নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা? গাজায় যুদ্ধ পরিকল্পনা কি বাস্তবায়িত হবে?
গাজা শান্তি চুক্তির প্রথম ধাপে কি আছে, সামনে যা ঘটতে পারে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত চুক্তি গাজায় যুদ্ধ অবসানের আশা জাগালেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনও অস্পষ্ট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপর যা ঘটবে তা আরও বেশি কঠিন হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইসরায়েল ও হামাস গাজায় ‘প্রথম ধাপের’ শান্তি পরিকল্পনায় একমত হয়েছে, যা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করার পথে এক বড় ধরনের পদক্ষেপ।
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করার পর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে।
যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। হজার হাজার মানুষ আহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গাজা প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।
চলমান এই যুদ্ধের দুইবছর দুইদিন পেরিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা নিয়ে এসেছে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা পরিকল্পনা, যার প্রথম ধাপে রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস।
ঘোষণায় কে কী বলেছে?
ট্রাম্প স্যোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, মিশরে তিন দিনের নিবিড় পরোক্ষো আলোচনার পর “ইসরায়েল এবং হামাস আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সই করেছে।”
গাজা যুদ্ধ অবসানে গত সপ্তাহে ট্রাম্প তার প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি চুক্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বুধবার রাতে এই ঘোষণা দেন।
ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেন, “এর মানে সব বন্দিকে খুব শিগগিরই মুক্তি দেওয়া হবে, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল তাদের সেনা নির্ধারিত সীমারেখায় প্রত্যাহার করে নেবে।
“এটি হবে এক শক্তিশালী, স্থায়ী ও চিরন্তন শান্তির প্রথম পদক্ষেপ। সব পক্ষের সঙ্গেই ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা হবে।” কাতার, মিশর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ওদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দিনটিকে ইসরায়েলের জন্য মহান দিন আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, তার সরকার চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার বৈঠক করবে এবং সব জিম্মিকে বাড়ি ফিলিয়ে আনবে। গাজায় এখনও ৪৮ জন জিম্মি আছে এবং এদের ২০ জন জীবীত আছে বলে ধারণা প্রকাশ করেন তিনি।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার নিশ্চিত করবে। মানবিক ত্রাণ প্রবেশ অনুমতি পাবে এবং বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।
চুক্তি নিয়ে পরোক্ষোভাবে আলোচনা হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস প্রতিনিধিদের মধ্যে। আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছেন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্প জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং মিশর কাতার ও তুরস্কের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চুক্তিতে এখনও কী কী অনিশ্চিত?
চুক্তি নিয়ে এখন পর্যন্ত যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তার সবই ট্রাম্পের গত সপ্তাহে প্রকাশিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার একটি অংশ মাত্র, যা মেনে নিয়েছে ইসরায়েল এবং হামাস আংশিক সম্মতি দিয়েছে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধ অবসানের আশা জাগালেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনও অস্পষ্ট রয়ে গেছে। চুক্তির প্রথম ধাপের ঘোষণায় হামাস এবং ইসরায়েল দুই পক্ষের মধ্যে সমাধান না হওয়া কিছু কন্টকাকীর্ণ বিষয় উঠে আসেনি।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এখনও কিছু গুরুতর মতপার্থক্য থাকা ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চূড়ান্ত হয়নি। এর মধ্যে আছে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি,যা ট্রাম্পের পরিকল্পনার একটি মূল বিষয়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত এখনও চুক্তিতে অস্পষ্ট। হামাস এর আগে অস্ত্র পরিহার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না পাওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ করা হবে না বলে জানিয়েছিল গোষ্ঠীটি।
যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার শাসনব্যবস্থাও চুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থায় হামাসের কোনও ভূমিকা থাকবে না।
গাজার শাসনভার ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) হাতে তুলে দেওয়ার আগে তা সাময়িকভাবে টেকনোক্র্যাট এবং অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির হাতে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও গাজার শাসনক্ষমতা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে রাখার বিষয়ে আপত্তি তুলেছিলেন।
ওদিকে, নেতানিয়াহুর ক্ষমতাসীন কোয়ালিশন সরকারের কট্টর ডানপন্থিরা, যাদের অনেকেই গাজায় ইহুদি বসতি গড়ার পক্ষে, তারাও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে গাজার শাসনভার অর্পনের বিরুদ্ধে মত দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে হামাস বলছে, তারা গাজার শাসনক্ষমতায় কিছু ভূমিকা রাখার ব্যাপারে এখনও আশাবাদী।
চুক্তিতে এ বিষয়গুলো নিয়ে অস্পষ্টতা থাকলেও বলা যায়, প্রথম ধাপের প্রাথমিক অংশটি কার্যকর হতে চলেছে। এর আওতায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তি দুই পক্ষই বন্দি-বিনিময়ের বিষয়ে কিছু মৌলিক কাঠামোতে একমত হয়েছে।
যদিও ফিলিস্তিনের এক কর্মকর্তা বিবিসি-কে জানিয়েছেন, বুধবার রাত পর্যন্ত হামাস ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের যাদেরকে মুক্তি দেওয়া হবে তাদের চূড়ান্ত তালিকা এখনও হাতে পয়নি।
ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক হওয়া ১,৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেওয়া হবে।
এখন কী ঘটবে?
ইসরায়েল সরকার বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই চুক্তি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবে এবং ভোট অনুষ্ঠান করবে।
ভোটে ইসরায়েলের মন্ত্রীরা চুক্তি অনুমোদন করলে
মানবাধিকার সংবাদ,গাজার খবর,ফিলিস্তিন সংবাদ,গাজার বর্তমান অবস্থা,গাজার পথে মানবতার যাত্রা,গাজার জন্য সমুদ্রযাত্রা,গাজায় জাহাজ,গাজায় যুদ্ধবিরতি,গাজা,গাজা প্রতিবাদ,গাজা যুদ্ধ,গাজা যুদ্ধ ২০২৫,গাজা যুদ্ধবিরতি,গাজা সমুদ্র ত্রান,ফিলিস্তিন নিউজ,ফিলিস্তিনের খবর,ফিলিস্তিনের বর্তমান অবস্থা,ফিলিস্তিন,ফিলিস্তিন খবর,নিউজ,ফিলিস্তিন জাতিসংঘ,স্বাধীন ফিলিস্তিন,ফিলিস্তিন ইসরায়েল,ফিলিস্তিন ইসরায়েল খবর,ফিলিস্তিন কি তবে স্বাধীন,ফিলিস্তিন ইসরায়েল সংঘাত
Информация по комментариям в разработке