আগেই বলেছিলাম, নির্বাচন কমিশন খুল্লম খুল্লা রাজনীতি করছে, এক অসভ্যতামি চলছে সারা দেশ জুড়ে। গণতন্ত্রে দেশের নাগরিক ভোট দেবে নির্বাচিত করবে সরকার, সেই সরকার দেশের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ, রোজগার, মানুষের জীবনযাত্রার যা কিছু দরকারি, তার যোগান দেবে, অন্তত দেবার চেষ্টা করবে। মানুষ পাঁচ বছর পরে পরে ভোট দেবে, কী পেয়েছি আর কী পাইনি তার হিসেব করে। আপনি কর দিয়েছেন, দেশের নিয়ম মেনে চলছেন, নিজের যোগ্যতায় আয় করেছেন, ইচ্ছেমত ব্যয় করেছেন। এবার নির্বাচনের সময়ে কোন দলের কাজ আপনার পছন্দ, কোন দলের কাজ আপনার পছন্দ নয়, তার ভিত্তিতে আপনি ভোট দেবেন। এই তো মোদ্দা কথা। এবার আপনি তাকিয়ে দেখুন আপনি কিসের ভিত্তিতে ভোট দিচ্ছেন? যারা গত ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় তারা বলছে হিন্দু খতরে মে হ্যায়, তাই আমাদের ভোট দাও। ভোট তো দেবো নদের চাঁদ আমার, কিন্তু এই দশ বছরে তুমি হিন্দুদের খতরা, হিন্দুদের বিপদ কমাতে পারলে না কেন? কেন হিন্দু খতরে মে হ্যায়? ইস্যু কী না আমরা ৩৭০ ধারা তুলে নিয়েছি। আপনি এখন কাশ্মিরী বিয়ে করতে পারবেন, কাশ্মিরে জমি কিনতে পারবেন। বাহ বেশ, তো গত ৫ বছর ধরে কজন হিন্দু কজন কাশ্মিরীকে বিয়ে করেছে? কজন হিন্দু কাশ্মীরে কত জমি কিনেছে? কতজন হিন্দু কাশ্মিরী ব্রাহ্মণ নিজেদের ঘরে ফিরেছেন? উত্তর একজনও নয়। তাহলে? ৩৭০ ধারা তুলে কোন লাভটা হল আমাদের? আবার এই দুমুখো রাজনৈতিক দলের কারবার দেখুন, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলেছে, কিন্তু উত্তরপূর্বাঞ্চলে ৩৭১ ধারা তোলেনি, এই দ্বীচারিতার নায়ক পরধান সেভক নাগাল্যান্ডের আঞ্চলিক দলের সঙ্গে ডিল করে ফেঁসে গেছেন, আইজ্যাক মুইভা গোষ্ঠির সঙ্গে সেই ২০১৭ তে এই মোদিজী তাদের রাজ্যের আলাদা পতাকা, রাজ্যের আলাদা সংবিধান, রাজ্যের আলাদা অ্যান্থেম থাকবে এমন এক চুক্তিতে সই করেছেন। আপনি কিন্তু সেসব জানতেই পারছেন না। আপনি ভোট দিচ্ছেন তিন তালাক ইস্যুতে, ভোট দিচ্ছেন অপারেশন সিন্দুর ইস্যুতে, আপনি ভোট দিচ্ছেন ভারত এখন বিশ্বগুরু, এই ইস্যুতে, আপনি ভোট দিচ্ছে নাকি দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার ইস্যুতে। আর সেই নানান তিকড়মবাজি চালানোর পরেও আরও নতুন ইস্যু আনার জন্য, আপনার যাবতীয় অস্তিত্ব কে চ্যালেঞ্জ করে বলা হচ্ছে, আচ্ছা আপনি যে দেশের নাগরিক, তার প্রমাণ দিন। এক নির্লজ্জ সরকার যাদের ভোটে নির্বাচিত তাদের জিজ্ঞেষ করছে আপনি কী নাগরিক? আপনি কি বৈধ ভোটার? আর সেটা ঠিক করার জন্যই নাকি এই স্পেশ্যাল ইনটেনসিভ রিভিশন অফ ইলেকটোরাল রোল। এবং এমনও নয় যে এই রিভিশন এবারেই প্রথম হচ্ছে, এর আগে এই বাংলাতে ২০০২ সালেই হয়েছে। তো হোক না। সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা হল এবারের এই ভোটার তালিকা সংশোধনের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপি দল, সঙ্গে আর এস এস দেশের নাগরিকদের চিহ্নিত করার কথাও বলছেন। মানে ধরুন কোনও কারণে একজন ভোটারের সমস্ত কাগজ না পাওয়া গেলে সে এই দেশের নাগরিকই নয়, সেটাও ঘোষণা করা হবে। আচ্ছা যদি কেউ তার নাগরিকত্বের কাগজ না দেখাতে পারে তাহলে সে নাগরিক থাকবে না এতে সমস্যা টা কোথায়? সমস্যা নম্বর ১) নির্বাচন কমিশন দেশের নাগরিকত্ব নির্ধারণ করার জন্য তৈরি হয় নি। তারা বড়জোর কিছু কাগজ না পাওয়ার ভিত্তিতে একজনের নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিতে পারে, কিন্তু একজন দেশের নাগরিক বা নাগরিক নয়, তা নির্ধারণ করার এক্তিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই।
                         
                    
Информация по комментариям в разработке