Скачать или смотреть সিজদা করছে রহস্যময় তেঁতুল গাছ। মনস্কামনা পূর্ণ করতে হাজার হাজার মানুষ আসে প্রতিদিন।

হাজার বছর ধরে সিজদায় অবনত হয়ে আছে একটি তেঁতুল গাছ। রহস্যময় এই গাছের কাছে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের বাসনা নিয়ে। ধারণা করা হয় এই গাছের আসেপাশেই চির নিদ্রায় শায়িত আছেন জগৎ বরেণ্য ওলি হযরত শাহ হাবিবুল্লাহ ইয়েমেনি র.। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের বাদলবাড়ি গায়েবি মাজার ও রহস্যময় তেঁতুল গাছ নিয়ে আজকের এ আয়োজন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরানের সুরা আল হাজ্জের ১৮ নাম্বার আয়াতে এরশাদ করেছেন, "তুমি কি দেখনি আল্লাহর সম্মুখে সিজদা করে, যা-কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে, যা-কিছু আছে পৃথিবীতে ও সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পাহাড়, বৃক্ষ, জীবজন্তু ও বহু মানুষ? আবার এমনও অনেক আছে, যাদের প্রতি শাস্তি অবধারিত হয়ে আছে। আল্লাহ যাকে লাঞ্ছিত করেন তার কোন সম্মানদাতা নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ করেন যা তিনি চান। (সুরা আল হাজ্জ ১৮)

 
কোরআনের এ আয়াত থেকেই বোঝা যায়, সিজদা শুধু মানুষের জন্য নয়, বরং সমগ্র সৃষ্টি তার প্রতি সিজদা করে। তেমনি একটি রহস্যময় তেতুল গাছ হাজার বছর ধরে যেন সিজদায় অবনত হয়ে আছে গভীর ধ্যানে। আর এই রহস্যময় তেঁতুল গাছকে নিয়েই শত শত বছর ধরে ছড়িয়ে আছে হাজার হাজার কিংবদন্তি। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের বাদলবাড়ি গায়েবি মাজারে হাজার বছর ধরে সিজদায় অবনত হয়ে আছে একটি তেঁতুল গাছ। ধারণা করা হয় এই গাছের আসেপাশেই শায়িত আছেন জগৎ বরেণ্য ওলি হযরত শাহ হাবিবুল্লাহ ইয়েমেনি র.। জগৎ বরেণ্য ওলি হযরত শাহ হাবিবুল্লাহ র. এর মাজার এবং রহস্যময় এই গাছের কাছে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মানুষ আসে তাদের মনোবাসনা পূরনের আশায়। কথিত আছে এই গাছের গোড়ায় মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে সৃষ্টকর্তার কাছে হৃদয়ের গভীর থেকে কিছু চাইলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এজন্যই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তাদের সমস্যা ও সংকট থেকে মুক্তি পেতে ছুটে আসেন দেশবিদেশ থেকে।

বিভিন্ন তথ্য সূত্রে পাওয়া যায়, ১২৯২-৯৬ সালের মধ্যে কোন এক সময় শাহ সুফি হযরত মখদুম শাহ দৌলা শহীদ ইয়েমেনি র. এই অঞ্চলে নদী পথে ইসলাম প্রচারের জন্য আসেন। এসময় তার সাথে ওস্তাদ শামসুদ্দিন তাবরেজি র., হযরত শাহ হাবিবুল্লাহ র. সহ অনেকেই জাহাজ যোগে ধর্ম প্রচারের জন্য আসেন। লোকমুখে প্রচলিত আছে, হযরত হাবিবুল্লাহ র ছিলেন প্রচন্ড রাগী প্রকৃতির মানুষ। একদিন তিনি একটি গাছের তলায় বসে ধ্যান করার সময় একটি পাখি তার গায়ে মলত্যাগ করে দেয়। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে সেই পাখির দিকে তাকাতেই পাখি মরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার এই অতিরিক্ত রাগের কারনেই তাকে নদীর পূর্ব পাড়ে নির্জন জঙ্গলে বাদলবাড়িতে পাঠানো হয় যেন তিনি নিরালায় ধ্যান করতে পারেন। ধারনা করা হয় ঐখানে ঐ তেঁতুল গাছের গোড়ায় বসে তিনি ধ্যান করতেন এবং ওখানেই তার জীবনাবসান হলে ওখানেই সমাধিস্থ করা হয়। আর সে সময় থেকেই এই তেঁতুল গাছটি সেজদারত আছে। প্রায় হাজার বছরের পুরানো এই তেঁতুল গাছটি আজও মানুষের কাছে অপার রহস্য হয়ে আছে। এই গাছটিকে ঘিরে এখনো প্রচলিত আছে শতশত কিংবদন্তি।