জীবনানন্দ দাশের কবিতা বোধ । আবৃত্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । Bodh by Jibonando dash

Описание к видео জীবনানন্দ দাশের কবিতা বোধ । আবৃত্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । Bodh by Jibonando dash

Subscribe Here :    / @kobitarshohor1  

জীবনানন্দ দাশের কবিতা : বোধ
আবৃত্তি : সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
Bodh a Poetry by Jibonando dash
Recited by : Soumitra Chattopadhay
Courtesy : Asha Audio
Sound Design : Nagorik Sounds

বোধ
-- জীবনানন্দ দাশ

আলো অন্ধকারে যাই- মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়, কোন এক বোধ কাজ করে;
স্বপ্ন নয়,- শান্তি নয়- ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়;
আমি তারে পারি না এড়াতে,
সে আমার হাত রাখে হাতে;
সব কাজ তুচ্ছ হয়- পণ্ড মনে হয়,
সব চিন্তা-প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়।
সহজ লোকের মতো কে চলিতে পারে।
কে থামিতে পারে এই আলোয় আঁধারে
সহজ লোকের মতো; তাদের মতন ভাষা কথা
কে বলিতে পারে আর; কোনো নিশ্চয়তা
কে জানিতে পারে আর? শরীরের স্বাদ
কে বুঝিতে চায় আর? প্রাণের আহ্লাদ
সকল লোকের মতো কে পাবে আবার!
সকল লোকের মতো বীজ বুনে আর
স্বাদ কই; ফসলের আকাঙ্ক্ষায় থেকে
শরীরে মাটির গন্ধ মেখে,
শরীরে জলের গন্ধ মেখে,
উৎসাহে আলোর দিকে চেয়ে
চাষার মতন প্রাণ পেয়ে
কে আর রহিবে জেগে পৃথিবীর ’পরে?
স্বপ্ন নয়,- শান্তি নয়- কোন্ এক বোধ কাজ করে
মাথার ভিতরে।
পথে চ’লে পারে- পারাপারে
উপেক্ষা করিতে চাই তারে;
মড়ার খুলির মতো ধ’রে
আছাড় মারিতে চাই, জীবন্ত মাথার মতো ঘোরে
তবু সে মাথার চারিপাশে,
তবু সে চোখের চারিপাশে;
তবু সে বুকের চারিপাশে;
আমি চলি, সাথে-সাথে সেও চ’লে আসে।
আমি থামি
সেও থেমে যায়;
সকল লোকের মাঝে ব’সে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা?
আমার চোখেই শুধু ধাঁধাঁ?
আমার পথেই শুধু বাধা?
জন্মিয়াছে যারা এই পৃথিবীতে
সন্তানের মতো হ’য়ে-
সন্তানের জন্ম দিতে-দিতে
যাহাদের কেটে গেছে অনেক সময়,
কিংবা আজ সন্তানের জন্ম দিতে হয়
যাহাদের; কিংবা যারা পৃথিবীর বীজখেতে আসিতেছে চ’লে
জন্ম দেবে- জন্ম দেবে ব’লে;
তাদের হৃদয় আর মাথার মতন
আমার হৃদয় নাকি? তাহাদের মন
আমার মনের মতো না কি?
-তবু কেন এমন একাকী?
তবু আমি কেন এমন একাকী!
হাতে তুলে দেখিনি কি চাষার লাঙল?
বাল্টিতে টানিনি কি জল?
কাস্তে হাতে কতোবার যাইনি কি মাঠে?
মেছোদের মতো আমি কতো নদী ঘাটে
ঘুরিয়াছি;
পুকুরের পানা শ্যাওলা- আঁশটে গায়ের ঘ্রাণ গায়ে
গিয়েছে জড়ায়ে;
-এই সব স্বাদ;
-এ-সব পেয়েছি আমি; বাতাসের মতন অবাধ
বয়েছে জীবন,
নক্ষত্রের তলে শুয়ে ঘুমায়েছে মন
একদিন;
এই সব সাধ
জানিয়াছি একদিন- অবাধ- অগাধ;
চলে গেছি ইহাদের ছেড়ে;
ভালোবেসে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,
অবহেলা ক’রে আমি দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে,
ঘৃণা ক’রে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে;
আমারে সে ভালোবাসিয়াছে,
আসিয়াছে কাছে,
উপেক্ষা সে করেছে আমারে,
ঘৃণা করে চ’লে গেছে- যখন ডেকেছি বারে বারে
ভালোবেসে তারে;
তবুও সাধনা ছিলো একদিন- এই ভালোবাসা;
আমি তার উপেক্ষার ভাষা
আমি তার ঘৃণার আক্রোশ
আবহেলা ক’রে গেছি; যে-নক্ষত্র- নক্ষত্রের দোষ
আমার প্রেমের পথে বার-বার দিয়ে গেছে বাধা
আমি তা ভুলিয়া গেছি;
তবু এই ভালোবাসা- ধুলো আর কাদা।
মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়- প্রেম নয়- কোনো এক বোধ কাজ করে।
আমি সব দেবতারে ছেড়ে,
আমার প্রাণের কাছে চ’লে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরেঃ
সে কেন জলের মতো ঘুরে-ঘুরে একা কথা কয়!
অবসাদ নাই তার? নাই তার শান্তির সময়?
কোনোদিন ঘুমাবেনা? ধীরে শুয়ে থাকিবার স্বাদ
পাবেনা কি? পাবেনা আহ্লাদ
মানুষের মুখ দেখে কোনোদিন!
মানুষীর মুখ দেখে কোনোদিন!
শিশুদের মুখ দেখে কোনোদিন!
এই বোধ- শুধু এই স্বাদ
পায় সে কি অগাধ- অগাধ!
পৃথিবীর পথ ছেড়ে আকাশের নক্ষত্রের পথ
চায় না সে? করেছে শপথ
দেখিবে সে মানুষের মুখ?
দেখিবে সে মানুষীর মুখ?
দেখিবে সে শিশুদের মুখ?
চোখে কালো শিরার অসুখ,
কানে যেই বধিরতা আছে,
যেই কুঁজ- গলগণ্ড মাংসে ফলিয়াছে
নষ্ট শসা- পচা চালকুমড়ার ছাঁচে,
সে সব হৃদয়ে ফলিয়াছে
-সেই সব।

#জীবনানন্দ_দাশ #বোধ #সৌমিত্র_চট্টোপাধ্যায়

Комментарии

Информация по комментариям в разработке