Скачать или смотреть Jiboner jonye bhalobasar jonye amader ei gan gaoa

জাতিসত্মার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এক মৌলিক অধিকার। দেশের সংবিধানে, আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত মানবাধিকারের অবস্থানগুলোতে এবিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া থাকলেও আমাদের এখানে সংখ্যালঘু জাতির উপর এক ঔপনিবেশিকরণ ও দমনপীড়ন চালানো ক্ষমতা ও শাসন জারি রয়েছে। ভারতে গোর্খা জাতি দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই সুরক্ষার অভাব, পরিচয়ের সংকট ও দার্জিলিং এর ঔপনিবেশিকরণের কারণে সামগ্রিক অভিব্যক্তি আলাদা রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবির আকারে প্রতিভাত হচ্ছে।

রাজ্য তার ক্ষমতার জোরে নিজেদের মেশিনারি ও বল প্রয়োগ করে এই গণতান্ত্রিক ও ন্যায্য সংগ্রামকে দমন দমন করার চেষ্টা করার পর থেকেই জনতার বিক্ষোভ ও আবেগ পৃথক রাজ্য বিষয়ে সরকারের নেতিবাচক অবস্থানের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।গণতান্ত্রিকভাবে মিছিল, ধর্না, বিক্ষোভ প্রদর্শন দ্বারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনরত আমজনতার ওপর গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করার মত বর্বর অত্যাচার শুরু করার পর এখন গোর্খাল্যান্ডের দাবি এখানকার রাজনৈতিক দলগুলোর ইস্তাহার থেকে বেরিয়ে জনতার হৃদয়ে স্থান নিয়েছে।

আমাদের পৃথক রাজ্যের সংগ্রামকে ন্যায় ও অধিকারের সংগ্রামও বলা উচিত। আর তাই এই আন্দোলন উগ্র-জাতীয়তাবাদ বা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদের লড়াই নয়। লড়াই বাঙালিদের বিরুদ্ধে নয়, সরকারের ক্ষমতার আস্ফালনের বিরুদ্ধে। অনেক গণতন্ত্রপ্রিয় বাঙালি ও অন্য ভাষাভাষী মানুষ আমাদের এই লড়াইকে নানাভাবে সমর্থন করছেন।

 রাজ্য সরকারের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও পৃথক রাজ্যের দাবির কথা বলার পাশাপাশি আমরা একথাও বলতে চাই যে এবারের আন্দোলনে এখানে যে রাজনৈতিক নেতারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁরা যেন জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে, কোনও মাঝামাঝি ব্যবস্থা মেনে না বসেন। আমাদের জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষা পৃথক রাজ্যই! যে নেতারা এই নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেরিয়েছেন,তারা যেন নাকের বদলে নরুন এনে হাজির না করে।

 গোর্খাল্যান্ডের স্বপ্ন আমজনতার হৃদয়ে রয়েছে। আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতি তো চাই-ই,তার সাথে দৈনন্দিন জীবনে শোষিত খেটেখাওয়া মানুষের দুঃখ-যন্ত্রণার অবসান হোক, যুবদের ক্রমসংস্থান, ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা, নারীদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনও গোর্খাল্যান্ডের স্বপ্নের সাথে জুড়ে আছে—এই লড়াইগুলোও তাই এপথেই লড়তে হবে।

ভারতীয় গোর্খাদের দেখা গোর্খাল্যান্ডের স্বপ্ন প্রান্তীকৃত এক জাতির উগ্র-জাতীয় চেতনার বিষয় নয়, বরং দেশের ক্ষমতায় বসা শাসকদের পরিকল্পিত রূপে করা প্রান্তীয়করণের বিরুদ্ধে ন্যায়ের লড়াই। এই দেশগঠনে সমান-সমান ভুমিকা রাখা, একটা নিপীড়িত জাতির সম্মানের সাথে বাঁচতে চাওয়ার জন্য এই লড়াই।

গণতান্ত্রিক গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনের সাথে সংহতি তে।
২২শে জুলাই, শনিবার, বিবেকানন্দ হল, ৩টে।