প্রবাসীদের ব্যাংক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে যত জটিলতা | Probasi Bank Loan
আমরা কমবেশি সবাই জানি যে, আমাদের দেশের প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বিদেশ থেকে অর্থ পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। বিদেশে কঠোর পরিশ্রম করে পাঠানো টাকায় শুধু তাদের পরিবার নয়, পুরো দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। এমনকি অর্থনৈতিক সংকটেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের রিজার্ভের ঘাটতি পূরণ করে চলেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, যখন এই প্রবাসীরা দেশে ফিরে সামান্য ঋণ নিতে চান, তখনই শুরু হয় জটিলতার এক দীর্ঘ তালিকা। আজকের আলোচনা থেকে আমরা জানবো, প্রবাসীরা কেন ব্যাংক ঋণ পেতে এত সমস্যার মুখোমুখি হন এবং এগুলো সমাধানের সম্ভাব্য পদক্ষেপ কি হতে পারে। চলুন, বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি। প্রবাসীরা কেবল পরিবার নয়, গোটা জাতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করেন।
তারা বছরে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠান। এই টাকায় আমাদের দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকে, যা আমাদের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। তবে, যখন তারা দেশে ফিরে তাদের কোন স্বপ্ন পূরণের জন্য বা জরুরি কোন প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চান, তখনই পড়েন বিপাকে। প্রবাসীদের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক চালু করেছে, যার উদ্দেশ্য প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। এই ব্যাংকটি অভিবাসন ঋণ, পুনর্বাসন ঋণসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করে। কিন্তু এখানে ঋণ পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। ঋণের জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হতে হলে দরকার হয় তিনটি ডকুমেন্ট- বাংলাদেশি পাসপোর্ট,
বাংলাদেশের এনআইডি এবং যে দেশে থাকেন সে দেশে কাজের বৈধ আকামা বা ভিসা। এগুলো যাচাই-বাছাই এর পর ঋণ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হলে আরও কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। ঋণের পরিমাণ অনুযায়ী একজন বা দুজন গ্যারান্টার প্রয়োজন হয়, যারা হতে হবে সরকারি চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী। ধরুন, আপনি তিন লাখ টাকা ঋণ নিতে চান। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে দুজন সরকারি চাকরিজীবীর সাক্ষরসহ গ্যারান্টি চেক। এই প্রক্রিয়া অনেকের জন্যই একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এখন প্রশ্ন হলো, সমস্যাগুলো আসলে কোথায়? প্রথমত, গ্যারান্টার খুঁজে পাওয়া প্রবাসীদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। কারণ তাদের পরিবারের সদস্যরা বেশিরভাগই গ্যারান্টি দেওয়ার যোগ্য নন। দ্বিতীয়ত, এসব ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা খুবই সময়সাপেক্ষ এবং জটিল। তৃতীয়ত, ঋণের পরিমাণ সীমিত। এমনকি যারা শর্ত পূরণ করতে পারেন, তারাও প্রায়ই তাদের চাহিদামতো ঋণ পান না। এসব জটিলতার ফলে, প্রবাসীরা হতাশ হয়ে ফিরে যান। অনেক সময় তাদের স্বপ্ন বা প্রয়োজন পূরনে বিকল্প পথ খুজতে হয় যার ফলে আরও অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, তারা জামানতবিহীন ঋণ দেয়, তাই গ্যারান্টার এমন কেউ হতে হবে, যিনি ঋণ পরিশোধে সক্ষম। তাদের যুক্তি হলো, এটা জনগণের টাকা, তাই এটি অবশ্যই সুরক্ষিত রাখা দরকার।
ব্যাংকের এক কর্মকর্তার মতে, গত দশ বছরে তারা প্রায় ৫১৫ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন। দেখা যায় বেশিরভাগ প্রবাসী তাদের পরিবার বা নিকটজনদের গ্যারান্টার করতে চান, যারা আর্থিকভাবে ঋণ পরিশোধে যোগ্য নন। ফলে ঋণ প্রক্রিয়ায় তারা বারবার বাধার সম্মুখীন হন। অন্যদিকে, অনেক প্রবাসী তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, তারা ব্যাংকে গিয়ে এমন শর্তের মুখোমুখি হন, যা তাদের পক্ষে পূরণ করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার ফলে অনেকের বাংলাদেশের এনআইডি না থাকা, গ্যারান্টারের শর্ত পূরণে অক্ষমতা, অথবা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের অভাবে তারা ঋণ পেতে ব্যর্থ হন। তাহলে, এই সমস্যাগুলোর সমাধান কী হতে পারে? এগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে যেসব সম্ভাব্য উপায় থাকতে পারে সেগুলো হলোঃ গ্যারান্টারের শর্ত সহজ করা এবং পরিবারের সদস্যদের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা। প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ঋণ নীতিমালা তৈরি করা। অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং দ্রুত করা। প্রবাসীদের প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণের পরিমাণ বাড়ানো।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে প্রবাসীরা তাদের স্বপ্ন পূরণে আরও এগিয়ে যেতে পারবে এবং দেশের অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখতে পারবে। প্রবাসীরা আমাদের দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে অনিবার্য ভূমিকা পালন করে। তাদের জন্য ঋণ প্রক্রিয়া সহজ করা শুধু একটি দায়িত্ব নয়, বরং একটি নৈতিক প্রয়োজন। আপনার মতামত কী? প্রবাসীদের জন্য ঋণ প্রক্রিয়ায় আরও কী কী পরিবর্তন আনা যেতে পারে? আমাদের জানান কমেন্টে। ভিডিওটি ভালো লাগলে লাইক, শেয়ার এবং সাবস্ক্রাইব করতে
Keyword:
প্রবাসীদের ব্যাংক লোন,প্রবাসীদের জন্য ব্যাংক লোন,ব্যাংক লোন,ব্যাংকে প্রবাসীদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা,প্রবাসী লোন ব্রাক ব্যাংক,ব্যাংক ঋণ,probashi loan,probashi bank loan,জনতা ব্যাংক লোন,ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম,প্রবাসী ব্যাংক প্রণোদনা,প্রবাসী লোন কোন ব্যাংক দেয়,প্রবাসী ব্যাংক লোন,প্রবাসী লোন ব্র্যাক ব্যাংক,প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক,প্রবাসী বন্ড কি ইসলামী ব্যাংক পাওয়া যায়,প্রবাসী লোন নেওয়ার নিয়ম,প্রবাসী লোন সোনালী ব্যাংক,প্রবাসী লোন ইসলামী ব্যাংক
Информация по комментариям в разработке