Скачать или смотреть "নিউটনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও বৈদিক বিজ্ঞান"🔎Run with

নমস্কার সকল অমৃতের সন্তানগণ! বৈদিক অমৃত জ্ঞান প্রচারে নিয়োজিত VEDA পেজ এ আপনাদের স্বাগতম।

বিজ্ঞান আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। দৈনন্দিন জীবন থেকে ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়ার যাত্রায় বিজ্ঞান এক অনবদ্য উপায়। বিজ্ঞানের নিত্য নতুন কৌশল ও জ্ঞান আমাদের অজানাকে জানতে এবং অসম্ভব সম্ভব করে তুলতে অন্যতম সহায়ক। তবে সেই ঐতিহাসিক যাত্রায় পূর্বেকার বিজ্ঞানীদের অবদান অনস্বীকার্য। যাদের হাতেধরে বিজ্ঞান আজ তার সর্বোত্তম স্থানে অধিষ্ঠিত।

সে ইতিহাসের মহানতম বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনকে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম যার বুদ্ধিদীপ্ত আবিষ্কারের ফলে আমরা বর্তমান সময়ে বিবিধ বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও জ্ঞান লাভ করতে সমর্থ হয়েছি। তার প্রদানকৃত বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মধ্যে Seven Rays থিওরি বা সূর্যের সপ্তরশ্মির ধারণা অন্যতম। ১৬৬৫ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্লেগের কারণে বন্ধ হলে স্যার আইজ্যাক নিউটন তার গ্রামের বাড়ি (Woolsthorpe Manor) ফিরে যান। সে সময় মহামারী চলাকালীন সময়ে তিনি বিজ্ঞানের বহুবিধ তত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা দেন, যার মধ্যে সপ্ত রশ্মি অন্যতম।

বর্তমান সময়ে আমরা সকলে জানি সূর্যের আলো সাত রংয়ের রশ্মির সমন্নয়ে গঠিত। প্রিজমে আলোকরশ্মি ৭ টি ভাগে বিভক্ত হওয়াকে আলোর বিচ্ছুরণ বলে। তবে স্যার আইজ্যাক নিউটনের প্রদানকৃত সপ্ত রশ্মির ধারণা বেদে পরিলক্ষিত হয়। যা ধর্মশাস্ত্র ও বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব মেলবন্ধনের উদাহরণ সৃষ্টি করে।

ঋগ্বেদের ১ম মন্ডলের ১৪৬ তম সুক্তের ১ম মন্ত্রে বলা হয়েছে,

"ত্রিমূর্ধানং সপ্তরশ্মি গৃণীষেহনূনমগ্নিং পিত্রোরুপস্থে।
নিষত্তমস্য চরতো ধ্রুবস্য বিশ্বা দিবো রোচনাপপ্রিবাংসম" ।। - ঋগ্বেদ১/১৪৬/১

অর্থাৎ, ত্রিজগত ব্যাপিত, সপ্তরশ্মিযুক্ত আলোকদাতা ও বিকলতারহিত অগ্নিরূপ পরমাত্মাকে আহ্বান করো । সর্বত্রগামী, অবিচলিত,দ্যোতমান এবং অভীষ্টবর্ষী অগ্নির তেজ চতুর্দিকে ব্যাপ্ত হইতেছে!

উক্ত সপ্ত রশ্মির ধারণা পুনরায় রয়েছে ঋগ্বেদ ১ম মন্ডলের ৫০তম সুক্তের ৮ম মন্ত্রে, যেখানে বলা হয়েছে,

"সপ্তা ত্বা হরিতো রথে বহন্তি দেব সূর্য।শোচিষ্কেশং বিচক্ষনং"। -ঋগ্বেদ ১/৫০/৮

অর্থাৎ, হে দীপ্তিমান সূর্য হতিৎ নামক সপ্তরশ্নি তোমার জ্যোতিকে বহন করে। জ্যেতিই যেনো তোমার কেশ স্বরুপ।

এছাড়াও ঋগ্বেদের অপর আরেকটি মন্ত্রে বলা হয়েছে,

"অয়ং দ্যাবপৃথিবী বি ষ্কপ্রায়দয়ং রথমযুনক্ সপ্তরশ্মিম্ । অয়ং গোষু শচ্যা পক্কমন্তঃ সোমো দাধার দশয়ন্ত্রমুৎসম্"।। -ঋগ্বেদ ৬/৪৪/২৪

অর্থাৎ, এ দিব্য শক্তি দ্যু ও পৃথিবী লোককে স্ব স্ব স্থানে সংস্থাপিত করিয়াছেন । এ দিব্য শক্তি সূর্যের সপ্তরশ্মিময় রথ যোজিত করিয়াছেন । এ দিব্যশক্তি স্বেচ্ছানুসারে ধেণুগনের মধ্যে পরিণত দুগ্ধের উৎস স্থাপন করিয়াছেন ।

আশ্চর্য হলেও সত্য যে, সনাতন ধর্মশাস্ত্র ও বিজ্ঞানের সামঞ্জস্যপূর্ণতা অভূতপূর্ব। ধর্মই যেন বিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ আশ্রয় এবং অনুপ্রেরণা। সেজন্য, প্রাচীন বৈদিক যুগে বিজ্ঞান ধর্মের সাথে সংযুক্ত ছিল। ফলস্বরূপ, বৈদিক ঋষিগণ যেমন রাজনৈতিক, নৈতিক জ্ঞান প্রদান করেছিলেন, তেমনি ভূতত্ত্ব, চিকিৎসা বিজ্ঞান, জৌতির্বিজ্ঞানসহ বিবিধ বৈজ্ঞানিক ধারণা প্রদান করেছিলেন, যার মূল অনুপ্রেরণা ছিলো অমৃত গ্রন্থ বেদ। সেজন্য, আমরা সে অমৃত গ্রন্থ অধ্যয়ন ও তাহার মধ্যে নিহিত জ্ঞান অর্জনের প্রয়াস করি।