রোজ গার্ডেন প্রাসাদ – Rose Garden Palace, Dhaka
ঢাকার টিকাটুলি এলাকার গহীন ইতিহাসে লুকিয়ে থাকা এক অনন্য প্রাসাদ, যা সংক্ষেপে রোজ গার্ডেন প্রাসাদ নামে পরিচিত। বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে, ঢাকার আভিজাত্য তখন এক অদ্ভুত প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। শহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এবং জমিদাররা তাদের বিলাসিতা এবং সামাজিক প্রভাব দেখানোর জন্য প্রতিযোগিতা করতেন। সেই সময়ে, ঢাকার বিখ্যাত বালধা গার্ডেন ছিল ধনীদের আড্ডার কেন্দ্রবিন্দু।
ঋষিকেশ দাস, ব্রিটিশ আমলের একজন নব্য ধনী ব্যবসায়ী, সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসলেও ঢাকার খানদানি জমিদাররা তাকে যথাযথ মর্যাদা দিত না। একবার বালধা গার্ডেনে অনুষ্ঠিত এক জলসায় অপমানিত হয়ে ফিরে আসেন তিনি। সেই অপমানের প্রতিশোধ এবং নিজের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ঠিক করেন ঢাকার হৃদয়ে নিজস্ব এক প্রাসাদ গড়ে তুলবেন। এভাবেই জন্ম নেয় রোজ গার্ডেন প্রাসাদ, যা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং একটি প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত।
১৯৩১ সালে, পুরান ঢাকার কেএম দাস লেনে রোজ গার্ডেন বাগানবাড়ি নির্মিত হয়। প্রাসাদটি এত সুন্দরভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল যে, বাগানের কেন্দ্রে মার্জিত মণ্ডপ, ফোয়ারা, পাথরের মূর্তি এবং অনন্য নকশার ঝলকানি ছিল। প্রতিটি কোণায় শিল্পকলা এবং বিলাসিতার ছোঁয়া স্পষ্ট। তবে, ভবনটির সজ্জা ও নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগেই ঋষিকেশ দাস আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যান। ১৯৩৭ সালে প্রাসাদটি বিক্রি হয় খান বাহাদুর আবদুর রশীদের কাছে। এই সময় প্রাসাদটির নামকরণ করা হয় রশিদ মঞ্জিল।
মৌলভী কাজী আবদুর রশীদ ১৯৪৪ সালে মৃত্যুবরণ করার পর প্রাসাদটি উত্তরাধিকার সূত্রে পান তার বড় ছেলে, কাজী মোহাম্মদ বশীর (যিনি হুমায়ুন সাহেব নামে পরিচিত)। ১৯৯৩ সালে আদালতের মাধ্যমে কাজী আবদুর রশীদের মেজ ছেলে, কাজী আবদুর রকীব মালিকানা ফিরে পান। এরপর থেকে ১৯৯৫ সালে তার মৃত্যুর পর স্ত্রী লায়লা রকীব প্রাসাদটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেন এবং বর্তমানে এটি তার মালিকানায় আছে।
প্রাসাদটির স্থাপত্যশৈলী করিন্থীয়-গ্রীক স্টাইল অনুসরণ করে নির্মিত। মূল ভবনের দ্বিতীয় তলায় রয়েছে পাঁচটি কামরা এবং একটি বিশাল নৃত্য হল, নিচতলায় আটটি কামরা। বাগানের মধ্য দিয়ে রয়েছে একটি আয়তকার পুকুর, যার পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বাঁধানো পাকা ঘাট। প্রবেশপথে একটি সুন্দর ইট ও সিমেন্টের ফোয়ারা এবং সাত ধাপ বিশিষ্ট সিঁড়ি রয়েছে, যা আপনাকে প্রথম তলায় নিয়ে যায়।
উপরের তলায় রঙিন বেলজিয়াম কাঁচের তৈরি টিমপেনাম এবং লতাপাতার নকশার কারুকাজে সজ্জিত পডিয়াম, উপবৃত্তাকার ঝুল বারান্দা, এবং করিন্থীয় পিলার দর্শককে মুগ্ধ করে। ভবনের গম্বুজ, ঝাড়বাতি এবং নৃত্য হলের ছাদের ফুলের নকশা, সব মিলিয়ে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
বাগানের পুরাতন গোলাপ বাগান, যদিও এখন আর বিদ্যমান নেই, তবুও এর নামকরণ রোজ গার্ডেন হিসেবে হয়েছিল। এছাড়াও বাগানে বহু ধ্রুপদী মার্বেল মূর্তি এবং অলঙ্কৃত ঝর্ণা ছিল, যা এখনও দর্শকদের আকর্ষণ করে।
