ভ্রূযুগলের মধ্যে জ্যোতির ধ্যানের ফল - JYOTIR DHYAN - RESULT - ETERNAL PEACE SEEKER - SSPF

Описание к видео ভ্রূযুগলের মধ্যে জ্যোতির ধ্যানের ফল - JYOTIR DHYAN - RESULT - ETERNAL PEACE SEEKER - SSPF

এই ভ্রূযুগলের মধ্যে আছে আজ্ঞাচক্র। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের চিত্ত চঞ্চল। চিত্তের এই চঞ্চলতা বিক্ষেপ জনিত । সত্যি কথা বলতে কি লয় ও বিক্ষেপ যোগ পথের অন্তরায়। যিনি যে ধরনের সাধনাই করুন না কেন, যদি আপনি দুর্বল মনের মানুষ না হন, তবে সাধনকালে আপনি আপনার ভ্রূযুগলের মধ্যে অথবা ভ্রুদ্বয়ের একটু উর্দ্ধে জ্যোতির চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু যদি দুর্বল মনের মানুষ হন তবে আপনার হৃদয়-কেন্দ্রে ধ্যান করাই শ্রেয়। যোগাচার্য্য বলছেন, এই জ্যোতি অবশ্য়ই শুদ্ধ হওয়া আবশ্যক। এইজন্য যোগীগণ প্রভাত সূর্য্যের অখন্ড রূপ চিন্তার বিষয়ভূত করে থাকেন। কেউ কেউ এই ভ্রূমধ্যে বিন্দুর চিন্তন করতে বলে থাকেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে সাধনার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বা আমাদের একাগ্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সত্যিকারের জ্যোতির প্রকাশ ঘটে থাকে এটা কিভাবে ঘটে থাকে। বলা হচ্ছে একাগ্রতার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জ্যোতির প্রকাশ আমরা দেখতে পাই। এটি চক্ষু মুদ্রিত অবস্থাতেই দেখতে পারি, আবার চক্ষু উন্মীলন করেও আমরা এই জ্যোতির দর্শন করতে পারি। দেখুন বস্তুর যত বিস্তার ঘটে তত আমাদের চক্ষু থেকে তা অগোচর হয়ে যায়। একবস্তা সর্ষে যদি ৫ বিঘা জমিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, তবে তা আমাদের চোখে পড়ে না। কিন্তু সেই সর্ষের দানা যখন বস্তার মধ্যে ছিলো, তখন তা আমাদের দৃষ্টির মধ্যে ছিলো। কিন্তু যখন তা ছড়িয়ে দেওয়া হলো, তখন তাকে দেখবার জন্য আমাদের আরো মনোযোগ দিতে হয়। তো বিস্তার যার যত বেশি, তার দর্শন পেতে গেলে, তত বেশি মনোযোগ দিতে হয়।

