■■ আশ্চর্য্য রান্নাঘর ও জগন্নাথকে দেওয়া ৫৬ ভোগে রাখা হয় কোন কোন পদ, জেনে নিন। :::এই ★★ রান্নাঘরে বিবিধ দ্রব্য রান্না করার জন্য কোন বিদ্যুৎ বা যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না ।
★★ উন্মুক্ত কাঠের আগুনের উপর অনেকগুলো তেলের ল্যাম্প বা বাতি ঝুলিয়ে রাখা হয় আর তার নিচেই সেবকরা এসেই রান্নার কাজ করে ।
★★ এই রান্নাঘরে এত দ্রুত রান্না করা হয় যে শুধুমাত্র একদিনের প্রস্তুতিতে একসাথে প্রায় দশ হাজার লোক বসে প্রসাদ পায় । আর এমনিতে পাঁচ হাজারের উপর দর্শনার্থী প্রসাদ পেয়ে থাকে ।
★★ এই রান্নাঘরটি ৯টি ভাগে বিভক্ত । যাদের দুটি ভাগ ২৫০০ বর্গফুট করে এবং বাকি ৭টি ভাগ এ দুটির চেয়ে একটু ছোট হবে । এ রান্নাঘরে রয়েছে ৭৫২টি মাটির তৈরি উনুন যার প্রত্যেকটি দৈর্ঘ্যে তিন বর্গফুট করে এবং উচ্চতায় প্রায় ৪ ফুটেরেও বেশি ।
★★ তবে যেটি অদ্ভুত ব্যাপার তা হল রান্না করার বিষয়টি, উনুনগুলোতে একটির উপর একটি পাত্র বসানো হয় এভাবে প্রায় ন'টি পাত্র থাকে।
★★ শুধুমাত্র এ পাত্রগুলোর নিচে অবস্থিত আগুনের মাধ্যমেই উপরের পাত্র থেকে শুরু করে শেষে নিচেরপাত্রটির রান্না অদ্ভুত ভাবে সম্পন্ন হয় । রান্নাঘরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত রয়েছে এক হাজার সেবক । তার মধ্যে ৫০০ সেবক রয়েছে কেবলমাত্র উনুনে রান্না করার জন্য সহায়ককারী হিসেবে ।
★★ এখানে কোন পুরোনো পাত্রে রান্না করা হয় না, প্রতিদিন নতুন নতুন পাত্রে রান্না করা হয়, তাই একদল খালি মাটি দিয়ে পাত্র বানায়, আরেক দল তা সরবরাহ করে রান্নাঘরে নিয়ে যায় ।
★★ আরেকদল পাত্রগুলো ধোয়াধুঁয়ি করে, আরেকদল পাত্রে জল ভর্তি করে উনুনের পাশে নিয়ে যায়।
★★ তবে এখানে আরেকটি অদ্ভুত বিষয় হল রান্না করার জন্য এখানে গঙ্গা আর সরস্বতী নদী (এটা একটা রূপক, পাথর বাঁধানো জলের দুটি নালা, যা সারা দিন নদীর ন্যায় ক্রমাগত জল পরিবহন করে) রান্নাঘরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে যা বাইরে থেকে দেখা যায় না যা সত্যিই অদ্ভুত !
★★ কেউ কেউ সব্জি ধুচ্ছে করছে আর কেউ কেউ সব্জি কাটছে আর কেউ মসলা তৈরি করছে । রান্নাঘরে যে সেবকরা থাকে তাদের বয়স যখন ১২ বছর হয় তখন থেকে তারা ট্রেনিং এ নেমে পড়ে এভাবে তারা বংশানুক্রমে প্রাপ্ত নির্দিষ্ট সেবা সারাজীবন ধরে অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত করে থাকে ।
★★ প্রতিদিন ১০০টির উপর পদ রান্না করা হয় যা দুটি ভাগে বিভক্ত । এ দুটি ভাগকে পাক্কা এবং সুক্কা নামে ডাকা হয় । পাক্কা বলা হয় সে খাবারগুলো যেগুলো সিদ্ধ করা যেমন ডাল, চাল, খিচুরী এবং সমস্ত রকমের সবজি । অপরদিকে সুক্কা বলা হয় বিস্কিট, মিষ্টান্ন আর বিভিন্ন ধরনের পিঠে ।
★★ সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, জগন্নাথের জন্য যেসমস্ত ফল ও সবজি ব্যবহার করা হয় সেগুলো দু হাজার বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি ও ফলই জগন্নাথের জন্য ব্যবহৃত হয় । অন্য কোন অঞ্চল থেকে উৎপাদিত দ্রব্য জগন্নাথের জন্য ব্যবহার করা হয় না ।
★★ জগন্নাথ দেব আর লক্ষ্মী দেবীর কৃপায় ধন্য এই রান্না ঘর । তাইতো পুরীর এ রান্নাঘরকে অদ্ভুত রান্নাঘর বলেই অভিহিত করা হয় । জগন্নাথ দেবের ছাপ্পান্নভোগ কেন জগৎ সেরা প্রতিদিন শতাধিক রকমের ভোগ পৃথিবীর আর কোনো মন্দিরে হয় কিনা জানা নেই ।
★★ জগন্নাথ মন্দির তৈরির সময় থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে । —- প্রতিদিন কমপক্ষে ৫৬ রকম ভোগ রান্না করা হয় । আসলে সমস্ত ভোগই গরিব, নিরন্ন মানুষ এবং ভক্তদের মাঝে বিলি করা হয়।
★★ এজন্য বলা হয়ে থাকে, জগন্নাথ দেব নিজে যেমন খেতে ভালোবাসেন, তেমনি ভালোবাসেন ভক্ত-ভক্তদের খাওয়াতে। খরচেও কার্পণ্য করেন না। তাই রোজ খাওয়া খরচ এর জন্য ২ লাখ এর ওপর। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে খরচা হয় লাগাম ছাড়া।
★★ জগন্নাথ দেবের ৫৬-টি ভোগ হল।......
