Скачать или смотреть অজানা ইতিহাস || পরানখালী জমিদার || ভেড়ামারা || কুষ্টিয়া || Around My City

আমাদের পেইজ লাইক দিয়ে সাথে থাকুন:   / aroundmycitybd  

অজানা ইতিহাস || পরানখালী জমিদার || ভেড়ামারা || কুষ্টিয়া || Around My City

প্রায় দেড়শত বছর আগে তৎকালীন নদিয়া জেলায় জমিদার রামরাখন তিওয়ারীর হাতধরে ৭০০ বিঘা জমি নিয়ে পরানখালীর জমিদারদের জমিদারী শুরু হয়েছিলো । যা বর্তমানে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পরানখালী গ্রাম বলে পরিচিত । পরানখালী গ্রাম ভেড়ামারা থেকে মাত্র দশ কিলোমিটারের পথ । ব্রিটিশদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে রামরাখন তিওয়ারী জমিদারী শুরু করেছিলেন । তাদের অধীনে মোট সাতটি মৌজা ছিলো । মৌজা গুলো হলো পরানখালী, জুনিয়াদহ, ধরমপুর, হরিপুর, রানাকড়িয়া, জগেশ্বর এবং গোবিন্দপুর । পরবর্তিতে রামরাখন তিওয়ারীর ছেলে হরিচরণ তেওয়ারী জমিদারী পরিচালনা করেন । হরিচরণ তেওয়ারীর ছিলো চার ছেলে । তারা হলেন যোগেন্দ্র নারায়ণ তেওয়ারী, দেবেন্দ্র নারায়ন তেওয়ারী, ব্রজেন্দ্র নারায়ণ তেওয়ারী এবং সুরেন্দ্র নায়রণ তেওয়ারী । হরিচরণ তেওয়ারীর মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে যোগেন্দ্র নারায়ণ তেওয়ারীর উপর জামিদারীর গুরু দায়িত্ব ন্যস্ত হয় এবং সব শেষে হরিচরণ তেওয়ারীর মেঝো সন্তান দেবেন্দ্র নারায়ণ তেওয়ারী ছিলেন এই বংশের শেষ জমিদার ।

দেবেন্দ্র নারায়ন তেওয়ারীর ছিলো দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তারা হলেন তমনাশে তেওয়ারী, দেব নারায়ণ তেওয়ারী এবং মেয়ে সুকেশী তেওয়ারী । দেবেন্দ্র নারায়ন তেওয়ারীর ছেলে তমনাশ তেওয়ারী ছিলো পরানখালীর সর্বপ্রথম গ্রাজুয়েট । দেশ ভাগের পরে তমনাশ তেওয়ারী তার চার ছেলে ও তিনি মেয়েকে নিয়ে ১৯৪৭ থেকে ১৯৫০ সালে ভারতে চলে যান । তমনাশ তেওয়ারী সন্তানেরা হলেন আম্বিকা প্রসাদ ত্রিবেদী, জগদীশ প্রসাদ ত্রিবেদী, গুরু প্রসাদ ত্রিবেদী, রাম প্রসাদ ত্রিবেদী, লতা ত্রিবেদী, বাসন্তী ত্রিবেদী এবং ভারতী ত্রিবেদী । ভারতে যাওয়ার পর তারা বংশীয় পদবী পরিবর্তন করে ত্রিবেদী হয়ে যায় ।

জগদীশ প্রসাদ ত্রিবেদীর এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে বলে জানা যায় । তারা হলেন অভিজিৎ ত্রিবেদী এবং কাকলী ত্রিবেদী । জগদীশ প্রসাদ ত্রিবেদী বর্তমানে আমেরিকায় ছেলে অভিজিৎ ত্রিবেদী এবং নাতি আসপান ত্রিবেদীর সাথে বসবাস করছেন ।

এবার আবার জমিদারী সেই ইতিহাসে ফিরে আসি । দেশ ভাগের সময় জমিদারদের ৭০০ বিঘা সম্পত্তির অধিকাংশই বিক্রি করে ভারতে চলে যান বলে জানা যায় । জমিদারীর সময়ের শেষ নির্দেশন হিসাবে বর্তমানে অবশিষ্ট রয়েছে ১২ বিঘা জমির উপর চুন সুড়কি দিয়ে শান বাঁধানো একটি পুকুর ও ঘাট । পুকুর ঘাটের ইট গুলো আজও যেন কত ইতিহাসকে জড়িয়ে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলেছে ।

এছাড়াও যোগেন্দ্র নারায়ণ তেওয়ারীর জমিদারীর সময়ে খননকৃত দুইটি কুয়া এখন বয়েছে । যার একটির পানি এখনও ব্যবহার করছে বর্তমান মালিকেরা । অপর কুয়াটি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ার কারণে দূর্ঘটনা এড়াতে তা বাঁশ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে । এছাড়াও ৩২ শতাংশ জমির উপরে রয়েছে আর একটি শান বাঁধানো পুকুর । পুকুরের শান বাঁধানো ঘাট আজ আর নেই । তবে পুকুর পাড়ে এবং পুকুরের ভিতরে সেই ঘাটের ইট আজও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যা এখনও দেখতে পাওয়া যায় । আর এই পুকুর ঘাটের পাড়েই ছিলো জমিদারবাড়ী । যার চিহৃ আজ আর নেই ।

আর জমিদারদের কাচারী বাড়ীতে এখন রীতিমত কলা চাষ করা হচ্ছে । প্রবীন এলাকাবাসী সুত্রে যতটুকু জানা যায়, দেশ ভাগের সময় জমিদার দেবেন্দ্র নারায়ন তেওয়ারী স্বপরিবারে দেশ ত্যাগ করে ভারত চলে যান । চলে যাওয়ার সময় তাদের অধিকাংশ সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়ে যান স্থানী বাসিন্দারে কাছে এবং স্বাধীনতা পর ১৯৭৩ সালে দেবেন্দ্রনাথ তেওয়ারীর ভাতিজা অধীর নারায়ন তেওয়ারী এসে বাকী সম্পত্তি এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে পুরনায় ভারত চলে যান । এর পর জমিদার যোগেন্দ্রনাথ তেওয়ারী বা তার পরিবারের কেউ কখনোই এদেশে আসেনি ।
তবে জগদীশ প্রসাদ ত্রিবেদী ছেলে অভিজিৎ ত্রিবেদীর ভাষ্যমতে দেশ ভাগের সময় তার পূর্ব পুরেুষের কোন জমি বিক্রি করে নাই । পরিত্যাক্ত অবস্থায় ফেলে তার পূর্ব পুরুয়েরা ভারতে চালে যায় ।

আমাদের এই ভিডিও তৈরি করতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আমেরিকায় বসবাসরত জগদীশ প্রসাদ ত্রিবেদী ছেলে অভিজিৎ ত্রিবেদী