উক্ত আলোচনাটি ভালো করে পড়ুন। দুই হাতে মুসাফাহ করলেই জা&হা-ন্না/মে যাবে বানীতে (মুযজ্জাফর বিন মহসিন) (দুই হাতে নবী স. ও তার সাহাবী ইবনে মাঊদ র. মুসাফাহ করেছেন) হাদিস এসেছে: বুখারী=৬২৬৫। বুখারী সহ বহু হাদিসে এসেছে। .*. হুদাই না বুঝে মন্তব্য ও চিল্লাচিল্লি করে নিজের সম্মান নষ্ট করেন না কারণ শায়খ পূজা শিরিক। মুসাফাহা দুই হাতে করাই সুন্নত। এক হাতে নয়।এক হাতে মুসাফাহা হয় না, বরং ইংরেজদের মত হ্যান্ডশেক হয়। ইমাম বুখারী রহঃ স্বীয় সহীহ বুখারীর ২ নং খন্ডের ৯২৬ নং পৃষ্ঠায় হাদিস নং ৬২৬৫ “বাবুল মুসাফাহা”নামে পরিচ্ছেদ স্থাপন করেছেন। যাতে তিনি আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ থেকে তালীকান এ বর্ণনা এনেছেন যে, علمنى النبى صلى الله عليه وسلم التشهد وكفى بين كفيه، অর্থাৎ “হুজুর সাঃ আমাকে তাশাহুদ শিখালেন, এমতাবস্থায় যে, আমার হাত রাসূল সাঃ এর উভয় হাতের মাঝে ছিল”। ইমাম বুখারী রহঃ এর পর “বাবুল আখজ বিল ইয়াদাইন”তথা “উভয় হাত ধরা”নামে বাব স্থাপন করেছেন। আর তাতে হাম্মাদ বিন জায়েদ রহঃ এবং আব্দুল্লাহ বিন মুবারক রহঃ এর মুসাফাহার উল্লেখ করেছেন যে, তারা উভয় হাতে মুসাফাহা করেছেন। তারপর উভয় হাতের মুসাফাহার দলীল হিসেবে উপরোক্ত বর্ণনাটি আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ থেকে পূর্ণ সনদসহ এনেছেন যে, আমার হাত রাসূল সাঃ এর উভয় হাতের মাঝামাঝি ছিল। {সহীহ বুখারী-২/৯২৬, হাদীস নং-৫৯১০, ৬২৬৫ সহীহ মুসলিম-১/১৭৩, সুনানে নাসায়ী-১/১৭৫} বিজ্ঞ আলেমগণ ভালভাবেই জানেন যে, ইমাম বুখারী রহঃ এর এ বাবের দ্বারা উদ্দেশ্য এটাই যে, রাসূল সাঃ ও উভয় হাতেই মুসাফাহা করতেন। আর পরবর্তীতেও এ আমলই জারী ছিল। ইমাম বুখারী রহঃ তার তারীখের কিতাবে বলেন- حدثنى اصحابنا يحيى وغيره عن اسماعيل بن ابراهيم قال رأيت حماد بن زيد وجاء ابن المبارك بمكة فصافه بكلتا يديه، (حاشية —–بخارى অর্থাৎ ইসমাঈল বিন ইবরাহীম রহঃ বলেন-আমি হাম্মাদ বিন জায়েদ রহঃ কে দেখেছি যে, তার কাছে আব্দুল্লাহ বিন মুবারক রহঃ মক্কা মুকার্রমায় এসেছেন, তখন তিনি উভয় হাতে মুসাফাহা করেছেন। {হাশিয়ায়ে সহীহ বুখারী-২/৯২৬} এখানে স্মর্তব্য যে, এই উভয় ব্যক্তিত্ব স্বীয় জমানার মুহাদ্দিসীনদের ইমাম ছিলেন। ইমাম আব্দুর রহমান মাহদী রহঃ বলেন যে, ইমাম হল চার জন, যথা মালেক রহঃ, সুফিয়ান সাওরী রহঃ, হাম্মাদ বিন জায়েদ রহঃ ও ইবনুল মুবারক রহঃ। {তাযকীরাতুল হুফফাজ} অন্যান্য মুহাদ্দিসীনগণও উভয় হাতের মুসাফাহার কথা উল্লেখ করেছেন। হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ বলেন- রাসূল সাঃ এক মহিলাকে বললেন-قد بايعتك অর্থাৎ আমি তোমাকে বাইয়াত করালাম। হযরত আয়েশা রাঃ বলেন যে, তাকে শুধু কথার দ্বারা বাইয়াত করিয়েছেন, হাত ধরে বাইয়াত করাননি। আল্লামা কাশতাল্লানী রহঃ ইরশাদুস সারী শরহু সহীহ বুখারীতে এবং আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রহঃ উমদাতুল ক্বারী শরহু সহীহিল বুখারীতে আয়শা রাঃ এর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেন- اى لا باليد كما كان يبايع الرجال بالمصافحة باليدينঅর্থাৎ হাত দিয়ে বাইয়াত করাননি, যেমন পুরুষদের বাইয়াত করানোর