চন্দ্রাহত হয়ে আছি। কারণটা কেবল এই নয় যে, এই মুহূর্তে চন্দ্রযান-২ ভারতের জন্য মহার্ঘ গরিমাজ্যোৎস্না আর চান্দ্রতথ্য আনার লক্ষ্যে অন্ধকার সাঁতরে পাড়ি জমাচ্ছে তিন লক্ষ চুরাশি হাজার কিলোমিটার দূর গন্তব্যে, অথচ দিনান্তে আমরা ভারতবাসীরা অন্তত এক বার জাহির করছি যে, গরুর নিঃশ্বাসে ঠাসা আছে অক্সিজেন, কিংবা এমনই কিছু গুহ্য সত্য! চন্দ্রাহত আমরা বরাবরই। আক্ষরিক। পৃথিবী সৃষ্টির গোড়া থেকেই।
সবে যখন আদি-পৃথিবী জমাট ধুলো-পাথর থেকে মোটামুটি একটা গোলগাল, যদিও উত্তপ্ত ও গলিত, শরীর পেয়েছে আজ থেকে প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছর আগে, অমনি তার গালে এসে পড়েছিল এক চড়, প্রায় মঙ্গলগ্রহ মাপের আর-এক পিণ্ডের আকারে। সংঘর্ষের অভিঘাতে গায়ে-পড়া সেই উপদ্রব আর পৃথিবীর শরীরের মালমশলা মিশে তার একটা অংশ ঠিকরে উঠল শূন্যে। পরের দশ কোটি বছরে পৃথিবী যখন সেই মার হজম করছে, তখন ঠিকরে ওঠা পদার্থগুলো জমে তৈরি করল আর-এক পিণ্ড। পৃথিবীর সঙ্গে থাকার, পৃথিবীকে সামলে রাখার অঙ্গীকার নিয়ে জন্ম নিল চাঁদ। এই হল চাঁদের জন্মবৃত্তান্তের আপাতত চালু মত। দ্বিতীয় আর একটি মতও অল্প কিছু দিন আগে সাড়া ফেলেছে। এই মতে, চাঁদের শরীর গড়ার মালমশলাগুলো এই সংঘর্ষের পর প্রথমে প্রচণ্ড বেগে ঘুরতে থাকা পৃথিবীকে ঘিরে একটা বলয়ের মতো রূপ পেয়েছিল। তার পর সেগুলো দলা পাকিয়ে যায়। তাতে অবশ্য পৃথিবীর চড় হজম করার কথাটা নাকচ হয়ে যায় না।
চাঁদ আর পৃথিবীকে জুড়ে রেখেছে তাদের সংঘাতময় ইতিহাস, এবং পারস্পরিক মাধ্যাকর্ষণ। আশ্চর্য, এ এমন এক ‘আকর্ষণ’, যা পরস্পরকে দূরে সরিয়ে দেয়। চাঁদ পৃথিবী থেকে পালাচ্ছে। বছরে ৩.৮ সেন্টিমিটার।
কেন? কী অজুহাতে?
Advertisement
নিয়মের দোহাই একটা আছে বটে। তা হল চাঁদ আর পৃথিবীর জোড়া অস্তিত্বের ভরবেগ সংরক্ষণ। যে-বস্তু যত বেশি ওজনদার আর যা যত বেশি জোরে ছুটছে, কিংবা ঘুরছে, তার ভরবেগের পাল্লা তত বেশি। তাতে কোনও পরিবর্তন ঢুকতে না দেওয়া হল বিশ্বের অপরিবর্তনীয় কয়েকটা নিয়মের মধ্যে একটা নিয়ম। ঘটনাটা হল, পৃথিবীর আবর্তনের বেগ— আহ্নিক গতি, যার ফলে দিন যায় রাত আসে, সেটা ক্রমশ কমছে। ফলে ভরবেগের হিসেব অপরিবর্তিত রাখার জন্য গ্রহগতিবিদ্যার নিয়ম মেনে চাঁদ যাচ্ছে দূরে সরে।
পৃথিবীর আবর্তনের বেগ কেন কমছে? কমছে কারণ স্বয়ং চাঁদ তার আকর্ষণের জোরে পৃথিবীর আবর্তনে বাধা দিচ্ছে। ব্যাপারটা ঘটছে জোয়ারের মধ্যস্থতায়। চাঁদের আকর্ষণে ফুলে ওঠে সমুদ্রের জল, কিন্তু পৃথিবীর বেগের কারণে সেই জোয়ারের চূড়া ছোটে চাঁদের থেকে এক কদম আগে। ফলে চাঁদ যেমন পিছন থেকে পৃথিবীর আঁচলে দেয় টান, পৃথিবী কিছুটা শক্তি হারায়, তেমনই উল্টো দিকে জোয়ারের জল চাঁদকে যেন টেনে নিয়ে চলে গুণ টানার মতো, তাতে শক্তি সঞ্চারিত করে। পৃথিবী যা হারায়, চাঁদ তা পায়। সূর্যের টানেও জোয়ার আসে। কিন্তু পৃথিবীকে শ্লথ করে তোলায় তার প্রভাব এতটা নয়। আজ থেকে চল্লিশ লক্ষ বছর বাদে দিনের দৈর্ঘ্য যা দাঁড়াবে তাতে আমাদের আর হিসেব মেলানোর জন্য প্রতি চার বছরে একটা বাড়তি দিন গুঁজতে হবে না, ঊনত্রিশে ফেব্রুয়ারি ইতিহাস হয়ে যাবে। চাঁদ না থাকলে আমাদের ক্যালেন্ডারগুলো তছনছ হওয়া থেকে বেঁচে যেত।
