Скачать или смотреть গাজায় গণহত্যা বন্ধ করো ? বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা | STOP GENOCIDE IN GAZA ? CASE AGAINST BIDEN

ভিডিও পরিকল্পনা, প্রতিবেদন রচনা ও প্রতিবেদন পাঠ
জাহাঙ্গীর আলম

প্রিয় দর্শক, শ্রোতা রাজনীতির সাতকাহনে আপনাদের স্বাগত জানাই আমি জাহাঙ্গীর আলম। আমদের আজকের বিষয়: গাজায় গণহত্যা বন্ধ করো।
হাসপাতালে গণকবর, লাশের সারি, রক্তাক্ত শিশু, চিকিৎসার অভাবে ধুকছে অপুষ্ঠ শিশু, আহত নারী-পুরুষ-ইসরায়েলের গাজা গণহত্যার শিকার। এ সব করুণ ও বিভৎস্য চিত্র দেখে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে যেকোনো মানুষের। কিন্তু মিস্টার নেতানিহাহু আর মিস্টার বাইডেন এসব চিত্র দেখে মোটেও বিচলিত হন না। কারণ তারা গাজা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত।
যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহু যুদ্ধের দামামা বাজানো শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে মিস্টার বাইডেন কালবিলম্ব না করে সুদূর আমেরিকা থেকে ছুটে আসলেন ইসরায়েলে সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য । বন্ধুকে আশ্বস্ত করলেন হামাস নির্মূল অভিযানে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। বন্ধুর আশ্বাসে নেতানিয়াহু গাজায় অবিরাম বোমা বর্ষণের মাধ্যমে গণহত্যা মিশন।
বিশ্ববাসী আবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করলো ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু‘র হাত গাজার হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি শিশু, নারী-পুরুষের রক্তে রঞ্জিত হলো।
যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রীর রক্তে রঞ্জিত হাতে হাত মিলিয়ে নিজের হাতও রক্তে রঞ্জিত করে নিলেন মানবতার ধ্বজাধারী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষিসুনাকসহ বেশকিছু পশ্চিমা শাসক।
। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিয় গুত্তেরেস মানবিকতার কারণে গাজা ভূ-খণ্ডে যুদ্ধবিরতির জরুরি আবেদনে বলেছেন, প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি শিশুর “কবরস্থানে” পরিণত হচ্ছে গাজা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়লি বোমা হামলায় গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একজন করে ফিলিস্তিনি শিশু নিহত ও দুইজন শিশু আহত হচ্ছে।
শুধুমাত্র হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে ইসরায়েল গাজার সমস্ত জনগোষ্ঠীর উপর সর্বাত্মক হামলা শুরু করে গত ৭ই অক্টোবর। যুদ্ধের প্রথম এক সপ্তাহে ইসরায়েল গাজায় ৬ হাজারেরও বেশি বোমা বর্ষণ করে।
উল্লেখযোগ্য যে, আফগান যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক বছরে আফগানিস্তানে ৬ হাজার বোমা বর্ষণ করেছিল।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফা এখন গোরস্তান। ইজরাইলি সেনারা অবিরাম বোমা বর্ষণ করে গাজার হাসপাতাল, মসজদি, শরণার্থী শিবির ও বড় বড় সব ভবন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা হামাস খতমের নামে গাজার আলশিফা হাসপাতালে ইসরাইলি সেনা অভিযানকে যুদ্ধ অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, গাজার গণহত্যা বর্বরতার ইতিহাসের সর্বকালের সর্ব রেকর্ড ভঙ্গ করে বর্বরতার এক নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা’র খবরে বলা হয়, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ৩শ২০ ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু এবং তিন হাজারের বেশি নারী। আহত হয়েছে ২৯ হাজার মানুষ।
এছাড়া ৩ হাজার ২শ ৫০ ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৭শ শিশু। ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ভিটে-মাটি হারিয়েছে।
হামাস রাজনৈতিক দল, সন্ত্রাসী সংগঠন নয় এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, গাজার হামাস কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয় বরং একটি রাজনৈতিক দল, ইসরাইল প্রকৃত ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
১৫ নবেম্বর পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরাইলকে অভিযুক্ত করতে আন্তর্জাতিক আদালতের প্রতি আহ্বান জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
এরদোগান বলেন, ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপনকারী ইসরাইলিদের যেন সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, আঙ্কারা তা নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, পশ্চিমাদের ‘অসীম’ সমর্থন নিয়ে গাজা উপত্যকায় ইসরাইল যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, তা ‘মানব ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতারণামূলক হামলা’।
কমিটি টু প্রজেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)-এর তথ্য অনুসারে, ৭ অক্টোবর ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৪৭ জন গণমাধ্যমকর্মী এবং ৩৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে ৩৭জন ফিলিস্তিনি, চারজন ইসরায়েলি এবং একজন লেবানিজ সাংবাদিক রয়েছেন।
সম্প্রতি শতাধিক আন্তর্জাতিক সাংবাদিকের স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধের পশ্চিমা মিডিয়া কভারেজ ইসরায়েলের পক্ষে এবং ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক হচ্ছে।
বিশ্বজনমত ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন গাজা গণহত্যার দায়ে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আর তার অন্যতম সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। অর্থাৎ গাজা গণহত্যার দায়ে এই দুই ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা দ্য সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)।
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতে করা ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা ঠেকাতে আন্তর্জাতিক ও মার্কিন আইন অনুযায়ী নিজের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
মামলায় আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, ইসরায়েলকে সমরাস্ত্র, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দেওয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে যেন বিরত রাখা হয়। আর বাইডেন ছাড়াও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন যেন গাজায় ইসরায়েলের হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে ব্যবস্থা নেন।


ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কাজ করা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষে করা সিসিআরের ওই মামলায় বলা হয়েছে, নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, বেসামরিক স্থাপনায় হামলা এবং জোরপূর্বক মানুষকে ভিটামাটি ছেড়ে যেতে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল।