শ্বাপদ ভবন - ভয়ংকর ভূতের গল্প । Bengali Moral Stories

Описание к видео শ্বাপদ ভবন - ভয়ংকর ভূতের গল্প । Bengali Moral Stories

শ্বাপদ ভবন - ভয়ংকর ভূতের গল্প

রাতের অন্ধকারে নিঃশব্দ বন জঙ্গলের মাঝে ছিল এক ছোট্ট গ্রাম, নাম "আতঙ্কপুর"। গ্রামটি একসময় ছিল প্রাণবন্ত, হাসিখুশি মানুষের বাসস্থান। কিন্তু এক ভয়াবহ ঘটনা গ্রামের মানুষদের জীবনকে বদলে দেয়।

একসময় গ্রামের পাশে ছিল এক ভয়ংকর পুরাতন বাড়ি, যাকে সবাই "শ্বাপদ ভবন" বলে ডাকত। বহু বছর আগে ওই বাড়িতে এক ধনী জমিদার পরিবার থাকত। জমিদার ছিলেন অত্যন্ত নিষ্ঠুর। গ্রামের গরিব মানুষের উপর তিনি অকথ্য অত্যাচার করতেন। কোনো ভুল করলেই কড়া শাস্তি দিতেন। একদিন এক গরিব কৃষক তার ধানের জমি নিয়ে জমিদারের সাথে বিরোধে জড়ায়। রাগান্বিত জমিদার সেই কৃষককে অমানুষিক নির্যাতন করে মেরে ফেলে এবং তার পরিবারকেও শাস্তি দেয়। ওই কৃষকের মৃত্যুর পর থেকেই শ্বাপদ ভবনের আশেপাশে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করে।

রাতের বেলা যখন গ্রামবাসীরা ঘুমাতে যেত, তারা শুনতে পেত দূর থেকে ভেসে আসা এক মর্মান্তিক কান্নার আওয়াজ। বাড়ির আশেপাশে যাদের যাওয়া হত, তারা নাকি সেখানে অদ্ভুত ছায়া দেখতে পেত। কখনো দরজা আপনা-আপনি খোলামেলা হয়ে যেত, আবার কখনো বাড়ির জানালায় দেখা যেত লাল জ্বলজ্বলে চোখের ছায়া।

গ্রামের একজন প্রবীণ ব্যক্তি, নাম ছিল হরিদাস। তিনি বহুদিন ধরে শুনে আসছিলেন এই ভূতের গল্পগুলো, কিন্তু কখনো সেগুলোকে বিশ্বাস করতেন না। এক রাতে তিনি নিজে যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেন। রাত গভীর হলে, মশাল হাতে নিয়ে তিনি শ্বাপদ ভবনের দিকে রওনা হন। গ্রামে সবাই তাঁকে সাবধান করে দিয়েছিল, কিন্তু হরিদাস কারও কথা কানে নেননি। তার মনে হয়েছিল, এসব কেবল মানুষকে ভয় দেখানোর গল্প।

শ্বাপদ ভবনের দরজায় পৌঁছে হরিদাস মশাল জ্বালিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলেন। ভেতরে ঢুকতেই তিনি অনুভব করলেন, চারপাশের বাতাস একদম ভারী হয়ে গেছে। কোনো অজানা ঠাণ্ডা অনুভূতি তার শরীরে চিমটি কেটে বসল। ঘরের এক কোনায় দেখতে পেলেন পুরনো কাঠের চেয়ার, যেখানে জমিদারের ছায়া বসে রয়েছে। হরিদাস সেই ছায়াটির দিকে তাকাতেই তার শরীর অবশ হয়ে গেল। জমিদারের সেই ছায়াটি হঠাৎ দাঁড়িয়ে হরিদাসের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। তার লাল চোখগুলো আগুনের মতো জ্বলছিল, আর মুখ থেকে বের হচ্ছিল একটানা চাপা গর্জন।

হরিদাস পেছনে ফিরে দৌড়াতে চেয়েও পারেননি। তার পা যেন মাটিতে আটকে গেছে। জমিদারের ছায়া আরও কাছে আসতে লাগল, আর সঙ্গে সঙ্গে ঘরটাও যেন ছোট হতে শুরু করল। ঠিক তখনই হরিদাসের চোখের সামনে ভেসে উঠল সেই নির্যাতিত কৃষকের মুখ। সে বলল, "তুমি যদি বাঁচতে চাও, এখান থেকে পালাও!"

কোনোভাবে হরিদাস তার শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেলেন এবং ছুটে পালালেন। বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি কাঁপতে কাঁপতে গ্রামবাসীদের সব কথা জানালেন। এরপর থেকে আর কেউই শ্বাপদ ভবনের দিকে যাওয়ার সাহস করেনি।

দিনের বেলায় শ্বাপদ ভবনকে দেখতে যেমন সাধারণ মনে হত, রাতের বেলায় তা এক ভয়ংকর আতঙ্কের জায়গায় পরিণত হতো। গ্রামের মানুষজন বিশ্বাস করত, জমিদারের অত্যাচারের শিকার হওয়া কৃষকের আত্মা সেখানে বন্দী রয়েছে, এবং সে প্রতিশোধ নিতে ফিরে এসেছে।

এখনও রাত গভীরে গ্রামবাসীরা কখনো কখনো সেই শ্বাপদ ভবন থেকে ভেসে আসা কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। তাই গ্রামের সবাই রাত নামলে ঘর থেকে বেরোতে ভয় পায়, কারণ তারা জানে, অদেখা কোনো ভয়ংকর ছায়া তাদের পেছনেই ঘুরে বেড়াচ্ছে...

Комментарии

Информация по комментариям в разработке