সময় উভয় হাতে মুসাফাহা করতেন। এ বক্তব্যের সমর্থন হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃএর স্বপ্ন দ্বারাও হয়। তিনি বলেন (স্বপ্নে) রাসূল সাঃ মুচকি হেসে আমার দিকে তার উভয় হাত বাড়ালেন। আমি নিকটবর্তী হলাম, তখন রাসূল সাঃ আমার হাতকে স্বীয় উভয় হাত মুবারকের মাঝে ধরলেন এবং মুসাফাহা করলেন। {আদ দুরারুস সামীন} এছাড়া শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃ আল ক্বওলুল জামীল গ্রন্থে লিখেন যে, আমার পিতার সাথেও রাসূল সাঃ উভয় হাতে মুসাফাহা করেছেন। মুহাদ্দেসীনদের সাথে সাথে ফুক্বাহায়ে কেরাম যাদের অনুসরণ করার নির্দেশ কুরআন ও হাদীসে এসেছে, তারাও উভয় হাতে মুসাফাহা করাকে সুন্নাত বলেন। তাইতো মাজালিসুল আবরার নামক গ্রন্থে এসেছে যে, والسنة فيها ان تكون بكلتا اليدينতথা সুন্নাত হল দুই হাতে হওয়া। এমনিভাবে ফাতওয়ায়ে শামীতে এবং আশআতুল লামআত গ্রন্থে ও আছে। তাছাড়া হাদীসে এসেছে যে, যখন মুসলমানগণ মুসাফাহা করে তখন তার গোনাহ ঝরে যায়। {মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজী, ইবনে মাজাহ} একথাতো স্পষ্ট যে, মানুষ দুই হাতেই গোনাহ করে থাকে। তাই উভয় হাত থেকেই গোনাহ ঝরা উচিত। কিন্তু আমাদের আহলে হাদীস বন্ধুরা যেন এক হাতকে জাহান্নামের জন্য রিজার্ভ করে দিয়েছেন যে, এ হাত থেকে গোনাহ ঝরার দরকার নেই। একবার এক আশ্চর্য মজার ঘটনা ঘটল। আমি এক গায়রে মুকাল্লিদ বন্ধুকে বুখারী শরীফের দুই হাতে মুসাফাহা করার হাদীস দেখালাম। তখন তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন-“যদিও রাসূল সাঃ এর মুসাফাহার মাঝে দুই হাত ছিল, কিন্তু আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এরতো এক হাতই ছিল। আর আমিতো নবী নই যে, উভয় হাতে মুসাফাহা করবো, তাই আমি এখানে নবীর বদলে হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর অনুসরণ করি”। আমি বললাম-”যেমন আপনি নবী নয়, তেমন ইবনে মাসউদ রাঃ এর মত সাহাবীও নয় যে, এক হাতে মুসাফাহা করবেন। তাই আপনি এক আঙ্গুলির সাথে অন্য আঙ্গুলি মিলিয়ে মুসাফাহা করবেন, যাতে আপনার নবী হওয়ারও কোন সন্দেহ না থাকে, আবার সাহাবী হওয়ারও কোন সন্দেহ না থাকে”। আমি তাকে আরো বললাম- কোন হাদীসে হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাহঃ এর উভয় হাতে মুসাফাহা করেন নি, একথা আসেনি। আর তাছাড়া মন একথা মানতে পারে কি যে, রাসূল সাঃ উভয় হাত মুবারক বাড়িয়েছেন। আর ইবনে মাসউদ রাঃ কেবল এক হাত বাড়িয়েছেন? আসল কথা হল, যখন ব্যক্তি উভয় হাতে মুসাফাহা করে, তখন এক হাতের উভয় পাশে অন্যজনের উভয় হাত লেগে থাকে। হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এক হাতের এ সৌভাগ্য বর্ণনা করেছেন যে, আমার এ হাতের উভয় পাশে রাসূল সাঃ এর হাত মুবারক লেগে ছিল। নিজের অপর হাত লাগোয়া ছিল না একথা বলেন নি। এক হাতে মুসাফাহা করার সূচনা যখন দুই জন মুসলমান পরস্পর সাক্ষাৎ হয়, তখন সালাম দেয়, যা ছিল পরস্পর মোহাব্বত ভালবাসার নিদর্শন। সালামের পর মুসাফাহাও করে। আর মুসলমানদের মাঝে উভয় হাতে মুসাফাহা করার পদ্ধতি ছিল নিরবচ্ছিন্ন আমল পরম্পরায় স্বীকৃত।
Информация по комментариям в разработке