয় গতি ফিরবে আমদানি রফতানিতে।
এ বন্দর দিয়ে ৪০ হাজার ডলারের বেশি মূল্যের পণ্যের চালান কিংবা ২০ হাজার পিসের বেশি ঘোষণার তৈরি পোশাক (যেমন শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, আন্ডার গার্মেন্টস ইত্যাদি) পণ্যের চালান কায়িক পরীক্ষা করতে হবে। কায়িক পরীক্ষার মানে হলো, এতে পণ্যের চালান খুলে দেখা হয় এবং ঘোষণা দেয়া পণ্যের সঙ্গে মিল আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়।
সোমবার বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো: কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত বেনাপোল কাস্টম হাউস থেকে ১১ টি শর্ত দিয়ে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।এ আদেশের ফলে নতুন করে আমদানি
-রপ্তানিকারকদের ভোগান্তি বাড়বে বলে মনে করেন অনেক ব্যবসায়ী। সেই সাথে অর্থ আদায়ে নতুন নতুন খাতও সৃষ্টি হবে। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৮০ ভাগ পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। সেই সাথে ভারতে পণ্য রপ্তানিও হয়। তবে ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি করতেও অনেকে এ বন্দর ব্যবহার করে থাকেন। বেনাপোল কাস্টমসের ইনভেস্টিগেশন রিসাচ অ্যান্ড মানেজমেন্ট (আইআরএম) কে বেশির ভাগ দায়িত্ব দেয়ায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অধিকতর গতি সঞ্চার তো দুরে থাক হয়রানির মাত্রা আরো বাড়বে বলে মনে করে ব্যবসায়ীমহল।
বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একই আদেশে ১২ ধরনের আমদানি পণ্যকে সংবেদনশীল ও শুল্ক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলেছে।, এসব পণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর ফাঁকি দেওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই পণ্যগুলো হলো অ্যাসর্টেড গুডস, সব ধরনের কাপড়, সকল প্রকার নতুন ও পুরাতন মটর পার্টস (টু হুইলার, থ্রি হুইলার, ফের হুইলার ইত্যাদি) বাইকেল যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, প্রসাধনসামগ্রী, ইমিটেশন জুয়েলারি, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রেয়াতি সুবিধায় আমদানিকৃত যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, শিল্প খাতের যন্ত্রাংশ, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও অস্ত্রোপচারের সামগ্রী, একই চালানে পাঁচমিশালি পণ্য। এসব পণ্যের চালানও কায়িক পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম পর্যালোচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, এইচএস কোডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পণ্যের চালানের কায়িক যাচাই বাছাই করা, গোপন সংবাদ সংগ্রহ, বন্দরের ভিতর ও বাইরে ঘোষণাতিরিক্ত/ঘোষনাণা বহির্ভূত পণ্য চালান চিহিৃতকরণ ও ফাঁকি উদঘাটন, রাজস্ব আদায় ও খালাস প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং চোরাচালান প্রতিরোধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য আইআরএম কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইজিএম, বিল অব এন্ট্রি লকসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পাশাপাশি শুল্ক-কর ফাঁকি রোধে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও রপ্তানির ক্ষেত্রে ৪০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের পণ্যচালান অথবা ২০ হাজার পিস এর বেশি ঘোষনার রেডিমেড গামেন্টস (শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, আন্ডার গামেন্টস ইত্যাদি) পণ্য চালান কায়িক পরীক্ষণ করা। কায়িক পরীক্ষার মানে হলো, এতে পণ্যের চালান খুলে দেখা হয় এবং ঘোষণা দেয়া পণ্যের সঙ্গে মিল আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলেন, হযরানি ও দুর্ভোগ কমলে লাভবান হবেন তারা। কাস্টমসের আন্তরিকতা বাড়লে বাড়বে আমদানি রফতানি।
Информация по комментариям в разработке