Скачать или смотреть কাকের কর্মফল || নারীর কর্মফল || ভিক্ষুরা গুহায় আটকে থাকা কর্মফল কাহিনী

কাকের কর্মফল || নারীর কর্মফল || ভিক্ষুরা গুহায় আটকে থাকা কর্মফল কাহিনী ‎⁨@BuddhoHoda24⁩ 

শাস্তা জেতবনে অবস্থানকালে বহুসংখ্যক ভিক্ষু শাস্তাকে দর্শন করিতে আসিবার সময় এক গ্রামে পিণ্ডপাতের জন্য প্রবেশ করিয়াছিলেন। গ্রামবাসীরা তাঁহাদের পাত্র গ্রহণ করিয়া আসনশালায় বসাইয়া যাগু খাদ্যাদি দিয়া পিণ্ডপাতবেলা না আসা পর্যন্ত বসিয়া ধর্মশ্রবণ করিতেছিলেন। সেই মুহূর্তে ভাত পক্ব করিয়া সূপ-ব্যঞ্জনাদিকে তৈল-মশলাদি দ্বারা সাঁতলানর সময় এক মহিলাকে ভাজন হইতে অগ্নিজ্বালা উঠিয়া ঘরের ছাদে আগুন ধরিয়া গেল। তাহা হইতে একগুচ্ছ অগ্নিদগ্ধাবস্থায় আকাশে উঠিল। তখন আঅন্য আর একদল ভিক্ষু শাস্তাকে দর্শন করিবার জন্য নৌকায় আরোহণ করিয়া যাইবার সময় তাঁহাদের নৌকা সমুদ্রে অচল হইয়া গেল। যাত্রীরা ‘নিশ্চয়ই নৌকায় কোন কালকর্ণি আছে’ বলিয়া শলাকা চালনা করিল। নাবিকের অল্পবয়স্কা এক সুন্দরী স্ত্রী ছিল নৌকাতে। শলাকা যাইয়া তাহাকে স্পর্শ করিল। ‘শলাকা পুনরায় চালনা করুন’ বলিয়া পরপর তিনবার চালনা করা হইল এবং তিনবারই সেই নারীকে স্পর্শ করিল। যাত্রীগণ ‘কি মহাশয়! বলিয়া নাবিকের মুখের দিকে তাকাইয়া কাশপথে গমনরত একটি কাক সেই জ্বলন্ত খড়ের গুচ্ছে গলা আটকাইয়া দগ্ধাবস্থায় গ্রামের মাঝখানে পতিত হইল। ভিক্ষুগণ তাহা দেখিয়া―‘অহো, কি ভয়ঙ্কর! বন্ধুগণ, দেখুন কাকটির কী দূরবস্থা হইয়াছে। এই কাক পূর্বজন্মে কী করিয়াছে শাস্তা ব্যতীত কে-ই বা বলিতে পারেন। চলুন যাই, শাস্তাকে ইহার পূর্বজন্ম বৃত্তান্ত জিজ্ঞাসা করিব’ বলিয়া প্রস্থান করিলেন।
অন্য আর একদল ভিক্ষু শাস্তাকে দর্শন করিবার জন্য নৌকায় আরোহণ করিয়া যাইবার সময় তাঁহাদের নৌকা সমুদ্রে অচল হইয়া গেল। যাত্রীরা ‘নিশ্চয়ই নৌকায় কোন কালকর্ণি আছে’ বলিয়া শলাকা চালনা করিল। নাবিকের অল্পবয়স্কা এক সুন্দরী স্ত্রী ছিল নৌকাতে। শলাকা যাইয়া তাহাকে স্পর্শ করিল। ‘শলাকা পুনরায় চালনা করুন’ বলিয়া পরপর তিনবার চালনা করা হইল এবং তিনবারই সেই নারীকে স্পর্শ করিল। যাত্রীগণ ‘কি মহাশয়! বলিয়া নাবিকের মুখের দিকে তাকাইয়া রহিল। নাবিক বলিল, ‘একজনের জন্য এতগুলি লোকের প্রাণ যাইবে তাহা হইতে পারে না, ইহাকে জলে ফেলিয়া দাও।’ তাহাকে ধরিয়া জলে ফেলিয়া দিবার সময় সে মরণভয়ভীত হইয়া উচ্চস্বরে কাঁদিতে উঠিল। ইহা শুনিয়া নাবিক বলিল, ‘ইহার আভরণগুলি নষ্ট হইবে কেন, সেগুলি খুলিয়া লইয়া সামান্য বস্ত্রখণ্ড পরাইয়া জলে ফেলিয়া দাও। আর আমি তাহাকে জলে ভাসিতে দেখিলে সহ্য করিতে পারিব না, অতএব যাহাতে আমি না দেখিতে পাই একটি বালুকাপূর্ণ কলসী তাহার গলায় বাঁধিয়া সমুদ্রে নিক্ষেপ কর।’ তাহারা তাহাই করিল। পতিত স্থানে মৎস্য কচ্ছপেরা তাহাকে খাইয়া ফেলিল। ভিক্ষুগণ এই দৃশ্য দেখিয়া চিন্তা করিলেন, ‘শাস্তা ব্যতীত কে এই নারীর পূর্বজন্মের কৃতকর্মের কথা জানিবে। চলুন যাই, আমরা শাস্তাকে তাহার পূর্বজন্মের কথা জিজ্ঞাসা করিব’ তারপর গন্তব্যস্থানে পৌঁছিয়া নৌকা হইতে অবতরণ করিয়া প্রস্থান করিলেন।

