Скачать или смотреть ওরে ভাইরে ভাই।বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রথম গান(১৯৪৮)।এই গানটি পাকিস্তান সরকার নিষিদ্ধ করেছিল ১৯৪৮ সালে

ওরে ভাইরে ভাই
বাংলাদেশে বাঙ্গালি আর নাই
যারা ভিড় করে এই পথেঘাটে
বাঙ্গাল যাদের বল,
এদের স্বদেশে নিজেদের দশা
করে টলমল।
বাঙ্গালি তো হিন্দুরা বাংলা ভাষা তাগোর
হুজুর যা কয়, ঠিক কথা, আলবৎ হইবো জরুর,
বলে বাঙ্গালি খান পাঠান ওরা
মীরজাফরের চাঁই।।
আজব কথা ----
গাজার নৌকা পাহাড় দিয়া যায়,
জলে ভাসে শিলা, কিবা বানরে গীত গায়,
ওরা ধানের গাছে খেজুর খোঁজে
লাজে মরে যই।।

(এই গানের শেষ স্তবকে সরাসরি জিন্নাহ সাহেবের উদ্দেশে বলা হয় :)
শোনেন হুজুর------
বাঘের জাত এই বাঙ্গালেরা
জান দিতে ডরায় না তারা,
তাদের দাবি বাংলা ভাষা
আদায় করে নেবে।।


কথা: আনিসুল হক চৌধুরী
সুর ও কন্ঠ: প্রখ‍্যাত গণসংঙ্গীত শিল্পী শেখ লুতফর রহমান।


মহান বাংলা ভাষা আন্দোলন শুরুই হয়েছিল ১৯৪৮সাল থেকে।

১৯৪৮সালের ১৯ শে মার্চ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা কায়েদে আজম মো: আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ২/১ দিন পর রেসকোর্স ময়দানে এক নাগরিক সংবর্ধনার ভাষনে এক পর্যায় বলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা একটাই এবং তা উর্দু। উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা। তখন কিছু ছাত্ররা এই উক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে বসে। রাত্রে জিন্নাহ সাহেবের ছবি পর্যন্ত ছিড়ে ফেলে। মো: আলী জিন্নাহর উক্ত বক্তব‍্য এর প্রতিবাদ করে আনিসুল হক চৌধুরী এই গানটি রচনা করেন এবং শেখ লুতফর রহমান গানটিতে সুরারোপ করে কন্ঠ দেন।
এই গানটি পাকিস্তান সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল ১৯৪৮ সালে।
প্রখাত গণসংগীত শিল্পী শেখ লুতফর রহমান সাহেবের নিজের লেখা বই " জীবনের গান গাই" প্রকাশক: মফিদুল হক, সাহিত‍্য প্রকাশ থেকে প্রকাশিত, বইয়ের ৪৭ ও ৪৮ পৃষ্ঠায় এই গানটি সম্মন্ধে তিনি বিস্তারিত লিখে গিয়েছেন। সেই বইয়ের ৪৮ পৃষ্ঠার তার লিখিত কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।
এই গানটি প্রথম গাওয়ার পর বিপুল সারা পরে যায়।
একদিন এস, এম হলের এক অনুষ্ঠানে গাইবার পর সাদা পোষাকধারী পুলিশ এসে গানের কপিটি নিয়ে যায় এবং সাবধান করে দিয়ে বলে, গানটি যেন আর আমি না গাই।
ভবিষ‍্যতে ও যাতে আর কোনদিন এ গান না গাই সেই ব‍্যাপারে কাগজে বন্ড সই ও নিয়ে যায় পুলিশ এবং হুশিয়ারি ও দিয়ে যায় যে, দ্বিতীয়বার এ গান আবার গাইলে, এই দেশ থেকে চলে যেতে হতে পারে। ওই সময়কে ধারণ করা এ রকম অধিকাংশ গানই তখন আমাকে দিয়েছেন বন্ধু আনিসুল।