Скачать или смотреть পর্ব ১১ | হায়দার | সিফফীনের যুদ্ধ | Rain Drops Media

হায়দার, পর্ব ১১
সিফফীনের যুদ্ধ

আল্লাহ তাআলা বলেন,

“যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে -- যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে।

যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনসাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।

মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। ” (সূরা হুজুরাত, ৪৯: ৯-১০)

এই উম্মতের তৃতীয় খলীফা উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে অবরুদ্ধ করে ফেললো কিছু দুষ্কৃতিকারী লোক। তারা তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করলো। সেই সংকটময় পরিস্থিতিতে, আনসার এবং মুহাজির সাহাবায়ে কেরাম ঐক্যমতের ভিত্তিতে নতুন খলিফা নিযুক্ত করলেন আলীকে (রা)। তাঁর কাছে বাইয়াত দিলেন। এরপর ধীরে-ধীরে বিভিন্ন প্রদেশ থেকেও আলীকে (রা) বাইয়াত দেয়া হচ্ছিল।

কিন্তু শামের পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। সেখানে আমির নিযুক্ত ছিলেন মুয়াবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি ছিলেন উসমানের গোত্র বনু-উমাইয়ার সদস্য। তাই আত্মীয়তার সূত্রে তিনি উসমানের রক্তের বদলা দাবী করলেন। হত্যাকারীদের উপর শাস্তি প্রতিষ্ঠার দাবি করলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, প্রথমে উসমানের হত্যাকারীদের উপর শাস্তি কার্যকর করতে হবে, এরপর তিনি বাইয়াত প্রদান করবেন আলীকে (রা)।

এভাবে কয়েক মাস কেটে গেল, তবুও তিনি আলী রা-এর কাছে বাইয়াত দিলেন না। এ ব্যাপারে আলী (রা) জানতে চাইলেন মুয়াবিয়া রা-এর কাছে।

৩৬ হিজরীর সফর মাসে মুয়াবিয়া (রা) একজন প্রতিনিধিকে পাঠালেন মদীনাতে। দেখা গেল, সেই প্রতিনিধি একটি ফাঁকা চিঠি নিয়ে মদিনা এসেছে। আলী (রা) জানতে চাইলেন, ‘এটা কী?’ তখন সেই ব্যক্তি নিরাপত্তা চাইলো। এরপর বলল, ‘আমি শামের মসজিদে মিম্বারে উসমানের রক্তমাখা জামা ঝুলানো দেখে এসেছি। ওখানে ষাট হাজার যোদ্ধাকে ক্রন্দনরত অবস্থায় আছে। উসমানের হত্যাকারীদের উপর শাস্তি কার্যকর করা ছাড়া কিছুতেই সন্তুষ্ট হবে না তারা।’

অর্থাৎ, আলী (রা) বুঝতে পারলেন, মুয়াবিয়া (রা) এখনো পর্যন্ত পূর্বের সিদ্ধান্তেই অটল আছেন। মানে, প্রথমে হত্যাকারীদের উপর শাস্তি কার্যকর করতে হবে, এরপর তিনি আলীকে (রা) বাইয়াত দিবেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উসমানের রক্ত থেকে নিজেকে পবিত্র ঘোষণা করছি!’

ওদিকে, দুষ্কৃতিকারীদের অনেকেই আত্মরক্ষার জন্য যোগ দিয়েছিল আলীর (রা) বাহিনীতে। তারা এসেছিল মদীনার বাহিরে থেকে। কিন্তু উসমানের হত্যাকাণ্ডের পরেও তারা নিজ-নিজ এলাকায় ফেরত যায়নি। এটা ছিল তৎকালীন পরিস্থিতির একটি বাস্তবতা। আলীর (রা) বাহিনীতে তাদের উপস্থিতি ছিল শামের বাহিনীর জন্য একটি অস্বস্তির কারণ। এটাও একটি কারণ যেজন্য শামের লোকজন আলীকে (রা) বাইয়াত দিতে দেরি করছিলেন।

এভাবে কয়েক মাস কেটে গেল। আলী (রা) অপেক্ষা করলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজেই রওনা হবেন শামে এবং সেখানে গিয়ে তিনি মুয়াবিয়ার সঙ্গে আলাপ করবেন। প্রয়োজনে তাকে বাধ্য করবেন বাইয়াত দিতে। কেননা বৈধভাবে নিযুক্ত খলিফাকে বাইয়াত না দেয়া ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার শামিল। যখন সকল প্রদেশ থেকে আলীকে (রা) বাইয়াত দেয়া হবে এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে, তখন আলী (রা) উসমানের হত্যাকারীদের উপর শাস্তি কার্যকর করতে পারবেন।

এই মতভেদ প্রকট আকার ধারণ করলো। ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি এগিয়ে গেল যুদ্ধের দিকে।

বিস্তারিত জানতে ডাউনলোড করুন এই পর্বটি।

ডাউনলোড লিংক -
হিয়ারদিস - https://tinyurl.com/3k26zkuc
আর্কাইভ - https://tinyurl.com/2p87ukse