Скачать или смотреть নূরলদীনের সারাজীবন//কবি: সৈয়দ শামসুল হক//Nuruldiner Sara Jibon //Syed Shamsul Haque//আবৃত্তি: মুহিব

Nuruldiner Sara Jibon
Syed Shamsul Haque


নূরুলদীনের সারা জীবন
নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
নূরলদীনের সারাজীবন নাটকের চরিত্র
নুরুলদীনের সারাজীবন কি ধরনের রচনা
নুরুলদীনের সারাজীবন নাটকের বিষয়



নূরুলদীনের সারা জীবন নাটকঃ

কবি ও সাহিত্যিক হিসেবে বিশেষ খ্যাতিমান সৈয়দ শামসুল হক ( ১৯৩৫-২০১৬) নাট্যকার হিসেবেও বাংলাদেশের সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট আসন অলংকৃত করে আছেন। কাব্যনাট্য রচনার দিক থেকে তিনি স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়েছেন এবং এদিক থেকে এদেশের নাট্যধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন।

নুরুলদীনের সারা জীবন ' কাব্যনাট্যের বিষয় ঐতিহাসিক। সৈয়দ শামসুল হকের নুরুলদীনের সারাজীবন শুধু ঐতিহাসিক নয়, তা সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এবং গণ নাটকের লক্ষণাক্রান্ত। এখানে মনে রাখা আবশ্যক যে, কাব্যনাট্যের মূল প্রবণতা অন্তর্মুখী। সুতরাং বর্হিমুখী বা সামাজিক আন্দোলন সংশ্লিষ্ট কাহিনিকে কাব্যনাট্য নামক সাহিত্য আঙ্গিকে বাঁধা কষ্টকর। তবে, নূরুলদীনের সারাজীবন নাটকে বিধৃত হয়েছে দুশো বছর আগের এক স্বল্পজ্ঞাত কৃষক বিদ্রোহের কথা। ব্রিটিশ শাসনামলে ব্রিটিশ শাসক ও স্থানীয় জমিদার মহাজন শ্রেণীর হাতে নিষ্পেষিত অসহায় কৃষক প্রজাদের জীবনের এক মর্মন্তুদ অধ্যায় নিয়ে এ নাটক। শাসক শ্রেণির হাত থেকে বাঁচার জন্য কৃষকরা উপায় না দেখে বিদ্রোহ করে। তাদের নেতা নুরুলদীন, সবাই তার অধীন, সবাই তার কথায় সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত। নূরুলদীনের ব্যক্তিগত জীবনের যন্ত্রণা ও দেশের ভয়াবহ অবস্থার কারণে তার অন্তর্দাহ নাটকের মূল বিষয় বলা চলে।

নুরুলদীনের সারাজীবন কাব্যনাট্যের কাহিনি কাঠামো লক্ষ করলে দেখা যাবে, এর কাহিনি প্রচলিত নাটকের মত এগিয়ে যায় নি। তবে নাট্যকার মোটামুটি প্রচলিত নাটকের নিয়ম রক্ষা করেছেন। প্রথমে নুরুলদীনকে মৃত অবস্থায় দেখা যায়। সাধারণ প্রজাকে ইংরেজ পক্ষের নীল কোরাস বলেছে নূরুলদীন কোথাও নেই৷ তারা পরে গণবাহিনীর দেওয়ান দয়াশীলকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে "মোগলহাটে কামান ফাটে কাঁইও বাঁচি নাই। " অবশ্য এর পরে রক্তাক্ত চাদর গায়ে নুরুলদীন ধীরে ধীরে চোখ খুলে মঞ্চে দাঁড়ায়। একটা চমকের মাধ্যমে আ্যবসার্ডধর্মী নাটকের মত এই কাব্যনাটকের সূচনা। নূরুলদীন বলে, " কাঁই কইলে নাই? কাই কইলে নাই?" বস্তুত এখান থেকে নাটকের প্রবাহ শুরু হয়। এর পর ধীরে ধীরে নাটকের মূল কাহিনির পরিচয় তুলে ধরেন নাট্যকার। ইংরেজ পক্ষ ও কৃষক পক্ষের দ্বন্দ্ব স্পষ্ট বোঝা যায়। ইংরেজদের অত্যাচারের ইতিহাস বর্ণনা করে নুরুলদীন। তাদের কাছে আবেদন নিয়ে যায়। তারপর শেষ পর্যন্ত সামনাসামনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে। এ সময় স্বাভাবিক ভাবে মনে হতে পারে যে, হয়তো প্রত্যক্ষ একটা লড়াই হবে এবং নাটকের চূড়ান্ত climax হবে৷ কিন্তু কার্যত নুরুলদীন তার বন্ধু আব্বাসের পরামর্শে সরাসরি লড়াই না করার সিদ্ধান্ত নেয়। নূরুলদীন শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করে। কাব্যনাট্য বলেই নাট্যকার কাহিনির পরিণতি এভাবে দেখিয়েছেন। নূরুলদীনের মতো বীর সন্তানের মৃত্যু হয় না, তাদের উত্তাধিকার থেকে যায়, এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে নাটক শেষ হয়েছে।