রোজ গার্ডেন প্রাসাদ বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত ভবন। ১৯৮৯ সালে এটি সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকায় এই প্রাসাদটি ক্রয় করে এবং জাদুঘরে রূপান্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করে।
আপনি যদি আমাদের চ্যানেলে নতুন হয়ে থাকেন, সাবস্ক্রাইব করতে পারেন, একটি লাইক দিতে পারেন, কমেন্ট করতে পারেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনার একটি লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ও সাবস্ক্রাইব আমাদের অনেক বেশি উৎসাহিত করে সামনের ভিডিও তৈরিতে।
রোজ গার্ডেন প্রাসাদ শুধু একটি প্রাসাদ নয়, এটি ঢাকার বিংশ শতকের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনের প্রতিফলন। এটি ঢাকার পুরান এলাকার এক অমূল্য ধন, যা প্রতিটি কোণায় ইতিহাসের গল্প বলে। এখানকার স্থাপত্যশৈলী, নকশা, বাগান, ফোয়ারা, মূর্তি, নৃত্য হলের ঝাড়বাতি – সব মিলিয়ে দর্শককে এক রাজকীয় অভিজ্ঞতা দেয়।
পুরান ঢাকার এই প্রাসাদে ঢুকে, দর্শক যেন ঢাকার পুরোনো ধনাঢ্য ও জমিদারি জীবনের এক ঝলক দেখতে পান। প্রতিটি কোণ, প্রতিটি বৃত্তাকার বারান্দা এবং প্রাচীন কাঠের আসবাবপত্রের সঙ্গে ইতিহাস মিশে আছে। ঢাকার নগর জীবন, ব্যবসায়ী শ্রেণির আভিজাত্য, আর শিল্পচর্চার মিলন এখানেই চোখে পড়ে।
রোজ গার্ডেনের প্রতিটি দিক ইতিহাসের সাক্ষী। প্রাসাদের প্রবেশপথ, দোতলা ও তিনতলা অংশের বিস্তারিত নকশা, করিন্থীয় পিলার, রঙিন কাঁচের টিমপেনাম, লতাপাতার কারুকাজ, রাজকীয় ঝাড়বাতি – সবই দেখায় ঢাকার বিংশ শতকের বিলাসিতা এবং শিল্পচর্চার এক অপূর্ব সমাহার।
এই ভিডিওতে আমরা দেখাবো কিভাবে এই অপমানের প্রতিশোধে গড়া প্রাসাদ ঢাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এবং জমিদারদের আড্ডা, বিলাসিতা এবং সামাজিক প্রতিযোগিতার প্রতিফলন। দর্শকরা দেখতে পাবেন রোজ গার্ডেনের অতুলনীয় স্থাপত্য, বাগান, ফোয়ারা, নকশা, মূর্তি এবং নৃত্য হল – যা এক প্রকার রাজকীয় অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
ভিডিওটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি পাবেন রোজ গার্ডেন প্রাসাদের পূর্ণ ইতিহাস, স্থাপত্যশৈলী, মালিকানা, সংস্কার, এবং ঢাকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের গল্প।
রোজ গার্ডেন প্রাসাদ এখনো ঢাকার পুরনো ঐতিহ্য, শিল্প, সংস্কৃতি ও আভিজাত্যের এক মিশেল হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি দর্শক এখানে ঢুকে যেন ঢাকার বিংশ শতকের ইতিহাসে ভ্রমণ করে।
Rose Garden Palace, located in the heart of Old Dhaka, is one of Bangladesh’s most historic and iconic palaces. Built in 1931 by wealthy businessman Rishikesh Das after he faced humiliation at Baldha Garden, this palace was meant to showcase elegance, culture, and artistic pride.
Constructed in Corinthian-Greek architectural style, the palace stands on six grand columns with intricate vine carvings. The building features stained Belgian glass, carved wooden doors, decorative pediments, chandeliers, and elegant halls that reflect early 20th-century grandeur.
Watch full video for details.
Информация по комментариям в разработке