বাংলাদেশের শ্রমবাজার সংকুচিত, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ৩০ শতাংশ কমেছে | Labor Migration Drops
২০২৪ সালে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে উল্লেখযোগ্য সংকোচন পরিলক্ষিত হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে বৈদেশিক কর্মসংস্থান। বিএমইটি-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রায় ১৩,০৭,৮৯০ জন কর্মী বিদেশে গিয়েছিলেন। ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ১০,১১,৮৬৯ জনে। এই সংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম।
এখানে উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে প্রায় ৯৫ শতাংশ কর্মী মাত্র পাঁচটি দেশে কাজ পেয়েছেন এই দেশগুলো হলো—সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। বৈদেশিক কর্মসংস্থান বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি, এবং এই খাতে পতন মানে রেমিট্যান্স নির্ভরতা কমে যাওয়া, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে।
এই পতনের পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ওমান, এবং বাহরাইনের মতো দেশগুলোর শ্রমবাজারে নিয়োগ কমে যাওয়া বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়া। বিশেষ করে, মালয়েশিয়া ২০২৪ সালের জুন মাসে তাদের শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয়। যার ফলে সেখানে কর্মী প্রেরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। মালয়েশিয়ায় প্রেরিত কিছু কর্মী কাজ না পেয়ে বিপদে পড়েন, যা দেশটির সরকারের নজরে আসে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু বাংলাদেশি ও মালয়েশিয়ান এজেন্সির মধ্যে অনৈতিক চুক্তির কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ওমানের পরিস্থিতিও অনুরূপ। ২০২৩ সালে যেখানে ১,২৫,০০০ এর বেশি কর্মী ওমানে গিয়েছিলেন, ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা কমে মাত্র ৩৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বাহরাইন ২০১৮ সাল থেকে শ্রমবাজার বন্ধ রেখেছে, ফলে সেখানে নতুন করে কোনো কর্মী যাওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়াও, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ২০২৩ সালে যেখানে প্রায় ১,০০,০০০ কর্মী গিয়েছিলেন, ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। কাতারেও নিয়োগ কমে গেছে, বিশেষ করে ফুটবল বিশ্বকাপ-পরবর্তী সময়ে নির্মাণ খাতের চাহিদা কমে যাওয়ার কারনে।
সরকার নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান করছে, যেমন রাশিয়া, পর্তুগাল, মাল্টা, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ও কঙ্গো। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, এই প্রচেষ্টা এখনও পর্যাপ্ত নয়। রাশিয়া ছাড়া এসব বাজারে নিয়োগসংখ্যা এখনও অনেক কম। তারা বিদ্যমান বাজারগুলো পুনরায় চালু করতে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার করার আহ্বান জানাচ্ছেন। বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও সৌদি আরবের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার তাগিদ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানের এই হ্রাসের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রভাব পড়তে পারে। যদিও ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৭.৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২.১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা যে এটি স্বল্পমেয়াদি। দীর্ঘমেয়াদে শ্রমবাজার সংকোচনের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যেতে পারে, যার প্রভাব পড়বে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও টাকার মূল্যের উপর। ইতোমধ্যেই হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানো আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যা সরকারকে নতুন করে ভাবাচ্ছে।
Keyword:
পোশাক রপ্তানিতে ক্রয়াদেশ কমেছে ৩০ শতাংশ,প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়,প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রশ্ন,প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অফিস সহায়ক প্রশ্ন,আমদানি ব্যয় কমেছে,৩০ কোটি কাটায় প্রবাসীদের হোস্টেল,শ্রীলংকার বর্তমান অবস্থা,শ্রীলঙ্কার বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা,বাংলাদেশ দূতাবাস,কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না,কমে গেছে রেমিটেন্স,পাটের বর্তমান বাজার দর বাংলাদেশ,বেকায়দায় জনশক্তি রপ্তানিকারকরা
Информация по комментариям в разработке