Скачать или смотреть সভ্যতার সংঘাত ও আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থার পুননির্মাণ। গোলাম আজম।।শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ।

#internationalrelations
#education
#huntington

Speaker: M.G. Azam, B.S.S.
4th year, Department of International Relations.
Jahangirnagar University.

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের মাধ্যমে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে চলমান শীতলযুদ্ধের অবসান ঘটলে শীতলযুদ্ধোত্তর বিশ্বের রাজনৈতিক রুপরেখা কেমন হতে পারে তা নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলতে থাকে। এমন সময়েই মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্যামুয়েল পি হান্টিংটন হাজির হন তার ‘সভ্যতার সংঘাত’ তত্ত্ব নিয়ে।

হান্টিংটন ১৯৯৩ সালে ফরেন অ্যাফেয়ার্স জার্নালে ‘ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশনস’ নামক নিবন্ধে প্রথম উল্লেখ করেন- আগামী পৃথিবীর দ্বন্দ্ব-সংঘাত কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ বা অর্থনৈতিক কারণে হবে না, বরং সংঘাত হবে সংস্কৃতি ও ধর্মকে কেন্দ্র করে। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে তিনি 'দ্য ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশন এন্ড দ্য রিমেকিং অফ ওয়ার্ল্ড' নামক বইয়ে সভ্যতার সংঘাত তত্ত্বটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।

হান্টিংটন তার তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে সমগ্র পৃথিবীকে ৯টি সভ্যতায় বিভক্ত করেছেন। এগুলো হলো: পাশ্চাত্য সভ্যতা, সিনিক সভ্যতা, ইসলামী সভ্যতা, অর্থোডক্স সভ্যতা,বুদ্ধ সভ্যতা, জাপানি সভ্যতা, হিন্দু সভ্যতা, ল্যাটিন আমেরিকান সভ্যতা, এবং আফ্রিকান সভ্যতা। প্রতিটি সভ্যতারই নিজস্ব সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ রয়েছে, এবং সেই সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ দ্বারাই সভ্যতাগুলো পরিচালিত হয়ে থাকে।

হান্টিংটনের মতে, পশ্চিমা বিশ্বের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হবে মূলত সিনিক সভ্যতা (অর্থনৈতিকভাবে) এবং ইসলামি সভ্যতা (মতাদর্শগতভাবে)। বাকি সভ্যতাগুলো হবে সুইং স্টেট, অর্থাৎ যেকোনো একদিকে ভিড়ে তাদের অবস্থা শক্তিশালী করবে। সিনিক সভ্যতা তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে নিজেদের আঞ্চলিক অঞ্চলে একচ্ছত্র আধিপত্য গড়ে তুলবে এবং সামরিক ও প্রযুক্তিগতদিক থেকেও পশ্চিমা শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়াবে।

সভ্যতাগুলোর মধ্যে কীভাবে সংঘাতের সৃষ্টি হবে তা হান্টিংটন ব্যাখ্যা করেছেন বিভিন্ন ধাপের মাধ্যমে। তার মতে, গ্লোবালাইজেশনের কারণে সভ্যতাসমূহের মধ্যকার মিথষ্ক্রিয়া বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে সভ্যতাগুলোর মধ্যে ‘Civilizational Consciousness’ এর উত্থান ঘটছে এবং সভ্যতাগুলোর পরস্পরের বৈপরীত্য এবং প্রতিটি সভ্যতার ভেতরে থাকা দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে থাকা মিলগুলো ক্রমেই পরিষ্কার হচ্ছে। মানুষ ক্রমাগত নিজেদের আঞ্চলিক পরিচয় হারায় ফেলছে এবং এই শূন্যতা পূরণ করছে ধর্ম। এভাবে ক্রমেই আঞ্চলিক পরিচয়ের চেয়ে ধর্মীয় পরিচয় বড় হয়ে উঠবে এবং জাতীয় ঐক্যর বদলে ধর্মীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সভ্যতাগুলো আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

Civilizational Consciousness বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সভ্যতাগুলোর মধ্যে নিজেদের মূলে ফিরে যাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা যাবে।
পশ্চিমা শক্তি বাকি সভ্যতাগুলোর মূলে ফিরে যাওয়াকে বাঁধা দিবে এবং সংঘাতের সৃষ্টি হবে।
প্রাথমিকভাবে খুব একটা সাড়া না ফেললেও ১৯৯৮ সালের তানজানিয়া ও কেনিয়ার মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলা ও শেষমেশ ২০০১ সালের টুইন টাওয়ারে বিমান হামলা হান্টিংটনের এ তত্ত্বকে মূলধারায় নিয়ে আসে। এই তত্ত্বটি স্নায়ুযুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক রাজনীতি গবেষণায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত-সমালোচিত হতে থাকা তত্ত্বগুলোর মধ্যে একটি।

অমর্ত্য সেন, এডওয়ার্ড সাঈদ, নোম চমস্কিসহ প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও দার্শনিকের দ্বারা তত্বটি সমালোচিত হয়েছে। অনেকের মতে 'সভ্যতার সংঘাত' একটি বর্ণবাদী