তো আমাদের চিত্তে একাগ্র অবস্থার উদয় না হলে জ্যোতির উদয় হতে পারে না। ছড়ানো সত্তাকে গুটিয়ে আনতে পারলে, জ্যোতির উদয় হয়। আর এই জ্যোতির উদয় হলে অব্যক্ত-অপ্রকাশিত সত্তা প্রকাশিত হয়। প্রথম প্রথম এই জ্যোতি দেখা দিয়ে মিলিয়ে যায়। কিন্তু যখন জ্যোতিটি স্থায়ীভাবে প্রকাশ পায় , তখন যে সত্য আমার কাছে অপ্রকাশিত ছিল, তা তখন প্রকাশিত হতে আরম্ভ করে। এই যে মনের একাগ্রতা যে ভূমিতে নিবিষ্ট হয়, তাকে বলা হয় চিত্ত নিরোধের পূর্বাবস্থা, বা একাগ্রভূমি । এর পরে আমাদের চিত্ত নিরোধভূমিতে প্রবেশ করে। এই যে জ্যোতির উদয় হয়, একেই বলে জ্ঞানজ্যোতি বা প্রজ্ঞা। এই জ্ঞানজ্যোতির উদ্দেশ্য বা পরিণতি হচ্ছে জ্ঞেয়কে প্রকাশ করা। আবার জ্ঞেয়বস্তু প্রকাশিত হলে আমাদের অজ্ঞানের উপশম হয়। আমাদের আকাঙ্খ্যার নিবৃত্তি হয়। অর্থাৎ অজ্ঞান ক্রিয়াহীন হয়ে যায়। এরপর নিরোধের অবস্থা আপনা আপনি ফুটে ওঠে। কিন্তু একাগ্রভূমি অতিক্রম না করতে পারলে নিরোধভূমিতে প্রবেশ করা যায় না। যাওয়াও উচিত নয়।
আসলে আধার বা শরীর যতক্ষন অষ্টাঙ্গ যোগের মাধ্যমে ধীরে ধীরে শুদ্ধ না হয়, ততক্ষন একাগ্রভূমিতেই অবস্থান নিরাপদ। কিন্তু এই অবস্থায়, চিত্তকে নিরোধের চেষ্টা করলে চিত্ত প্রকৃতিতে লিন হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে । এই প্রকৃতিলীন অবস্থার যোগ্য শরীর না হলে, শরীরপাত হয়ে যেতে পারে। শুদ্ধ জ্যোতির চিন্তা করতে করতে অর্থাৎ মনে মনে নিরন্তর এই দর্শন চিন্তা করতে করতে একসময় একাগ্রভূমিতে স্থিতি লাভ করা যায়। চিত্তের বিক্ষেপ হচ্ছে বিকল্পের খেলা। এই বিকল্প আবার দুই প্রকার শুদ্ধ ও অশুদ্ধ । সাধকযোগীর কাজ হচ্ছে অশুদ্ধ বিকল্পকে ছেড়ে শুদ্ধ বিকল্পতে স্থিতি লাভ করা। এই অবস্থাই একসময় শুদ্ধ বিকল্প থেকে নির্বিকল্প পরম পদে লীন হয়ে যায় । এখন কথা হচ্ছে বিকল্প আর নির্বিকল্প ব্যাপারটা কি ? বিকল্প কথাটার অর্থ হচ্ছে বিপরীত। এখানে বিপরীত চিন্তা বা বিপরীত কল্পনা। এই বিপরীত কল্পনার বা চিন্তার মধ্যেও থাকে কিছু শুদ্ধ বা সদর্থক চিন্তা আর কিছু নঞৰ্থক চিন্তা। সাধন জগতে এই নঞৰ্থক চিন্তা পরিহার করে চলতে হয়। পঞ্চজ্ঞান ইন্দ্রিয়ের অতীত এই পরিবর্ত কল্পনা। প্রথমে আমাদের অশুদ্ধ বিকল্প চিন্তাকে পরিহার করে শুদ্ধ বিকল্প চিন্তায় স্থিতি লাভ করতে হয়। পরে, শুদ্ধ বিকল্প থেকে নির্বিকল্প অর্থাৎ যার কোনো বিপরীত অবস্থান নেই, সেই নির্বিকল্প সত্যে চিত্তকে স্থির করতে হয়।
আমরা যে ধর্ম্ম কর্ম্ম করি, জ্ঞানের সাধনা করি, ভক্তি লাভের চেষ্টা করি, এগুলো সবই ওই শুদ্ধ বিকল্প অবস্থা প্রাপ্তির জন্য করে থাকি। মাত্রিকা বা মাত্রিক থেকে ভাষার উৎপত্তি। মাত্রিকা কথাটার অর্থ হচ্ছে তন্মাত্র বা অমিশ্র পঞ্চভূত। যা সমস্ত জগতের মূল উপকরণ। এই মাত্রিকা শক্তি থেকেই ভাষার উৎপত্তি। আবার আমাদের সকলপ্রকার চিন্তা প্রবাহ গতিশীল হয়, এই ভাষার মাধ্যমে। আবার এই মাত্রিকা হচ্ছে বর্ণের সমষ্টি। সমস্ত বর্ণই ভাষার অন্তর্গত। তো এই বর্ণ বা মাত্রিকা যতক্ষন না বিগলিত হয় ততক্ষন তার স্বভাব অনুযায়ী সে বিকল্প উৎপাদন করে থাকে। অর্থাৎ বিক্ষেপ বা বিকল্প উৎপাদন করে থাকে। এই মাত্রিকা অর্থাৎ অমিশ্র ভূতপঞ্চ ক্রিয়াশীল থাকে ততদিন আমাদের চিত্ত থাকে বিক্ষিপ্ত । আর বিক্ষিপ্ত চিত্ত কখনো একাগ্রভূমিতে প্রবেশ করতে পারে না। অর্থাৎ আমরা একাগ্র হতে পারি না। এইজন্য প্রাচীন যোগগুরুগন এই মাত্রিকাকে বিগলিত করে বিন্দুতে পরিণত করেন। মাত্রিকা গলে গেলে নির্বিকল্প অবস্থার উদয় হয়। আমরা যে বিভিন্ন চক্রের সাধনা করে থাকি, তার উদ্দেশ্য হচ্ছে এই মাত্রিকাকে বিন্দুতে পরিণত করে, একাগ্রভূমিতে প্রতিষ্ঠা করা। আর মাত্রিকা যখন বিন্দুতে পরিণত হয়, তখন সে উর্দ্ধগতি সম্পন্ন হয়। আর এই গলন ক্রিয়ায় সাহায্য করে থাকে নাদ। মাত্রিকা থেকে বিন্দুতে যেতে হলে, নাদের মধ্যে দিয়েই যেতে হয়। আবার এই মাত্রিকা বিগলিত হলেই নাদের উদয় হয়। নাদ হচ্ছে উর্দ্ধমুখী প্রবাহ, যা অন্তর্মুখী। সাধকের অনুভবে একটা জিনিস আসবে, সেটি হচ্ছে পৃথিবীর সর্বত্র মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কার্যকরী। অর্থাৎ নিম্নমুখী গতি কাজ করে। কিন্তু সুষুম্না নাড়ীতে সর্বদা উর্দ্ধমুখী আকর্ষণ অনুভব হয়। তাই বিন্দু উর্দ্ধগতিসম্পন্ন হয়ে আজ্ঞাচক্রে স্থিতি লাভ করে। এই হচ্ছে ভ্রূমধ্যে জ্যোতি চিন্তার পরিণতি। ETERNAL PEACE SEEKER - SASANKA SEKHAR PEACE FOUNDATION

Комментарии

Информация по комментариям в разработке