‘দেশমাতার অবয়ব তার সন্তানেরা বহন করে। দেশের মানুষের দুঃখে আপ্লুত হওয়া, বিপদে পাশে দাঁড়ানো, পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা, সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলা; যার মাধ্যমে বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়। এই কাজগুলো করে থাকে বন্ধুসভা। আত্মকেন্দ্রিকতা দূরীকরণ, হতাশা, আত্মহত্যা—এসব থেকে বেরিয়ে এসে জীবনকে উপভোগ করা, বন্ধুত্বের অবয়বে সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং একসঙ্গে একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রথম আলো বন্ধুসভার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।’ ১৩ জানুয়ারি খুলনা বন্ধুসভার বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘জৈত্র’র প্রকাশনা উৎসব ও নতুন কার্যনির্বাহী পর্ষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক।
এদিন বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুরা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শেখ আল এহসান।
খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে খুলনা বন্ধুসভার প্রকাশনা উৎসব ও নতুন কার্যনির্বাহী পর্ষদের অভিষেক অনুষ্ঠান
পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘প্রথম আলো বন্ধুসভা মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন, স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ভূত এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে গড়ে ওঠা। বন্ধুসভার বন্ধুদের দেখেছি কীভাবে কষ্ট করে গণিত অলিম্পিয়াড, মেধাবী সংবর্ধনা দেওয়া অনুষ্ঠানগুলো সফল করে তোলে। যখন কোনো অ্যাসিড ভিকটিম আইনি সেবা পাচ্ছে না, তখন তাকে আইনি সেবা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নিয়ে যান বন্ধুরা। দেখেছি বৃদ্ধনিবাসে, এতিমখানায় গিয়ে বন্ধুরা সবার মুখে খাবার তুলে দিতে, বন্যার্তদের পাশে ত্রাণ বিতরণ করতে, শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে। দেখেছি কবিতা আবৃত্তি আয়োজন করতে, বই পড়ার আয়োজন করতে। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিভা বিকাশ করতে কাজ করে থাকে বন্ধুসভা। বন্ধুদের মধ্যে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ ৩০ লাখ শহীদ, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি তাঁদের স্বপ্ন পূরণে, আগামীর বিশ্বজয়ে নেতৃত্বে দেবে প্রথম আলো বন্ধুসভা।’
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, ‘আমরা জানি এই পত্রিকাটির (প্রথম আলো) বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্য আছে। তার মধ্যে একটি হলো তারুণ্যকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তারুণ্যের যে বিশাল শক্তি ও সম্ভাবনা, সেটিকে বন্ধুসভার মাধ্যমে ভালো কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিচ্ছে প্রথম আলো। আমাদের দায়িত্ব শুধু নেওয়া নয়, বরং পৃথিবী থেকে যতটা নিয়েছি, তার চেয়ে বেশি দেওয়া। এই নেওয়ার চেয়ে যখন দেওয়াটা বেশি হয়, তখন পৃথিবীর অগ্রগতি হয়। বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘জৈত্র’ প্রকাশনার মাধ্যমে খুলনা বন্ধুসভা তরুণদের মধ্যে একটি সৃষ্টিশীল ও প্রতিগতিশীল ভাবধারা তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে বিশ্বাস করি।’
আরও বক্তব্য দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বন্ধুসভার সভাপতি অধ্যাপক তুহিন রায়, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (স্টাফ অফিসার টু পিসি) ইমদাদুল হক, সহকারী পুলিশ কমিশনার (খুলনা জোন) ডা. রুবাইয়াত সানজিদ হোসেন প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এম মাসুম বিল্যাহ।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে অতিথিদের সম্মাননা স্মারক এবং বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘জৈত্র’ প্রকাশনায় বিজ্ঞাপনদাতাদের কৃতজ্ঞতা স্মারক প্রদান করা হয়। কৃতজ্ঞতা স্মারক গ্রহণ করেন হলিডেজ শিপিং লাইন্স, কাগজী প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্ট, জি ডি আর আই, ডি এম সি স্কলার্স, কাকন প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনস, সমাজসেবক মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং বেডস।
খুলনা বন্ধুসভার ২০২৪ সালের পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী পর্ষদ ঘোষণার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। অধ্যাপক তুহিন রায়কে সভাপতি ও আসফিক আহমাদ সিদ্দীকীকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্যদের কার্যনির্বাহী পর্ষদ ও ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পর্ষদ ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মাসুদুল আলম, আযম খান সরকারি কমার্স কলেজের সহযোগী অধ্যাপক তারক চাঁদ ঢালী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোর্ত্তুজা আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনার অতিরিক্ত উপপরিচালক এস এম মিজান মাহমুদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক অমিত সরদার, খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামাল হোসেন খান, রেভারেন্ড পলস হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক বনানী আফরোজা, চিকিৎসক শেখ হাফিজুর রহমানসহ অন্য বন্ধুরা।
Информация по комментариям в разработке