108) সূরা কাওসার - Surah Al-Kawsar (মক্কায় অবতীর্ণ - Ayah 3)
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
(1
إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ
নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি।
(of Abundance).
(2
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন।
Therefore to thy Lord turn in Prayer and Sacrifice.
(3
إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ
যে আপনার শত্রু, সেই তো লেজকাটা, নির্বংশ।
For he who hateth thee, he will be cut off (from Future Hope).
quraanshareef.org | privacy policy
১. নিশ্চয় আমরা আপনাকে কাউছার(১) দান করেছি।
(১) বিভিন্ন হাদীসে কাউসার ঝর্ণাধারার কথা বর্ণিত হয়েছে। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে আমাদের সামনে উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ তার মধ্যে তন্দ্রা অথবা এক প্রকার অচেতনতার ভাব দেখা দিল। অতঃপর তিনি হাসিমুখে মাথা উঠালেন। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ আপনার হাসির কারণ কি? তিনি বললেন, এই মুহূর্তে আমার নিকট একটি সূরা নাযিল হয়েছে। অতঃপর তিনি বিসমিল্লাহ সহ সূরা আল-কাউসার পাঠ করলেন এবং বললেন, তোমরা জান, কাউসার কি?
আমরা বললাম, আল্লাহ্ তা'আলা ও তার রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, এটা জান্নাতের একটি নহর। আমার রব আমাকে এটা দেবেন বলে ওয়াদা করেছেন। এতে অজস্র কল্যাণ আছে এবং এই হাউযে কেয়ামতের দিন আমার উম্মত পানি পান করতে যাবে। এর পানি পান করার পাত্ৰ সংখ্যা আকাশের তারকাসম হবে। তখন কতক লোককে ফেরেশতাগণ হাউয থেকে হটিয়ে দিবে। আমি বলব, হে রব! সে তো আমার উম্মত। আল্লাহ তা'আলা বলবেন, আপনি জানেন না, আপনার পরে তারা নতুন মত ও পথ অবলম্বন করেছিল।” [মুসলিম: ৪০০, মুসনাদে আহমাদ: ৩/১০২]
অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইসরা ও মিরাজের রাত্রিতে আমাকে এক প্রস্রবনের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো যার দু তীর ছিল মুক্তার খালি গম্বুজে পরিপূর্ণ, আমি বললাম, জিবরীল এটা কি? তিনি বললেন, এটাই কাউসার” [বুখারী: ৪৯৬৪]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমাকে কাউসার দান করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে, প্রবাহিত একটি নহর। যা কোন খোদাই করা বা ফাটিয়ে বের করা হয়নি। আর তার দুই তীর মুক্তার খালি গম্বুজ। আমি তার মাটিতে আমার দু’হাত মারলাম, দেখলাম তা সুগন্ধি মিস্ক আর তার পাথরকুচি মুক্তোর।” [মুসনাদে আহমাদ: ৩/১৫২]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, “কাউসার হচ্ছে এমন একটি নাহর যা আল্লাহ আমাকে জান্নাতে দান করেছেন, তার মাটি মিসকের, দুধের চেয়েও সাদা, মধুর চেয়েও সুমিষ্ট, এতে এমন এমন পাখি নামবে যেগুলোর ঘাড় উটের ঘাড়ের মত। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এগুলো তো খুব সুস্বাদু নিশ্চয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যারা এগুলো খাবে তারা আরও কোমল মানুষ।” [তাবারী: ৩৮১৭৪, মুসনাদে আহমাদ: ৩/২২১, তবে মুসনাদে আহমদে আবু বকরের পরিবর্তে উমরের কথা এসেছে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, “তার পেয়ালাগুলোর সংখ্যা আকাশের তারকাদের সংখ্যার অনুরূপ”। [বুখারী: ৪৯৬৫]
মোটকথা: হাউয্যের অস্তিত্ব ও বাস্তবতা অনেক সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। কোন কোন অভিজ্ঞ আলেম উল্লেখ করেছেন যে, এ হাদীসগুলো মুতাওয়াতির। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে ত্ৰিশ জনের বেশী সাহাবী এ সমস্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন।
তবে এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, কাউসার ও হাউয একই বস্তু নয়। হাউযের অবস্থান হাশরের মাঠে, যার পানি কাউসার থেকে সরবরাহ করা হবে। আর কাউসারের অবস্থান হলো জান্নাতে। হাশরের ময়দানের হাউয সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জান্নাতের কাউসার ঝর্ণাধারা থেকে পানি এনে হাউযে ঢালা হবে। এক হাদীসে বলা হয়েছে, “জান্নাত থেকে দুটি খাল কেটে এনে তাতে ফেলা হবে এবং এর সাহায্যে সেখান থেকে তাতে পানি সরবরাহ হবে।” [মুসলিম: ২৩০০, মুসনাদে আহমাদ: ৪/৪২৪, ৫/১৫৯, ২৮০, ২৮১, ২৮২, ২৮৩]
সুতরাং হাউয হলো এমন এক বিরাট পানির ধারা যা আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হাশরের মাঠে দান করেছেন। যা দুধের চেয়েও শুভ্ৰ, বরফের চেয়েও ঠাণ্ডা, মধুর চেয়েও মিষ্টি, মিসকের চেয়েও অধিক সুস্ৰাণ সম্পন্ন। যা অনেক প্রশস্ত, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে সমান, তার কোণ সমূহের প্রত্যেক কোণ এক মাসের রাস্তা, তার পানির মূল উৎস হলো জান্নাত। জান্নাত থেকে এমন দুটি নলের মাধ্যমে তার সরবরাহ কাজ সমাধা হয়ে থাকে যার একটি স্বর্ণের অপরটি রৌপ্যের। তার পেয়ালা সমূহের সংখ্যা আকাশের তারকারাজীর মত। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার হাউযের আয়তন হচ্ছে ‘আইলা’ (বায়তুল মুকাদ্দাস) থেকে সান’আ পর্যন্ত, আর সেখানে পেয়ালার সংখ্যা আকাশের তারকার মত এত বেশী”। [বুখারী: ৬৫৮০, মুসলিম: ২৩০৩] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, “আমার হাউয এক মাসের রাস্তা, তার কোণসমূহ একই সমান, তার পানি দুধের চেয়েও সাদা, তার ঘাণ মিসকের চেয়েও বেশী উত্তম, তার পেয়ালাসমূহ আকাশের তারকা মত বেশী ও উজ্জ্বল, যে তা থেকে পান করবে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবেনা”। [বুখারী: ৬৫৭৯, মুসলিম: ২২৯২]
অধ্যক্ষ মাওলানা মোজাম্মেল হক সাহেবের
লিখিত তাফসীর ও বই পেতে যোগাযোগ করুন
মোবাইল:-- ০১৭৭৭৬৯৬১২২
WhatsApp/Imo-- 01777696122
"তাফসীরুল ওয়াফী( ০১ম থেকে ১০ম খন্ড) এবং 'আলো-আঁধার'
সিরিজের বইসমূহ
১.ঈমান ও শিরক,
২.ঈমান ও আখিরাত,
৩.সত্য দলের পরিচয়,
৪.মানুষেরবর্তমান
৫.মানুষের অতীত,
৬.মানুষের ভবিষ্যত
৭.কুরআন-হাদিস-ফিকাহ
৮.কুরআনের পরিচয় এবং
৯. বই ‘স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পোশাক’
#aloadharbd #mau_mozammel_haquer #bangla_waz
Информация по комментариям в разработке