Скачать или смотреть তাইওান চিন মুখোমুখি বাড়বে কিসের কিসের দাম আবার ?

চীনের তাইওয়ান হামলা ও মূল্যস্ফীতির সমীকরণ
একদিকে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের যুদ্ধ যেখানে চলমান, অন্যদিকে ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে চীন তাইওয়ান সংঘাত। তবে কি আরও একটি বিশ্বযুদ্ধ দেখবে বিশ্ববাসী? সে প্রশ্ন এখন তোলা থাক। কেননা, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হলো মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যে প্রভাব পড়েছে তা সামাল দিয়ে না উঠতেই চীন তাইওয়ানের নতুন সংঘাত যুক্ত করতে পারে নতুন মাত্রা। আজকের ভিডিওতে আমরা চীনের তাইওয়ান হামলা ও মূল্যস্ফীতির সেই সমীকরণই মেলানোর চেষ্টা করব! চলুন শুরু করা যাক।

সহজভাবে বলতে গেলে, মুদ্রাস্ফীতি হলো আয়ের পরিপ্রেক্ষিতে মূল্য বৃদ্ধি। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে পণ্য ক্রয়ের ক্ষমতা কমে যাওয়াকেই বলে মুদ্রাস্ফীতি।

এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার ফলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি এবং খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দরিদ্র দেশগুলোতে দুর্ভিক্ষের আশংকার কারণ হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে, বিশেষত ইউরোপে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিতে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশই অনেক এগিয়ে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ এবং ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণে দুই দেশেরই ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতি সামাল দিতে দুই দেশেরই উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যহত হয়। যার ফলে বিশ্বব্যাপি সংকট দেখা দেয় এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকে। এর শুরুটা হয় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে। দুটো দেশই বার্লি, গম, ভূট্টাসহ বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে বিশ্বে অন্যতম। এই যুদ্ধের ফলে দু'দেশেরই পণ্য উৎপাদন হচ্ছে না এবং তারা রপ্তানিতেও অনাগ্রহ দেখায়। যার ফলে বিশ্বব্যাপি মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়ছেই তবে দরিদ্র দেশ ও নিম্নবিত্ত মানুষের দুর্ভোগ অসহনীয় পর্যায়ে যায়।

এই যুদ্ধের দুর্ভোগ কাটানোর আগেই অন্য দুই পরাশক্তি ও বিশ্ব অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাত দেখা দেয় যা ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে যুদ্ধের পর্যায়ে। গত জুন মাস থেকেই আশঙ্কা ছিলো তাইওয়ানের উপর চীনের যেকোনো সামরিক হামলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের থেকেও গুরুতর প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর। এই আক্রমণের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ শিকল ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে দেখা দিবে অব্যবস্থাপনা। এর ফলে বিশেষ প্রভাব দেখা দিবে সেমিকন্ডাক্টর চিপের বাজারে। কেননা তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র উৎপাদনে বিশ্বের অন্যতম প্রধান রপ্তানিকারক দেশ। উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক যান ও মোবাইল ফোনে ব্যবহার করা চিপের জন্য চীনসহ পুরো বিশ্বেরই নির্ভর করতে হয় তাইওয়ানের উপর। দেশটির তথ্যমতে, গত বছর আধুনিক এসব চিপের রপ্তানি পরিমাণ ছিল ১১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের। মজার ব্যপার হলো এই রপ্তানির ৪০ শতাংশই যায় চীনে! সুতরাং এখন চীনের আক্রমণের ফলে অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা সামাল দিতে তাইওয়ান এসব পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বন্ধ করে দিলে এসব চিপের বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাবে যা মুদ্রাস্ফীতিকে প্রভাবিত করবে। অপরদিকে চীন ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য উৎপাদনে অন্যতম। সেক্ষেত্রে চীনও রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারে আর তা হলে বিশ্বে অনেক পণ্যের মূল্য বাড়বে এবং সেই হারে প্রবৃদ্ধি না বাড়ার ফলে মুদ্রাস্ফীতিও বাড়বে।

এবার জানা যাক ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানের ভূরাজনৈতিক অবস্থান। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক মূলত দাঁড়িয়ে আছে তাইওয়ানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছাকৃত অস্পষ্ট এক অবস্থানের কারণে। চীন দাবি করে তাইওয়ান তাদের দেশের অংশ। অপরদিকে তাইওয়ান বলে তারা স্বাধীন। যুক্তরাষ্ট্র বলে, তাইওয়ান কোনও স্বাধীন দেশ নয়, কিন্তু আবার একই সঙ্গে তারা তাইওয়ানকে মিত্র বলে মনে করে।

তাইওয়ান নিয়ে এই যে একটা ধোঁয়াটে অবস্থান, সেটা সবাই মেনে চলে এবং কেউ নিজের দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো আক্রমণাত্মক অবস্থান নেয় না। কারণ স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এটাকেই মন্দের ভালো বলে মনে করে সকলে। কিন্তু তাইওয়ান নিয়ে এই যে একটা পরস্পর-বিরোধী অস্পষ্ট অবস্থান, সেটার ওপর হঠাৎ যেন খুব কড়া আলো ফেলেছে মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সাম্প্রতিক তাইওয়ান সফর। চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের মধ্যে সেটি তৈরি করেছে বড় ধরণের টানাপোড়েন।

গত ২৫ বছরের মধ্যে ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে যাওয়া সবচেয়ে উচ্চপদস্থ মার্কিন রাজনীতিক। চীন-মার্কিন সম্পর্ক এমনিতেই ভালো যাচ্ছে না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন সেটিকে ঠিক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, তখন ন্যান্সি পেলোসির এই সফর যেন তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক টেনে আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে গেলো। এখন যদি চীন তাইওয়ান আক্রমণ করে তবে নিঃসন্দেহে তাইওয়ান-চীন কোনো পণ্য রপ্তানি করবে না। এতে মুল্যস্ফীতি বাড়বে এবং শঙ্কার মুখে পড়বে দরিদ্র দেশগুলো।
আজ এতোটুকুই, দেখা হবে পরের ভিডিও তে। ভিডিওটি ভালো লেগে থাকলে লাইক কমেন্ট করতে ভুলবেন না। এমন তথ্যবহুল মজাদার আরও ভিডিও দেখতে আমাদের চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে বেল আইকনটি প্রেস করুন। এছাড়া আপনি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে ভিডিও দেখতে চাইলে সেটিও টপিকটি জানিয়ে দিন কমেন্টে।
তাইওান চিন মুখোমুখি বাড়বে কিসের কিসের দাম আবার ? #rj_nirob #rj #Bangladesh #নিউজ