স্থানীয় নাম: সাদা কলমী/দুধকলমি
বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea terpenthum
পরিবার : Convolvutaceae
প্রধান ব্যবহার :খাদ্য এবং ওষুধি
দুধকলমি, ফুলের পাপড়ির রং দুধের মতো সাদা বলে হয়তো এই নামকরণ করা হয়েছে। তবে এই ফুলটি Indian Jalap নামেও সমাধিক পরিচিত।
সাদা কলমি ফুলটি মূলত Aniseia martinicensis ভেষজ লতার একটি উদ্ভিদ প্রজাতি।
নিজস্ব আবাসের বাইরে খুব একটা জন্মাতে দেখা যায় না বলে এ গাছকে বিরল মনে করা হয়।
কলমি ফুলের মঞ্জরিদণ্ড পাতা অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর, কোমল ও দীর্ঘ রোমযুক্ত। পুষ্পবৃন্ত বাইরের বৃত্যাংশ থেকে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র, বৃত্যাংশ শিরাবিন্যাসবিশিষ্ট, বাইরের বৃত্যাংশ ৩টি, দেড় থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা। পাতার কক্ষে ফানেলের মতো সাদা রঙের একক ফুল ফোটে। পুংকেশর পাঁচটি, পুংদণ্ডের নিচের অংশ রোমশ।
উপক্রান্তীয় অঞ্চল, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া ও আফ্রিকার তৃণভূমিসহ আর্দ্র থেকে শুষ্ক এবং অর্ধশুষ্ক অঞ্চলে এই গাছ দেখা যায়। এর পাতা ও নরম কাণ্ড পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পরিপূরক সবজি হিসেবে খাওয়া হয়।
আমাদের দেশে সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত ফুল দেখা যায়। ফল ডিম্বাকার, প্রায় দুই সেন্টিমিটার লম্বা এবং বর্ধিত বৃতির মাধ্যমে প্রসারিত হয়। কালো রঙের বীজগুলো মসৃণ, কিনারা পশমি ধরনের।
অন্যান্য ব্যবহার :
এটি একটি লতা গাছ। সাদা কলমী প্রধানত বদ্ধ জলাশয়ে জন্মে। যখন ফুল ফোটে তখন বেশ শোভা বর্ধন করে। সাদা কলমী যেখানে জন্মে সেখানে ঝোপঝাড় সৃষ্টি করে। কলমীর ফুল বেশ আকর্ষণীয়। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক ভাবে দু’ধরণের কলমী দেখতে পাওয়া যায়। একটি ফুল বেগুনী অপরটির ফুল সাদা।
কলমি বাংলাদেশের মানুষের নিকটে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি শাক। এশিয়া মহাদেশসহ উষ্ণঅঞ্চলে এটি দেখতে পাওয়া যায়। সাদা কলমী বর্তমানে বাংলাদেশে একটি বিপন্ন লতা ও ওষুদি উদ্ভিদ। কলমীরর পাতা, কান্ড সবজী হিশেবে খাওয়া হয়। আর ওষুধ হিশেবে কান্ড, শিকড়, ও বীজ ব্যবহৃত হয়।
ওষুধি গুণাগুন:
সাদা কলমী আয়র্বেদ চিকিৎসা ক্ষেত্রে অতিব গুরুত্বপূর্ণ একটি ওষুধি লতা হিশেবে ঐতিহ্য রয়েছে। বর্তমানে ওষুধি গুণাগুণের কারণে এর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাদা কলমী দিয়ে আয়র্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিতে জ্বর, শোথ, ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠ্কাঠিন্য, ফেস্টুলা, রক্তল্পতা, স্থূলতা, পেটের আলসার, ত্বকে চুলকানীসহ বিভিন্ন চর্ম রোগে সফলতার সঙ্গে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এসব ছাড়াও প্রদাহনাশক, বেদনানাশক, মানসিক অস্থিরতা এবং পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি রোগে সাদা কলমী আয়র্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এই প্রজাতি যেমন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আমাশয়, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্লান্তি, বাত, বাত, hydrocephaly, মেনিনজাইটিস, কিডনি রোগে আক্রান্ত এবং inflammations বিভিন্ন রোগ, চিকিৎসার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়।
সাদা কলমীর পুস্টি মান:
সাদা কলমীতে অ্যামিনো এসিড পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। এটি একটি সম্পূরক খাদ্য হিশেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এতে আমিষ ও ভিটামিনসহ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক এবং কপার রয়েছে। এসব কারণে দেহের পুষ্টি পূরণে কলমী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
পরিবেশগত অবদান:
কলমী যে সব জলাশেয় থাকে সে জলাশয়ের পানি পরিস্কার করে, মাছের খাদ্য জোগায় এবং জলজপ্রাণীর শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করে।
বর্তমানে এ দেশে কলমী একটি বিপন্ন লতা।
আল্লাহ হাফেজ
১৭.১০.২০২৪
(The video was recorded in October 2024, from Varai, Tangail, Bangladesh.)
Информация по комментариям в разработке