Скачать или смотреть ইব্রাহিম আঃ এর নামে অবমাননাকর মন্তব্য ও কটূক্তি করে ব্রাদারের কাছে ধরা খেলো মুজাফফর। নাউযুবিল্লাহ

উক্ত আলোচনাটি ভালো করে পড়ুন।

যারা ইবরাহীম (আঃ) জাতির পিতা মানে না তারা কুরআন অস্বীকার করে
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
قوله تعالي ملة ابيكم ابراهيم .هو سمكم المسلمين ‘তোমাদের জাতির পিতা ইবরাহীম, তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম।’ ( সুরা হাজ্জ-৭৮)। এই আয়াত থেকেই প্রমাণিত তিনি মুসলিম জাতির পিতা।
ইবরাহীম (আঃ) কেবল মুসলিম জাতির পিতা নন বরং তিনি ছিলেন ইহূদী-খৃষ্টান-মুসলমান সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পিতা। কারণ আদম (আঃ) হ’তে ইবরাহীম (আঃ) পর্যন্ত সকল নবী ও রাসূল বাদে পরবর্তী সকল নবী ও রাসূল তার বংশধর’ (হাদীদ ৫৭/২৬; ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা আলে ইমরান ২৩-২৪ ও আন‘আম ৮৪ আয়াত)।

হযরত ইবরাহীম আঃ ইসলামের "ইমাম" মুসলিমদের পিতা।
যেমন মহান আল্লাহ নিজেই ঘোষাণা করেন, আমি ইবরাহীম আঃকে ইসলাম ধর্মের ইমাম নিযুক্ত করলাম।
قَالَ إِنِّى جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًا
‘আমি তোমাকে মানুষের জন্য ইমাম বানাব’। (সুরা বাকরা-124)
মুসলিম জাতির ব্যপারে মহান আল্লাহ ঘোষাণা করেন, হযরত ইবরাহীম আঃ তোমাদের পিতা। তিনিই তোমাদের নাম "মুসলিম" রেখেছেন।
مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَٰهِيمَ هُوَ سَمَّىٰكُمُ ٱلْمُسْلِمِينَ مِن قَبْلُ وَفِى هَٰذَا
এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের দীন। তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন ‘মুসলিম’ পূর্বে এবং এ কিতাবেও। (সুরা হজ্জ-78)
আয়াতটি খিয়াল করুন, বলা হয়েছে "তোমাদের পিতা ইবরাহীমের দীন।" তথা পিতার দীন বলা হয়েছে। দীনের পিতা বলা হয় নি। এমন পরিস্কার করে বলার পরেও ঘাড় তেড়া কিভাবে বুঝল দীনের পিতা তথা ধর্মীয় পিতা?
আয়াত দু'টি একেবার পরিস্কার। একটি আয়াত বলছে হযরত ইবরাহীম আঃ ইসলাম ধর্মের "ইমাম", তথা ইমাম বলছে, ধর্মীয় পিতা কিন্তু বলে নায়। অপর আয়াতটি বলছে, হযরত ইবরাহীম আঃ মুসলিম জাতির পিতা। একেবারে পরিস্কার কথা। এমন পরিস্কার বয়ান থাকার পরেও ঘড়তেড়া গুঁয়ার মুর্খ বলছে, ইবরাহীম আঃ নাকি মুসলিম জাতির পিতা নয়। কি আর বলা যায় বলুন।
▪️এবার আসুন মুল বিষয়েঃ -
মুল বিষয় হলো জাতি বলতে কি বুঝায়? ভিডিওর লোকটি "জাতি' বলতে বুঝেছে গোটা মানব জাতি। মুল সমস্যা এখানে। এই মুর্খতার কারণেই লোকটি আয়াত অসীকার করে বসেছে।
কুরআন বলছে জাতি বলতে গোটা মানব জাতি বুঝায় না। বরং নির্দিষ্ট কিছু মানবকে বুঝায়। যেমন মহান আল্লাহ ঘোষাণা করেন, আমি তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি।
وَجَعَلْنَٰكُمْ شُعُوبًا وَقَبَآئِلَ
আমি তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। (সুরা হুজরাত-13)
আয়াতটি প্রমান করে জাতি মানে গোটা মানব জাতি নয়। বরং সুনির্দিষ্ট গোষ্টি। অথচ লোকটি মনে করে জাতি মানে গোটা মানব জাতি। এর চেয়ে মুর্খতা কি আর হতে পারে? এই মুর্খপনা বুঝের কারণে সমাজ আজ চরম বিভ্রান্ত।
আসল কথা হলো তথা কথিত আহলে হাদিস মানহাজী মাযহাবের মুকাল্লিদরা জঘন্যতম মুকাল্লিদ। তারা এমন ভয়ঙ্কর অন্ধ মুর্খ মুকাল্লিদ যে, তাদের কাছে সাধারণ জ্ঞানও কিন্তু নেই। অন্ধের মতো শুধু হাত তালিদেয় মাত্র।

