Kindly request to Subscribe my channel and share my content on your social media platforms.
This channel belongs to Avijit Barua Avi, a renowned Author, Researchers, Writer, Columnist, and Successful Businessman.
ইন্দো-প্যাসিফিকের ভূ-রাজনীতি, বাণিজ্য, বাংলাদেশের অবস্থান এবং উদ্বেগ আসলে একটি নতুন শীতল যুদ্ধের জন্ম দিয়েছে। এই উত্তপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল ইন্দো-প্যাসিফিক ফ্রেমওয়ার্ক। ইন্দো-প্যাসিফিক বা ইন্দো-প্যাসিফিক এশিয়া হল বিশ্বের বিশাল বৈচিত্র্যময় জৈব-ভৌগোলিক অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। যা ভারত মহাসাগরের গ্রীষ্মমন্ডলীয় জল এবং পশ্চিম ও মধ্য প্রশান্ত মহাসাগর নিয়ে গঠিত। বিশ্ব বাণিজ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই রুটটি দিয়ে বিশ্বের তিন ভাগের মধ্যে দুই ভাগ পণ্য পরিবহন হয়। বঙ্গোপসাগর, ইন্দো-প্যাসিফিকের ভৌগলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অংশ । আর সেই কারণে বাংলাদেশ সবার আগ্রহের বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বিশ্ব অর্থনীতি এবং বাণিজ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ। বিশ্ব বাণিজ্য পরিসংখ্যানগুলো থেকে প্রতীয়মান হয় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গত অর্ধ দশক ধরে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ইন্দো-প্যাসিফিকের তাৎপর্যের কারণে, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন উভয়ই ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে শাসন করার জন্য একটি অর্থনৈতিক কাঠামো নিয়ে আসার জন্য একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করছে। আর যার উপর ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরাশক্তি দেশ কে হবে তা নির্ধারিত হবে। ২০২২ সালের মে মাসে, যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই দারুসসালাম, ফিজি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। কোরিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম, এই জোটে যোগ দেয়। এই কাঠামো হলো সমস্ত দেশের অর্থনীতির জন্য স্থিতিস্থাপকতা, অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ন্যায্যতা, স্থায়িত্ব এবং প্রতিযোগিতায় ব্যাপক অগ্রগতির ব্যবস্থা করা। এটি একেবারেই নিশ্চিত যে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্কটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তি হয়ে উঠা চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যাতে মার্কিন অর্থনীতির উন্নতি অব্যাহত থাকে এবং তার বিশ্বে কর্তৃত্ববাদ ও নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী থাকে। চীন, মার্কিন এই উদ্যোগকে চীনকে বাদ দেওয়ার এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর মার্কিন আধিপত্য বিস্তারের একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে মনে করে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর দাবি করেছে যে চীনের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) তার প্রতিবেশীদের উপর সামরিক ও অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগ করছে। এই উত্তপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশ, এই অঞ্চলের ভূ- রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ বঙ্গোপসাগর হল ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট জোন এবং পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যের প্রধান পথ। সুতরাং ভৌগোলিক তাৎপর্য এবং উভয় মার্কিন ও চীন বৃহৎ শক্তির সাথে তার সম্পর্কের কারণে, একটি পক্ষ বেছে নেওয়া বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি বলে মনে করতো বিগত হাসিনা সরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। তাছাড়াও অবকাঠামোগত উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশে।বাংলাদেশ সরকারের বিআইআইএসএস এবং জাপান সম্প্রতি ইন্দো-প্যাসিফিকের ভূ-রাজনীতিতে বঙ্গোপসাগরকে অন্তর্ভুক্ত এবং ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে, জাপান বর্তমানে মাতারবাড়িতে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করছে। যা "বে অফ বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট"-এ ব্যাপক অবদান রাখবে, যাকে বিগ-বিও বলা হয়। জাপান বাংলাদেশের সাথে সন্ত্রাস দমন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কাজ করছে। এই ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিকের কৌশলগত বাণিজ্য রুটে অবস্থিত। তাই, ইন্দো-প্যাসিফিকের মার্কিন কৌশল বাস্তবায়নের জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন আইপিইএফ-এ বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ এখন পরাশক্তি গুলোর কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ এখন ভূ-রাজনীতির ষড়যন্ত্রে এবং শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়ে গেছে। বাংলাদেশের গত ‘অর্কেস্ট্রেটেড বিপ্লব’এবং শেখ হাসিনার পতন হলো এই ভূ-রাজনৈতিক পরিণতি। এই বিপ্লব বা ‘অভ্যুত্থান’স্যার ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্ষমতায় এনেছে। এর পাশাপাশি, বর্তমান সংকটে আরেকটি মূল বিষয় হচ্ছে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের কাছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ। মাত্র ৮ বর্গ কি.মি. জুড়ে অপেক্ষাকৃত ছোট দ্বীপ হওয়া সত্ত্বেও, দ্বীপটি উল্লেখযোগ্য কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। এটি বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসাবে কাজ করে, এটিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি প্রবেশদ্বার । ভারত ও চীন উভয়ের সাথেই এর নৈকট্য এর কৌশলগত মূল্যকে আরো জোরদার করে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এবং ডিয়েগো গার্সিয়ার মধ্যে একটি সমান্তরাল রেখা টানা যেতে পারে, যা ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ যেখানে স্নায়ুযুদ্ধের সময় মার্কিন সামরিক নৌ ঘাঁটি ছিল। সুতরাং, বাংলাদেশে চলমান সংকটকে একটি ভূ-রাজনৈতিক পেক্ষাপটে দেখা যেতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং পাকিস্তানের মতো বহিরাগত শক্তিগুলি তাদের নিজ নিজ কৌশলগত উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিতে পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে চাইছে।
Информация по комментариям в разработке