Скачать или смотреть গুরু পূজো ও সমর্পন ভাব | সংঘের আধারভূত মান্যতা | বিষয় বিন্দু ||

গুরুপূজা এবং সমর্পণ ভাব

১. গুরু মানুষের জীবনের উন্নতিতে সবচেয়ে মহত্বপূর্ণ। গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু গুরুদেব মহেশ্বর, গুরুদেব পরমব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগ্রুরুবে নমঃ। যেকোনও উপকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হিন্দু সমাজের বৈশিষ্ট। গুরু পূর্ণিমার মহত্বকে এই দৃষ্টিতে বোঝা দরকার।
২. আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথি, হিন্দু সমাজের গুরু পূর্ণিমা বা ব্যাস পূর্ণিমা নামেই প্রসিদ্ধ। ভারতীয় সমাজে বৈদিক কাল থেকেই গুরু-শিষ্যের পরম্পরা চলে আসছে।
৩. আমাদের মধ্যে এই মান্যতা আছে যে গুরু ছাড়া জ্ঞান প্রাপ্তি সম্ভব নয়।
৪. জীবনের সঠিক রাস্তা গুরুর পথদর্শনেই প্রাপ্তি হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে- দেবতাদের গুরু বৃহস্পতি, ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের গুরু বৈশিষ্ট্য এবং বিশ্বমিত্র, ভগবান কৃষ্ণের গুরু সন্দীপনি, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের গুরু সমর্থ রামদাস, বন্দা বৈরাগী গুরু ছিলেন গুরু গোবিন্দ সিংহ, স্বামী বিবেকানন্দের গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংস, ঋষি দয়ানন্দের গুরু ছিলেন ঋষি বিরজানন্দ ইত্যাদি।
৫. গুরুজনের প্রতি পূজার মনোভাব এটা আমাদের প্রকৃত/ চরিত্র। যিনি আধ্যাত্মিক বিদ্যার উপদেশ দেন এবং ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাৎকার করার সেই গুরুকেই আমাদের দেশে সাক্ষাৎ পরম ব্রক্ষ্মা বলা হয়েছে।
৬. মহর্ষি দয়ানন্দ ও গুরুত্ব মহত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছেন যে গু অর্থাৎ অন্ধকার। রু অর্থাৎ যে মিটাতে পারে। গু তথা রু অর্থাৎ অন্ধকারকে যে মিটাতে পারে। মানে যে জ্ঞান বা প্রকাশ দিতে পারে।
৭. আমাদের পরিবারে প্রথম গুরু হিসেবে মা-কেই মানা হয়।
৮. ভারতীয় সংস্কৃতিতে শুধু ব্যক্তি নয় তত্ত্বকেও গুরুরূপে স্বীকার করার পরম্পরা চলে আসছে।
৯.গুরুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সমর্পণের প্রতীক হল- গুরু দক্ষিণা। এটা আমাদের প্রাচীন পদ্ধতি। তার অনেক উদাহরণ আছে- আরুণি, শিবাজী, স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী দয়ানন্দ ইত্যাদি।
১০. সংঘে ব্যক্তির স্থানে তথ্য নিষ্ঠার গুরুত্ব অধিক।
১১. সংঘ পবিত্র ভগবা ধ্বজকে গুরুর স্থানে স্বীকার করেছে। এটা রাষ্ট্রের প্রতীক। যাকে গুরু মানা হয়। তাকে নিত্য পূজা করা তথা তাহার গুণগুলিকে নিজের আচরণে আনা চাই।
১২.পরমেশ্বরের কৃপাতে আমার যা কিছু প্রাপ্ত হয়েছে তার সবকিছুই গুরুর চরণে সমর্পিত। পতেত্বষ কায়ো - এই কথাটা একটা সংকেত মাত্র। এটার বাস্তবিক অর্থ কেবল কায়া বা শরীর পর্যন্ত সীমিত নয়। এটার অর্থ আমার শরীর মন, বুদ্ধি, আত্মা তথা সেই সকল জিনিস যাহা আমার কাছে যে কোনও রূপে আছে, সেগুলি সবকিছু সমর্পন করা।
শ্রীগুরু দক্ষিণা
১. বৎসরে একবার স্বয়ংসেবক শ্রদ্ধাভাবে ধ্বজের সামনে উপস্থিত হয়ে ধ্বজের পূজা করে এবং গুরুর সামনে দক্ষিণা অর্পণ করে।
২.গুরু দক্ষিণা বার্ষিক শুল্ক, চাঁদা, সংগ্রহ, দান, সহযোগ রাশির মত নয়। অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাবে, পবিত্রভাবে নিজের দৈনন্দিন প্রয়োজন থেকে কিছু রাশি আলাদা করে, সেই সঞ্চিত রাশিকে গুরু রাষ্ট্রদেব অর্থাৎ ভগবা ভগবধ্বজের শ্রীচরণে বিনীতভাবে সমর্পণ করাই দক্ষিণা।

৩.যে ডান হাত দিয়ে অর্পণ করেছে, সেটা যেন বাম হাতও জানতে না পারে। অর্থাৎ এটার আলোচনা না করা এবং তার প্রতিফলের জন্যে বিন্দুমাত্র আশাও যেন না থাকে।
৪.গুরু দক্ষিণা ৩৬৫ দিনের সংগৃহীত সমর্পণ।
৫. প্রাচীন কল্পনায় ছিল যে আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ সমাজের জন্যে অর্পণ করা।
৬.গুরুদক্ষিণার রাশি সমর্পণের সাথে সাথে আমি দিয়েছি এই ভাবেরও সমর্পণ করতে হবে অর্থাৎ মনে যেন এই ভাবনা না আসে।
পরিনাম
১. স্বয়ংসেবকদের মধ্যে সমর্পণ ভাবের প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পায়।
২. স্বয়ংসেবকদের মধ্যে হীনতা তথা অহংকারের ভাব দূর হয়।
৩. দক্ষিণার সংস্কারের কারণে সকল স্বয়ংসেবকদের মধ্যে সমাজের প্রতি দায়িত্ব বোধ জাগ্রত হয়ে থাকে।
৪. সংঘ আত্মনির্ভর হয়।
৫. সংঘের উপর বাইরের অন্য কারো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
সমাপ্ত

#geettripurasundari#baudhiktripurasundari#বিষয়বিন্দু