১) উকখুড়া অর্থাৎ মুড়ি, ২) নাড়িয়া কোড়া অর্থাৎ নারকেল নাড়ু, ৩) খুয়া অর্থাৎ খোয়া ক্ষীর, ৪) দই, ৫) পাচিলা কাঁদালি অর্থাৎ টুকরো টুকরো কলা, ৬) কণিকা অর্থাৎ সুগন্ধী ভাত, ৭) টাটা খিঁচুড়ি অর্থাৎ শুকনো খিঁচুড়ি, ৮) মেন্ধা মুন্ডিয়া অর্থাৎ বিশেষ ধরণের কেক, ৯) বড়া কান্তি অর্থাৎ বড় কেক, ১০) মাথা পুলি অর্থাৎ পুলি পিঠে, ১১) হামসা কেলি অর্থাৎ মিষ্টি কেক, ১২) ঝিলি অর্থাৎ এক ধরণের প্যান কেক, ১৩) এন্ডুরি অর্থাৎ নারকেল দিয়ে তৈরি কেক, ১৪) আদাপচেদি অর্থাৎ আদা দিয়ে তৈরি চাটনি, ১৫) শাক ভাজা, ১৬) মরীচ লাড্ডু অর্থাৎ লঙ্কার লাড্ডু, ১৭) করলা ভাজা, ১৮) ছোট্ট পিঠে, ১৯) বারা অর্থাৎ দুধ তৈরি মিষ্টি, ২০) আরিশা অর্থাৎ ভাত দিয়ে তৈরি মিষ্টি, ২১) বুন্দিয়া অর্থাৎ বোঁদে, ২২) পাখাল অর্থাৎ পান্তা ভাত, ২৩)খিড়ি অর্থাৎ দুধভাত, ২৪)কাদামবা অর্থাৎ বিশেষ মিষ্টি ২৫) পাত মনোহার মিষ্টি ২৬) তাকুয়া মিষ্টি, ২৭) ভাগ পিঠে, ২৮) গোটাই অর্থাৎ নিমকি, ২৯) দলমা অর্থাৎ ভাত ও সবজি, ৩০) কাকারা মিষ্টি ৷ ৩১) লুনি খুরুমা অর্থাৎ নোনতা বিস্কুট, ৩২) আমালু অর্থাৎ মিষ্টি লুচি, ৩৩) বিড়ি পিঠে, ৩৪) চাড়াই নাডা মিষ্টি, ৩৫) খাস্তা পুরি, ৩৬) কাদালি বারা, ৩৭) মাধু রুচী অর্থাৎ মিষ্টি চাটনি, ৩৮) সানা আরিশা অর্থাৎ রাইস কেক, ৩৯) পদ্ম পিঠে, ৪০) পিঠে, ৪১) কানজি অর্থাৎ চাল দিয়ে বিশেষ মিষ্টি. ৪২) দাহি পাখাল অর্থাৎ দই ভাত, ৪৩) বড় আরিশা, ৪৪) ত্রিপুরি, ৪৫) সাকারা অর্থাৎ সুগার ক্যান্ডি, ৪৬) সুজি ক্ষীর, ৪৭) মুগা সিজা, ৪৮) মনোহরা মিষ্টি, ৪৯) মাগাজা লাড্ডু, ৫০) পানা, ৫১) অন্ন, ৫২) ঘি ভাত, ৫৩) ডাল, ৫৪) বিসার অর্থাৎ সবজি, ৫৫) মাহুর অর্থাৎ লাবরা, ৫৬) সাগা নাড়িয়া অর্থাৎ নারকেলের দুধ দিয়ে মাখা ভাত ! দেবের অলৌকিক রান্নাঘর ও ছাপ্পান্ন ভোগ কিভাবে তৈরি হয় ? Puri mandir 56 bhog Jagannath dev | #purimandir #jagannath #dev
Информация по комментариям в разработке