Скачать или смотреть আফ্রিকার সবচেয়ে বিষধর সাপ ব্ল্যাক মাম্বা | অজানা ডায়েরি

ব্ল্যাক মাম্বা বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর প্রজাতির সাপের মধ্যে পড়ে। বিশ্বের সবচেয়ে ৫টি বিষধর সাপের মধ্যে একটি হল ব্ল্যাক মাম্বা। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, এই সাপ ভারতে বা বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। কেবল আফ্রিকাতেই এই সাপকে দেখা যায়, আর ওখানকার বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যুর কারন এই সাপ। আপনি যদি এই সাপটিকে দেখতে চান তাহলে সাহারা চলে যান, সেখানে প্রচুর পরিমাণে এই সাপকে দেখা যাবে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়টি হল অন্যান্য সাপেদের তুলনায় ব্ল্যাক মাম্বা প্রজাতির সাপের সংখ্যা সবচেয় বেশি। এই সাপটি দেখতে খুবই ভয়ঙ্কর, আর জঙ্গলের ঘন ঝোপ–ঝাড় এবং গাছের ডালে থাকতে ভালবাসে এরা। ব্ল্যাক মাম্বা সাপ সাধারনত ২ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। আবার বলা হয় কখন কখন সাড়ে চার মিটার পর্যন্ত লম্বা সাপ জঙ্গলে দেখা গেছে। এই সাপ অন্যান্য সাপেদের তুলনায় প্রচণ্ড জোরে দৌড়াতে পারে। এমনকি ঘণ্টাই ২০ কিলোমিটার বেগে ছুটে তার শিকারকে আক্রমন করতে পারে। ব্ল্যাক মাম্বা ভয় পেলে পরপর ১০ থেকে ১২ বার পর্যন্ত তার শিকারকে কামড়াতে পারে এবং চারশো মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ শিকারের শরীরে ছেড়ে দেয়।

এর বিষ হল ফাস্ট অ্যাকটিং নিউরো টক্সিন। ব্ল্যাক মাম্বার মাত্র ১ মিলিগ্রাম বিষ মানুষকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এই সাপ কামড়ানোর পরক্ষণেই মানুষের চোখের সামনে অন্ধকার নেমে আসে। ব্ল্যাক মাম্বা শরীরের যে অংশে কামড়ায় সেই জায়গাতে এমন অসহ্য যন্ত্রনা হয় যা একটি মানুষের সহ্য ক্ষমতার বাইরে। বলা হয় যে ব্ল্যাক মাম্বা কামড়ালে বাঁচার একমাত্র উপায় হল এন্টি ব্যানিন। কিন্তু এই ঔষধ তৈরির আগে এই সাপের কামড়ের থেকে আজ পযন্ত কেউ বাঁচতে পারেনি। আফ্রিকাতে ব্ল্যাক মাম্বার আতঙ্ক এতটাই মানুষের মনে প্রভাব বিস্তার করেছে যে, এখানে যদি কোন মানুষকে সাপে কামড়ায় তাহলে তাকে সবার আগে ব্ল্যাক মাম্বা সাপের এন্টীডোস দেওয়া হয়। যদি এই সাপ কাউকে কামড়ায় আর ২০ মিনিটের মধ্যে তার চিকিৎসা শুরু না হয় তাহলে তার মৃত্যু অবধারিত। PBS অর্থাৎ পাব্লিক ব্রডকাস্ট স্টেশনের দ্বারা আমরা জানতে পারি প্রত্যেক বছর প্রায় ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এই সাপের কামড়ে। এখন আপনি ভাবছেন যে এই সাপটির নাম ব্ল্যাক মাম্বা দেওয়া হয়েছে কারন এই সাপটির রঙ কালো বলে তাহলে জেনে রাখুন আপনার ধারনা সম্পূর্ণ ভুল, অনেকে বলে থাকে এই সাপটির মুখের ভেতরের রঙ কালো তাই এর নাম ব্ল্যাক মাম্বা। এই সাপ বিপদের আশঙ্কা টের পেলেই সে তার রঙ বদলে ফেলে, যা সবুজ, হলুদ ও ধূসরও হতে পারে। ব্ল্যাক মাম্বা তার এক কামড়ে ১০ থেকে ১২ জন মানুষকে মেরে ফেলতে পারে। এরা জঞ্জলে থাকতে পছন্দ করে কিন্তু কখনও কখনও শিকারের খোঁজে লোকালয়ে চলে আসে। যেখানে মানুষের ভিড় বেশি থাকে সেখানে এই সাপ আক্রমন করে। আপনি যদি ব্ল্যাক মাম্বার কামড়ের হাত থেকে বেঁচে যান তো ঠিক আছে, না হলে এই সাপ যে বাক্তিকে কামড়ায় তার শরীর অল্প সময়ের মধ্যেই নীল হয়ে যায় এবং তার মৃত্যু ঘটে। ব্ল্যাক মাম্বা সাধারণত ছোট পাখি বা জীবজন্তুদের শিকার করে কিন্তু এই সাপের শিকার করার পদ্ধতি অন্যান্য সাপেদের থেকে একদমই আলাদা।

ব্ল্যাক মাম্বা প্রথমে তার শিকারকে তারা করে তার শরীরে বিষ ছেড়ে দেয়, তারপর অপেক্ষা করে এবং শিকারকে লক্ষ রাখে, যখন বিষক্রিয়ার ফলে শিকারটি প্যারালিইসিস হয়ে মারা যায় তখন সে তার শিকারকে গিলতে শুরু করে। সবথেকে আশ্চর্যজনক বিষয়টি হল ব্ল্যাক মাম্বা তার থেকে চার গুন বড় শিকারকে অনায়েসে গিলে ফেলতে পারে। এই সাপ প্রজননের সময় ৬ থেকে ২৫ টি ডিম পাড়ে। বলা হয়ে থাকে এই সাপ একবার ডিম পাড়ার পর আর তার বাচ্চাদের মুখ দেখেনা, তাদের ছেড়ে চলে যায়। তিন মাস ডিমের ভেতরে থাকার পর ছোট মাম্বা ডিম থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসে, সেই সময় বাচ্চা গুলি ১৬ থেকে ২৪ ইঞ্ছি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। মনে করা হয়ে থাকে ব্ল্যাক মাম্বা ১১ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে। কিন্তু এত বয়স পর্যন্ত তাদের শিকার ধরার ক্ষমতা কমে যায়। কিছু লোক ব্ল্যাক মাম্বাকে অতিসাধারণ সাপ মনে করে ভুল করে কিন্তু ভুল করেও আপনি এটা ভাবন না। রুশে থাকা একটি ছেলে এই বিষধর সাপটি নিয়ে ভিডিও বানাত। ছেলেটি মনে করেছিলো যে তার কাছে যে সাপটি রয়েছে সেটি তার পালতু সাপ এবং তার কামড়ে তার কিছুই হবে না। আর এই ভেবে সে সাপটিকে দিয়ে তার নিজের হাতে দংশন করিয়েছিল। আর এর ফলে তার মৃত্যু ঘটে ছিল।