জগদানন্দপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দির

Описание к видео জগদানন্দপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দির

পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার কাছে দাইহাটের পাশে জগদানন্দপুর গ্রামে আছে জমিদার রাধামোহনবাবুর রাধাগোবিন্দ মন্দির । আঠারোশো সতেরো সালে বৃন্দাবনে গিয়েছিলেন জমিদারবাবুর রাধামোহনবাবু । ওনার আদি বাড়ি ছিল বাংলাদেশের যশোর জেলার ভৈরব নদীর তীরে রামগড় গ্রামে । জমিদারবাবু আঠারোশো সতেরো সালে বৃন্দাবনে গিয়ে এক সন্ন্যাসীর দর্শন পান এবং সেই সন্ন্যাসী জমিদারবাবুকে একটা গোবিন্দমূর্তি দিয়ে পূজা করতে বলেছিলেন । তবে সেই গোবিন্দমূর্তির সাথে রাধারাণীর মূর্তি ছিল না । সন্ন্যাসী সেই মূর্তি জমিদারবাবুকে দেওয়ার পর অদৃশ্য হয়ে যান । এমতাবস্থায় জমিদারবাবু স্থির থাকতে না পেরে ওনার গুরুদেব লালাজীর বৃন্দাবনের আশ্রমের দুয়ারে উপস্থিত হন । তারপর গুরুদেবের সঙ্গে সাক্ষাত্ না করেই এই জগদানন্দপুর গ্রামে উপস্থিত হন এবং গোবিন্দজীর প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুতি নেন । আঠারোশো ঊনিশ সালে মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয। উত্তরপ্রদেশের মথুরা , মির্জাপুর থেকে বেলেপাথর গঙ্গানদীপথে আনা হয় এবং এখানে ভাগীরথী নদীর তীরে দাইহাটে হরগৌরী বন্দরে আনা হয এবং সেখান থেকে আট কিলোমিটার খাল কেটে জগদানন্দপুর গ্রামে আনা হয । দাইহাট এবং রাজস্থানের মিস্ত্রিদের দিয়ে এই মন্দির নির্মাণ করা হয় । মন্দিরের গায়ে লক্ষ্য করা যায় অপূর্ব টেরাকোটার কাজ ।আঠারোশো পঁয়ত্রিশ সালে এখানে রাধারাণীকে আনা হয় রাজস্থানের জয়পুর থেকে । তখনকার দিনে সারে পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য । এই খরচের সিংহভাগ এসেছিল বাংলাদেশের যশোর ও খুলনা থেকে । রাধামোহনবাবুর পৈত্রিক ভিটে থেকে দামোদর জিউর মূর্তি এনে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় । এখানে প্রতিষ্ঠিত দেবতা হলেন রাধা গোবিন্দ এবং নিতাই । মন্দিরটি দোতলা এবং পুরীর রথের আদলে তৈরী । যে আটকিমি সাল কেটে পাথর আনা হয়েছিল সেই খালটা এখন মাঝে মাঝে চরা পরে গিয়ে পুকুরের মত হয়েছে । পর পর কয়েকটি পুকুর হয়েছে । পুরো মন্দিরটি বেলেপাথরে তৈরী আর মূর্তিগুলো কষ্টিপাথরে নির্মিত । গর্ভগৃহে প্রবেশপথের সামনেই রয়েছে একটি খিলান এবং খিলানের উপরে রয়েছে কমলকামিনী মূর্তি , লক্ষীনারাযণ পদ । দুই পাশে আছে নারায়ণের মূর্তি । মন্দিরের সারা গায়ে টেরাকোটার কাজ আছে । মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয় আঠারোশো ঊনিশ সালে এবং শেষ হয় আঠারোশো ঊনচল্লিশ সালে রাধাষ্টমী দিনে সময় । প্রায় কুরি বছর সময় লেগেছিল এই মন্দির নির্মাণ করতে । নাটমন্দিরে আছে বিভিন্ন টেরাকোটার কাজ । টেরাকোটার কাজগুলিতে লক্ষ্য করা যায় পৌরাণিক কাহিনী , যেমন --- গঙ্গার মর্ত্যে অবতরণ , দুর্গাপূজা, কালীয়দমন, রামরামের যুদ্ধ , বিষ্ণুদেব, গজকুমীরের যুদ্ধ, কৃষ্ণের গজবেশে গোপীনীদের সঙ্গে লীলা, অষ্টসখীর সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের লীলা , বিষ্ণুদেবের অনন্তশয্যা ,গৌরনিতাই-এর নামসংকীর্তন । এখানে দোল উত্সব খুব ঘটা করে পালিত হয । তখন মেলা বসে এবং সাত আটটা গ্রামের মানুষ ভীর করেন । তাছাড়া জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী, অন্নকূট উত্সব পালিত হয় । এখানে অন্নকূট উত্সব পালিত হয় দীপাবলী অমাবস্যার পরের দিন প্রতিপদ তিথিতে । মন্দিরের চারপাশে আছে ফল ফুলের বাগান । মন্দিরটির উচ্চতা বিরাশি ফুট ।এই মন্দিরের দোতলায হরগৌরী মূর্তি প্রতিষ্ঠিত আছে ।প্রভুজীর অনুমতি নিযে যেতে হয় দোতলায । খুব উঁচু উঁচু অন্ধকারাচ্ছন্ন সিঁড়ি । বিজলী বাতি ব অন্য কোনো আলোর ব্যবস্থা নেই । দোতলাতেও আছে টেরাকোটার বিভিন্ন কাজ , যেমন -- মোকাবিলাস । মন্দিরের খিলানের দুপাশে আছে কোষ্টিপাথরে নির্মিত দুটি নারায়ণ মূর্তি । পুরীর রথের মতো দেখতে এই মন্দির । হরগৌরী মন্দিরে প্রবেশের পথে উপরেই রয়েছেন সিদ্ধিদাতা গনেশ । হরগৌরী মন্দিরের গায়ে আছে বিভিন্ন কোষ্ঠীপাথরের মূর্তি খোদাই করা যেমন ---- নৃসিংহ অবতার , বরাহ অবতার , মতসাবতার , কূর্মাবতার , জগন্নাথ -বলরাম-সুভদ্রা ,
বামন অবতার , সত্যনারায়ণ, রামসীতা , লক্ষীমূর্তি ( কমলকামিনী ) । হরগৌরী মন্দিরের গর্ভগৃহে আলোর কোনো ব্যাবস্থা নেই ।

Комментарии

Информация по комментариям в разработке