এদিকে অন্য সাতজন ভিক্ষু শাস্তাকে দর্শন করিবার জন্য যাইবার সময় সন্ধ্যাকালে একটি বিহারে প্রবেশ করিয়া বাসস্থান জিজ্ঞাসা করিলেন। একটি প্রস্তর নির্মিত প্রকোষ্ঠে সাতটি মঞ্চ (খাট) ছিল। তাঁহারা তাহা লাভ করিয়া শয়ন করিলে রাত্রিবেলায় কূটাগার প্রমাণ পাষাণ গড়াইয়া আসিয়া প্রকোষ্ঠের দ্বার রুদ্ধ করিয়া দিল। আবাসিক ভিক্ষুগণ―‘আমরা আগন্তুক ভিক্ষুগণকে এই প্রস্তর প্রকোষ্ঠে থাকিতে দিয়াছিলাম। কিন্তু এখন বিশাল পাষাণখণ্ড আসিয়া প্রকোষ্ঠের দ্বারা রুদ্ধ করিয়াছে, চলুন আমরা ঐ পাষাণখণ্ডকে অপসারিত করিব’ বলিয়া সাতটি গ্রামের লোকদের একত্রিত করিয়া চেষ্টা করিয়াও পাষাণখণ্ডকে অপসারিত করিতে পারিলেন না। অন্তে প্রবিষ্ট ভিক্ষুগণও আপ্রাণ চেষ্টা করিয়াছেন, তৎসত্ত্বেও এক সপ্তাহ ধরিয়া পাষাণখণ্ডকে অপসারিত করা সম্ভব হয় নাই। আগন্তুক ভিক্ষুগণ ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মহাদুঃখ অনুভব করিলেন। সপ্তম দিবসে পাষাণখণ্ডটি নিজে নিজেই পুনরাবর্তিত হইয়া অপগত হইল। ভিক্ষুগণ বাহির হইয়া ‘কোন পাপের ফলে আমরা এই দুঃখ ভোগ করিলাম, তাহা শাস্তা ব্যতীত আর

-ই বা বলিতে পারিবেন। চলুন যাই, আমরা শাস্তাকে জিজ্ঞাসা করিব।’ এই চিন্তা করিয়া প্রস্থান করিলেন। তাঁহারা পূর্বের দুই দল ভিক্ষুর সহিত (যাঁহারা শাস্তার নিকট যাইতেছিলেন) পথিমধ্যে মিলিত হইয়া সকলে একত্রেই শাস্তার নিকট উপস্থিত হইয়া বন্দনা করিয়া একপাশে উপবেশন করিয়া, শাস্তার অনুমতি প্রাপ্ত হইয়া নিজ নিজ দৃষ্ট, অনুভূত কর্মের কথা আনুপূর্বিকভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন।

শাস্তাও আনুপূর্বিকভাবে তাঁহাদের এইরূপ ব্যাখ্যা করিলেন। ‘হে ভিক্ষুগণ, সেই কাক নিজ কৃতকর্মের ফল ভোগ করিয়াছে। অতীতকালে বারাণসীতে এক কৃষক নিজের একটি গরুকে কিছুতেই দমন করিতে পারিতেছিল না। সেই গরুটি কিছুদূর যাইয়া শুইয়া পড়ে। মারিয়া তুলিলেও সে কিছুদূর যাইয়া আবার শুইয়া পড়ে। সে শত চেষ্টা করিয়াও উহাকে দমাইতে না পারিয়া ক্রোধাভিভূত হইয়া ‘এখন হইতে তুমি সুখেই শুইয়া থাকিবে’ বলিয়া পলালপিণ্ড করিয়া তদ্বারা উহার গ্রীবাদেশ মোড়াইয়া আগুন লাগাইয়া দিল। গরুটি দগ্ধ হইয়া সেখানেই মরিয়া গেল। হে ভিক্ষুগণ, তখন কাক সেই পাপকর্ম করিয়াছিল। সে তাহার ফলস্বরূপ অনেককাল নরকে পক্ব হইয়া বিপাকাবশেষে

সাতবার কাকযোনিতে জন্ম লইয়া এক প্রকারে আকাশে দগ্ধ হইয়াই মরিয়াছে।........... #buddho_hoda_24 #history #buddhiststory