Скачать или смотреть ছেলেদের জীবন নিয়ে একটা আবেগময় বাস্তব গল্প

শুভ, বয়স মাত্র চব্বিশ। কলেজ শেষ করেছে বছরখানেক হলো, এখন চাকরির খোঁজে দিন কাটে। বাইরে থেকে দেখে সবাই ভাবে— সবসময় হাসিখুশি, আড্ডাবাজ, দারুণ মিশুক স্বভাবের ছেলে। কিন্তু আসল শুভকে কেউ দেখে না। ভেতরে ভেতরে সে যেন অন্য মানুষ—দুশ্চিন্তা, দায়িত্ব আর ভয়ের পাহাড় বয়ে বেড়ানো এক সাধারণ ছেলে।

দিনে যখন লোকজনের ভিড়, তখন সে হাসিমুখে সবার সঙ্গে মিশে থাকে। বন্ধুরা ভাবে ওর কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু রাত হলেই অন্য শুভ সামনে আসে। বিছানায় মাথা রাখলেই মনে পড়ে— “চাকরি হবে তো? বাবা-মাকে সুখ দিতে পারবো তো? এই জীবনের লড়াই আমি একা পারবো তো?” ঘুম আসে না, বুক ধড়ফড় করে। কেউ জানে না, কত রাত শুভ একা বসে কেঁদেছে, আবার সকালে সবার সামনে যেন কিছুই হয়নি, এমন অভিনয় করেছে।

বাড়ির পরিস্থিতিও শুভকে দমিয়ে রাখে। বাবা প্রতিদিন বলে—
"বাবা, তোকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। তুই যদি চাকরি পাস, সংসারটা একটু হালকা হবে।"
মায়ের চোখেও সেই একই আশা। শুভ মাথা নাড়ে, মুখে হাসি রাখে। কিন্তু বুকের ভেতরটা যেন ফেটে যায়। নিজের স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে চাপা পড়ে যাচ্ছে, শুধু পরিবারের স্বপ্ন বাঁচানোর জন্য।

শুভর ব্যক্তিগত জীবনও শান্ত নয়। কলেজে পড়ার সময় তার একটা প্রেম ছিল। মেয়েটার সঙ্গে অনেক স্বপ্ন বুনেছিল সে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই সম্পর্ক ফিকে হয়ে গেল। একদিন মেয়েটা সোজাসাপ্টা বলেই দিল—
"তুই ভালো মানুষ, কিন্তু আমার পরিবার চায় প্রতিষ্ঠিত ছেলে। আমি তোকে হারাতে চাই না, কিন্তু এইভাবে টিকবেও না।"
সেদিন শুভ প্রথম বুঝলো— ভালোবাসা থাকলেই সব পাওয়া যায় না, ছেলেদের জীবনে দায়িত্ব আর অবস্থান অনেক বড় হয়ে দাঁড়ায়।

সমাজও বোঝে না ছেলেদের কষ্ট। বন্ধুরা মজা করে বলে— "শুভ সব সামলাতে পারে, ওর কোনো কষ্ট নেই।" কেউ জানে না, শুভ আসলে কতটা একা। কারো কাছে মনের কষ্ট উজাড় করে বলতে পারে না। কারণ সমাজ শিখিয়েছে— “ছেলেরা কাঁদে না, ছেলেরা দুর্বল হয় না।” তাই সে চুপ করে যায়, বুকের ভেতরের পাহাড়টা আরো বড় হতে থাকে।

একদিন ভোরে শুভর ঘুম ভাঙে আজানের শব্দে। জানালার বাইরে আলো আসছে ধীরে ধীরে। হঠাৎই মনে হলো— জীবন যতই কঠিন হোক, লড়াইটা থামানো যাবে না। কাউকে পাশে পাওয়া না-পাওয়া মুখ্য নয়, ছেলেদের জীবন মানেই যুদ্ধ। মুখে হাসি রাখতে হবে, যদিও ভেতরে ঝড় বইছে।