Скачать или смотреть জীব মন্ডল (Biosphere) জীবমন্ডলের প্রকৃতি, শ্রেণীবিভাগ, বিস্তার(পর্ব 1)দ্বাদশ শ্রেণী।

জীব মন্ডল (Biosphere),পর্ব 1 দ্বাদশ শ্রেণী।
জীব মন্ডল :
পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এখানে জীবনের অস্তিত্বের উপস্থিতি। এই বৈশিষ্ট্যই পৃথিবীকে মহাবিশ্বের অন্যান্য গ্রহগুলি থেকে পৃথক করেছে। পৃথিবীতে জীবের বসবাসযোগ্য সমগ্র অঞ্চলকে একত্রে জীবমন্ডল বা বায়োস্ফিয়ার বলে। এটি একটি সামগ্রিক এলাকা।
। বছর। প্রায় 200 কোটি বছর আগে সমুদ্রের জলে বিভিন্ন প্রকার অজৈব রাসায়নিক উপাদানের মিশ্রণে এক জটিল অনু সৃষ্টি হয় যা তার চারপাশ থেকে নানা অজৈব উপাদান সংগ্রহের মাধ্যমে নিজের অনুরূপ অণু তৈরি করতে শুরু করে । বহু কোটি বছর ধরে পরিবর্তিত হতে হতে বর্তমানের উন্নত ও জটিল জীবের সৃষ্টি হয়েছে। এই সুদীর্ঘ সময়কালে পৃথিবীর পরিবেশ বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে এবং সেই পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবদেহ পরিবর্তিত বা অভিযোজিত হয়ে বর্তমানের বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবজগতের সৃষ্টি করেছে।
জীবমন্ডেলের প্রকৃতি (Nature of Biosphere): (১) আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হল জীবমণ্ডল, যেখানে বাস্তুতন্ত্রের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। (২) জীবমণ্ডলের সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপাদান হল কোশ (cell)। আবার একাধিক কোশ নিয়ে গড়ে উঠেছে কলা, কলার সমষ্টিতে গড়ে ওঠে অঙ্গ, একাধিক অঙ্গ নিয়ে গঠিত হয় তন্ত্র এবং একাধিক তন্ত্র নিয়ে গঠিত হয় জীবদেহ। এইভাবে জীব, জনসংখ্যা, জীবগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত হয় বাস্তুতন্ত্র এবং জীবমণ্ডল। (৩) জীবমণ্ডল এমন একটি প্রণালী (System) যেখানে জৈব উপাদান, অজৈব উপাদান এবং শক্তির পারিপার্শ্বিক নির্ভরতা ও মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থিত ব্যবস্থা গঠিত হয়ে থাকে। এখানে অবশ্য মনে রাখতে হবে এটি একটি উন্মুক্ত প্রণালী (Open system)। (৪) জীবমণ্ডলের একাধিক জীবগোষ্ঠী সাধারণভাবে বসবাস করে এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে এই সকল জীবগোষ্ঠীর দৈহিক অভিযোজনের মাধ্যমে তাদের গঠন ও কাজ নিয়ন্ত্রিত হয়। (৫) জীবমণ্ডল হল সূর্য থেকে আগত শক্তি এবং অব্যবহৃত শক্তির মধ্যবর্তী স্তর যেখানে শক্তি Steady State-কে মেনে চলে। সৌরশক্তি উৎপাদক থেকে খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে বিভিন্ন খাদকের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। (৬) জীবমণ্ডলের মধ্যস্থ জীবগোষ্ঠীর সাথে পরিবেশের পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তুতন্ত্রের উদ্ভব ঘটে এবং সমধর্মী বাস্তুতন্ত্রগুলি একত্রিত হয়ে বায়োম (Biome) গঠন করে।
জীবমন্ডলের শ্রেণীবিভাগ (Classification of Biosphere) : জীবমন্ডলে 2 ধরনের জীব আছে— উদ্ভিদ ও প্রাণী। অবস্থান অনুসারে জীবমন্ডলকে 3 টি ভাগে ভাগ করা যায়।
I) বারি-জীবমন্ডল (Hydro-biosphere) : নদী, হ্রদ, জলাশয়, সমুদ্র ও ভৌম জলস্তর নিয়ে বারিমন্ডল গঠিত। জলভাগে যে সব উদ্ভিদ ও প্রাণী আছে তারা বারি জীবমন্ডলের অন্তর্গত।
II) অশ্ম-জীবমন্ডল (Litho-biosphere): স্থলভাগের বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ, প্রাণী, মানুষ, শ্যাওলা, মস, লিচেন, ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্ন আনুবীক্ষণিক জীব নিয়ে অশ্ম জীবমন্ডল গঠিত।
III) বায়ু-জীবমন্ডল (Atmo-biosphere): বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে যেসব জীব বাস করে তারা বায়ু জীবমন্ডলের অন্তর্গত। বিভিন্ন পাখি, ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি এই অঞ্চলের প্রধান জীব।
জীবমন্ডলের বিস্তার (Extent of Biosphere): পৃথিবীর জল, স্থল , বায়ু এই তিনটি অংশেই জীবমন্ডলের বিস্তার লক্ষ্য করা যায়। তাই জীবমন্ডলের অনুভূমিক বিস্তার সমগ্র পৃথিবী জুড়ে। তবে এর উল্লম্ব বিস্তার খুবই কম।
জীবমন্ডলের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারিত হয় অক্সিজেনের প্রাপ্যতা, বায়ুর উষ্ণতা, বায়ুচাপ, জলীয় বাষ্পের যোগান প্রভৃতি বিষয়ের উপর। জীবমণ্ডলের নিম্ন সীমা নির্ভর করে সমুদ্রজলের অভ্যন্তরে সূর্যালোকের প্রবেশ ও অক্সিজেনের প্রাপ্যতার উপর। সাধারণভাবে দেখা যায় ভূপৃষ্ঠ থেকে 6 কিমি উচ্চতা পর্যন্ত জীবের বেঁচে থাকার উপযোগী পরিবেশ আছে। তবে বর্তমানে ভূপৃষ্ঠ থেকে 15 কিমি উচ্চতাতেও