অতিশয়োক্তি! নির্ঘাৎ, কেননা প্রতি এক লক্ষ বছরে দিনের দৈর্ঘ্য বেড়েছে গড়ে মাত্র ১৭ সেকেন্ড হারে, যদিও চাঁদের জন্মের পর থেকে ধরলে সেটা কম নয়।
কিন্তু চাঁদ যদি না-ই থাকত! কেমন হত চাঁদ বিনা ক্যালেন্ডার? প্রথমত, মাসগুলোই থাকত না, কারণ চাঁদের পৃথিবী পরিক্রমণের ছন্দে গাঁথা হয়েই মাসের হিসেবের জন্ম। তা হলে বছর কি ভাগ হত কেবল দিনের ছন্দে? আজকের চব্বিশ ঘণ্টার দিন তো চাঁদেরই দান! চাঁদ যে দিন পৃথিবীর বাহুলগ্ন হয়েছে, সে দিন পৃথিবী পাক খেত মাত্র ছয় ঘণ্টায়, সম্ভবত আরও কম, চার ঘণ্টায়, না, হতে পারে এমনকী আড়াই ঘণ্টাও (এক-এক বিজ্ঞানী দল সংঘাতকালীন পৃথিবীর, আর গায়ে-পড়া পিণ্ডের এক-এক রকম অবস্থা কল্পনা করেছেন)। অবিশ্বাস্য বেগ! আর সেটাই তবে বজায় থাকত আগাগোড়া। আড়াই ঘণ্টায় দিন! খাব কখন, আর ঘুমোব কখন?
সে সব কথা পরে। জীবনের কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্যই হয়তো বদলে যেত তখন। পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাব ঘটলেও ‘উচ্চতর’ প্রাণের জন্ম দেওয়ার মতো সুস্থির পরিবেশ থাকত কি না সন্দেহ। আজ আমরা মোটামুটি এক সুস্থির পৃথিবীতে বাস করছি। মেরু দুটো বরফে ঢাকা, নিরক্ষীয় অঞ্চল উষ্ণ, মোটামুটি ঘড়ি-ধরে ঋতুর আসা-যাওয়া— মাঝে মাঝে কয়েকটা তুষারযুগের সঞ্চরণ ছাড়া এগুলো বরাবর এমনই রয়ে গেছে। এই স্থায়িত্ব পৃথিবীতে প্রাণের বৈচিত্র এনেছে, আজকের মানবসভ্যতাও নিঃসন্দেহে এই সুস্থিতির দান। আর সেটা বজায় আছে পৃথিবীর অক্ষরেখাটা মাতলামো করছে না বলে। পৃথিবী যে-অক্ষরেখা বরাবর নিজের চারপাশে পাক খায়, তা যে-পথে সে সূর্যের চারপাশে ঘুরছে, তার সঙ্গে একটা নির্দিষ্ট কোণে হেলে আছে। আপাতত তা ২৩.৫ ডিগ্রি, ৪১,০০০ বছরে মাত্র দু’-এক ডিগ্রির বেশি হেরফের এতে হয় না। হয় না কারণ, তার হাত ধরে আছে চাঁদ বা বলা ভাল চাঁদের মতো অস্বাভাবিক ভারী এক উপগ্রহ। ওই যে অক্ষরেখায় মাত্র দু’-এক ডিগ্রির টাল, কেবল তাতেই পৃথিবীতে খেলে যায় তুষারযুগ, প্রাণের প্রবাহ হোঁচট খায়। চাঁদ না থাকলে পৃথিবীর অক্ষরেখা কখনও এমনকি ৪৫ ডিগ্রি অবধি হেলে যেতে পারত,
Music credit Martian cowboyby Kevin MacLeod is licensed under a creative Commons attribution
http://creativecommons.org/licenses
Source-http://incompetech.com/music/royalty...
Artist-http://incompetech.com//
video app -#mixkit
link-www.mixkit.com/videos/earth/moon
#চাঁদ_ছাড়া_পৃথিবী_কেমন_হবে
#চাঁদ_ছাড়া_মানুষ_বাঁচবে?
#moon
#one_day_without_moon
#earth
#nasa
#rj
#1milion
#1k
#best_video
#freefire
#raistar
#gyangaming
#b2k
❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️
Информация по комментариям в разработке