অভিযোগ: ১
হ্যাঁ। অনেকে দাবি করবেন যে, আয়াতটির সম্বোধন তো কুরাইশরা। কারণ ইবরাহীম আ. এর পূত্র ইসমাঈল আ. হলেন, আরবদের পিতা। তাহলে বুঝা গেল ইবরাহীম আ. কুরাইশদের পিতা, মুসলিমদের জন্য পিতা নন।

জবাব:
উক্ত বিষয়টি বুঝার জজন্য প্রথমত, আয়াতটির অর্থ জানা দরকার। আয়াতটির অর্থ করতে গিয়ে ইমাম যাজ্জাজ রহ. বলেন,

الْمَعْنَى اتَّبِعُوا مِلَّةَ أَبِيكُمْ

অর্থাৎ এর অর্থ হলো, তোমরা তোমাদের পিতার ধর্ম অনুসরণ করো।
সূত্র: তাফসীরে কুরতুবী খ. ১২ পৃ. ৯২

এক.
প্রিয় পাঠক, উক্ত আয়াতের অর্থ জানার পর আয়াতের বিধানের দিকে একটু খেয়াল করুন। মহান আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াতটির মাধ্যমে সকল মুসলিমদেরকে ইবরাহীম আ. এর ধর্ম মান্য করার হুকুম প্রদান করেছেন। বুঝা গেলো, আয়াতটি শুধু আরবের কুরাইশদের জন্য অবতীর্ণ ছিলো না। যদি আয়াতটি শুধু কুরাইশদের জন্য নির্দিষ্ট করে ধর্তব্য হয়, তাহলে এ আয়াদের বিধান অন্যদের জন্য কার্যকরী হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আয়াতের বিধান যেমন সকল মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য, তেমনি ইবরাহীম আ. সব মুসলিমদের জন্য পিতা।

উপরন্তু আয়াতটি সকল উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য যে নাজিল করা হয়েছে এর দ্বিতীয় প্রমাণ হলো, আয়াতটির ২য় অংশে বলা হয়েছে, هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمينَ অর্থাৎ তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন। বুঝা গেলো আয়াতটি শুধু আরবদের জন্য নয়, বরং আয়াতটি দিয়ে সকল মুসলমান উদ্দেশ্য।

তাফসীরে বাগাবীতে বলা হয়েছে:
وإبراهيم أب لهم على معنى وجوب احترامه وحفظ حقه كما يجب احترام الأب
অর্থাৎ তিনি মুসলিম জাতির পিতা এই অর্থে যে, তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং তার হক সংরক্ষণ করা তেমন অপরিহার্য, যেমন পিতার সম্মান রক্ষা করা অপরিহার্য।
সূত্র: তাফসিরে বাগাবী খ. ৫ পৃ. ৪০৩

তাফসিরে কুরতুবী:
তাফসিরে কুরতুবীতে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা এসেছে এভাবে:
لأن حرمة إبراهيم على المسلمين كحرمة الوالد على الولد
অর্থ: (সকল মুসলিমকে উদ্দেশ্য করেই ইবরাহীমকে আ. ‘পিতা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে যদিও সকল মুসলিম তার সন্তান নয়।) এর কারণ হল, মুসলিমদের নিকট ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর মর্যাদা পুত্রের নিকট পিতার মর্যাদা সমতুল্য।”
সূত্র: তাফসীরে কুরতুবী খ. ৩ পৃ. ১৯৩

অভিযোগ: ২
আমাদের বংশপরম্পরা তো ইবরাহীম আ. এর সাথে মেলে না। তাহলে তাঁকে পিতা বলা কতটুকু ঠিক?

জবাব:
আল্লাহ তা’আলা নবীজির সা. স্ত্রীদেরকে আমাদের জন্য ‘মা’ বলেছেন। পবিত্র কুরআনের আয়াত দেখুন।
النَّبِيُّ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ
অর্থ; ‘আর তাঁর (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীগণ তাদের (মুসলিমদের) মা।’
সূরা আহযাব, আয়াত নং ৬

হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত নবীজি সা. বলেন,

إنَّما أنا لكم مِثْلُ الوالدِ
অর্থাৎ নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য বাবা সমুতুল্য।
সূত্র: সহিহ ইবনে হিব্বান হাদিস: ১৪৪০

এখানে নবীজি সা. এর স্ত্রীদেরকে ‘মা’ এবং নবীজি সা. কে ‘বাবা’ বলা হয়েছে। অথচ বংশপরম্পরায় তো আমরা সবাই সাইয়্যেদ বংশের না। তাহলে নবীজির সা. এর দাবীও কি ভুল?

আল্লাহ সহিহ বুধ দান করুন। আমিন।