মাংসপেশিতে টান পড়া বা শরীরের কোন অংশ মচকানো বেশ সাধারণ একটি সমস্যা। যাকে বিশেষজ্ঞের ভাষায় মাসল পুল, মাসল সোরনেস, স্ট্রেইন, স্প্রেইন, ক্র্যাম্প, স্প্যাজম ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে।
মাসল পুল কেন হয়, কাদের হয়:
মাংসপেশিতে অতিরিক্ত টান খেলে বা টিস্যু ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। এতে শরীরের ওই অংশটিতে ভীষণ ব্যথা হয়। ল্যাকটিক অ্যাসিড নিঃসরণের জন্য জ্বালাপোড়া করে। এ কারণে মাংসপেশি নাড়াচাড়া করা যায়না।
মাসল পুলের প্রধান কয়েকটি কারণ হল:
১. শরীরের যেকোনো একটি মাংসপেশি অনেকক্ষণ ধরে ব্যবহৃত হলে।
২. ব্যায়াম, খেলাধুলা বা যেকোনো শারীরিক কসরতের আগে ওয়ার্মআপ বা শরীর গরম না করলে।
৩. পেশী ক্লান্ত থাকা অবস্থায় আকস্মিক নড়াচড়া করলে।
৪. হঠাৎ অতিরিক্ত ভারী কিছু ওঠালে।
৫. পেশীর অতিরিক্ত ও অনুপযুক্ত ব্যবহার।
৬. মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা।
৭. অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস বিশেষ করে পানি কম খেলে এবং শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব দেখা দিলে মাংসপেশিতে টান পড়তে পারে।
**যারা অতিরিক্ত শারীরিক কসরত করে থাকেন যেমন অ্যাথলেটরা মাসল পুলের সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
**যারা দীর্ঘসময় ধরে কম্পিউটারের সামনে কিংবা চেয়ারে বসে কাজ করেন কিংবা লম্বা সময় যানবাহন চালান, তাদের কাঁধ, ঘাড়, পিঠের মাংসপেশিতে টান পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
কখন বুঝবেন মাসল পুল হয়েছে:
১. যদি পেশীতে অনেক ব্যথা হয়। পেশী অনেক দুর্বল হয়ে যায়।
২. আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটি যদি ফুলে ওঠে বা লালচে দাগ পড়ে যায়।
৩. যদি আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে স্বাভাবিক ওজন নিতে কষ্ট হয়।
৪. মাংসপেশি আপনা আপনি অনেক শক্ত হয়ে পড়লে।
মাসল পুল হলে কি করবেন:
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার তথ্য মতে, মাংসপেশিতে টান খাওয়ার প্রথম কয়েকদিন চারটি ধাপে এর চিকিৎসা করতে হবে। যাকে সংক্ষেপে রাইস থেরাপি বলা হয়। এর মাধ্যমে ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়।
রাইস থেরাপির ৪টি ধাপ হল: রেস্ট, আইস, কমপ্রেশন ও এলিভেট।
১. রেস্ট বা বিশ্রাম: সব ধরণের শারীরিক ব্যায়াম বা ক্রিয়াকলাপ বন্ধ রাখতে হবে। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে কখনও কোন ওজন নেয়া যাবেনা।
২. আইস বা বরফ - আঘাতের স্থানে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর ২০ মিনিটের জন্য বরফের ব্যাগ দিয়ে রাখুন।
৩. কমপ্রেশন বা সংকোচন - আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটির নাড়াচাড়া নিয়ন্ত্রণে একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়িয়ে নিতে হবে।
৪. এলিভেট বা উঁচু করা - অর্থাৎ আঘাতের স্থানটি যতটা সম্ভব বালিশের উপরে উঠিয়ে রাখতে হবে।
মাংসপেশির ফুলে ওঠা প্রতিরোধে কোন অবস্থাতেই আঘাত পাওয়ার প্রথম কয়েকদিন ওই স্থানে গরম সেক দেয়া বা গরম পানি দেয়া যাবে না।
এছাড়া আঘাতের স্থানে কোন অবস্থাতেই মালিশ করা যাবে না।
যখন আপনি ক্ষতস্থানটি স্বাভাবিকভাবে নাড়াচাড়া করতে পারবেন। খুব একটা বেশি ব্যথা নেই। তখন আস্তে আস্তে স্বাভাবিক কাজ করার চেষ্টা করুন। নাড়াচাড়া করার চেষ্টা করুন যাতে জয়েন্ট বা পেশী শক্ত না হয়ে যায়।
চিকিৎসা:
মাংস পেশিতে টান পড়লে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। বিশেষ করে, মাংসপেশিতে অতিরিক্ত ব্যথা হলে, ব্যথায় জ্বর উঠে গেলে, কয়েকদিন পরও সেই ব্যথা না কমলে, মাংসপেশির ফুলে ওঠা না কমলে বা বাড়লে, শ্বাস নিতে কষ্ট হলে, মাথা ঘুরতে থাকলে, শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে কাঁপতে থাকলে বিশেষজ্ঞের কাছে নিতে কোন অবস্থাতেই দেরী করা যাবে না।
মাসল পুল হওয়ার পর পেশির ওই অংশ যদি টান টান করতে গিয়ে ব্যথা পান, তাহলে সেই চেষ্টা আর করা যাবে না। এতে পরিস্থিতি হিতে বিপরীত হতে পারে বলে জানান মিসেস সুলতানা।
অনেক সময় মচকানোর এই প্রভাব সাত দিন থেকে শুরু করে ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। পরিস্থিতি গুরুতর হলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনও হতে পারে বলেও তিনি জানান।
প্রাথমিক অবস্থায় ক্ষতস্থানে তাৎক্ষণিক ব্যথা কমানোর জন্য এনেস্থেটিক ক্রিম, জেল বা স্প্রে ব্যবহার করা হয়।
পরিস্থিতি স্বাপেক্ষে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হতে পারে।
এরপর বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে মাসল পুলের কারণ ও মাত্রা জানার চেষ্টা করেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য অর্থাৎ সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রা ঠিক আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করা হয়।
সেখানে সমস্যা থাকলে রোগীকে বিশ্রামের পাশাপাশি ডাবের পানি, স্যালাইন, কিশমিশ এবং মিনারেলস জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এছাড়া আলট্রাসাউন্ড ইমেজিং এক ধরণের শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে সারা শরীরের পেশী, রগ, লিগামেন্ট, স্নায়ু এবং জয়েন্টগুলির ছবি ধারণ করে থাকে ।
এটি মূলত পেশিতে আচমকা টান খাওয়া, মচকানো টিস্যু ছিঁড়ে যাওয়া, স্নায়ুতে বাধা, বাত বা পেশী সংক্রান্ত অন্যান্য যেকোনো সমস্যা নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
অনেক সময় চিকিৎসকরা আক্রান্ত স্থান বিশেষভাবে ব্যান্ডেজ করে ক্রাচ নিয়ে চলার কথাও বলে থাকেন।
ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
মাসল পুল এড়াতে কি করবেন:
১. যেকোনো শারীরিক কসরতের আগে বা ভারী কিছু তোলার আগে অবশ্যই ওয়ার্মআপ করে মাংসপেশিগুলোকে সচল করে নিতে হবে।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
৩. দীর্ঘক্ষণ না বসে, ৪০ মিনিট বা এক ঘণ্টা পর পর কয়েক মিনিট কিছুক্ষণ পায়চারি করতে হবে।
৪. প্রচুর পানি পান করতে হবে।
Thanks for watching
Please like, comment, share & subscribe.
[ Dr. Mohammad Mahtab Uddin ]
B.P.T.(DU), P.G.D.(Sports Medicine), C.M.T.B.(India), P.G.T.(Japan)
Special Training in Manipulation (Vellore)
Arthritis, Pain, Paralysis & Rehabilitation Specialists (BSMMU)
[ Pain Cure And Physiotherapy Center ]
Contact us :01684-092074 ( Whatsapp available ) ; 01914499226
20/5, Shohid Colonel Rashid Square(2nd Floor), near Square Hospital
Bir-Uttom Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka-1205
Website: paincurebd.com; Facebook: fb.com/paincurebd
Email: [email protected]; [email protected]
Информация по комментариям в разработке