চন্দ্রিমা উদ্যান বা জিয়া উদ্যান
ঢাকা শহর— যে শহর কখনও ঘুমায় না। যানবাহনের শব্দ, মানুষের ভিড়, আলো আর ধোঁয়ার এই নগরে এক টুকরো শান্তির নিশ্বাস খুঁজে পাওয়া যেন স্বপ্নের মতো। কিন্তু সেই স্বপ্নের ঠিক মাঝখানেই আছে এমন এক জায়গা, যেখানে শহরের কোলাহল হারিয়ে যায়, মন পায় প্রশান্তির ছোঁয়া— এই জায়গাটির নাম চন্দ্রিমা উদ্যান, যাকে অনেকে চেনে জিয়া উদ্যান নামে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের কাছাকাছি অবস্থিত এই উদ্যানের সৌন্দর্য যেন শহরের ফুসফুস। চারদিকে ঘেরা সবুজে, মাঝখানে ঝলমলে হ্রদ, তার পাশে লাল-বাদামি ইটের পথ— যেন প্রকৃতির আঁকা এক নিখুঁত ক্যানভাস। সকালবেলা হাঁটতে আসা মানুষজন, হাতে চা নিয়ে বসে থাকা বন্ধুদের দল, আর বিকেলে ঘুরতে আসা পরিবার— সব মিলিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যান প্রতিদিনই এক নতুন গল্প বলে।
এই উদ্যানের নাম “চন্দ্রিমা” এসেছে বাংলা শব্দ ‘চন্দ্র’ থেকে, যার মানে চাঁদ। সত্যিই, পূর্ণিমার রাতে যখন চাঁদের আলো হ্রদের পানিতে প্রতিফলিত হয়, তখন মনে হয় যেন পুরো প্রকৃতি এক জাদুতে মোড়ানো। তাই হয়তো অনেকেই একে বলে “ঢাকার সবচেয়ে রোমান্টিক পার্ক”।
চন্দ্রিমা উদ্যান শুধু একটি পার্ক নয়— এটি ইতিহাসেরও এক অংশ। এখানে অবস্থিত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার, যা এই উদ্যানের আরেকটি পরিচয় বহন করে— “জিয়া উদ্যান” নামে। তাই অনেকে একে বলে চন্দ্রিমা উদ্যান বা জিয়া উদ্যান— দু’নামেই সমান পরিচিত ও প্রিয়।
প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই উদ্যান খোলা থাকে সাধারণ মানুষের জন্য। সকালে হাঁটার পথ, বিকেলে বন্ধুদের আড্ডা, আবার সন্ধ্যায় প্রেমিক-প্রেমিকার নির্জন মুহূর্ত— প্রতিটি সময়ে উদ্যানের রূপ আলাদা।
হ্রদের পাশে বসে গেলে মনটা হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে যায়। বাতাসে মিশে থাকে পাখির ডাক, গাছের পাতার খসখস শব্দ, আর দূরে কোথাও বাচ্চাদের হাসির আওয়াজ।
যারা ঢাকায় থেকে একটু শান্তি খুঁজতে চান, তাদের জন্য চন্দ্রিমা উদ্যান যেন এক প্রাকৃতিক থেরাপি।
এখানে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসে— কেউ হাঁটতে, কেউ ছবি তুলতে, কেউবা নিঃশব্দে কিছুক্ষণ বসে থাকতে। অনেক ইউটিউবার, ফটোগ্রাফার আর ভ্রমণপ্রেমী তাদের ক্যামেরায় ধরে রাখে এই উদ্যানের সৌন্দর্য। আর সন্ধ্যা নামলে আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা— যেন প্রকৃতি পরেছে রুপালি পোশাক।
চন্দ্রিমা উদ্যান শুধু শহরের সৌন্দর্য নয়, এটি ঢাকার মানুষদের জীবনের এক অংশ। এখানে দেখা যায় জীবনের নানা রঙ— শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী, বয়স্ক দম্পতি থেকে শুরু করে শিশুরা— সবাই এখানে একটু শান্তি খুঁজতে আসে।
আর এই শান্তির অনুভূতিই একে আলাদা করে দেয় অন্য সব জায়গা থেকে।
ঢাকার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও চন্দ্রিমা উদ্যান যেন এক ভিন্ন জগত। গাছপালার ছায়া, পাখির কিচিরমিচির, হ্রদের জলে ভেসে বেড়ানো রোদ— সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত সুরেলা সমন্বয়।
তুমি যদি কখনও জীবনের ক্লান্তি অনুভব করো, মন ভারী লাগে— একবার চলে যেও এই উদ্যানে।
হয়তো হাঁটতে হাঁটতে তোমার মনও হালকা হয়ে যাবে, বাতাসে ছুঁয়ে যাবে এক নতুন আশার গন্ধ।
এই উদ্যানে দাঁড়িয়ে মনে হয়— প্রকৃতি এখনো জীবন্ত, এখনো আমাদের চারপাশে সৌন্দর্যের অস্তিত্ব আছে।
এখানেই বোঝা যায়, শহরের ধোঁয়া আর কংক্রিটের ভেতরেও শান্তি খুঁজে পাওয়া সম্ভব— যদি চোখ খুলে তাকানো যায়।
চন্দ্রিমা উদ্যান শুধু একটা জায়গা নয়, এটা এক অনুভূতি।
একটা স্মৃতি, যেখানে সময় থেমে যায়, আর মন ফিরে পায় তার প্রকৃত নিজস্বতা। #viralvideo #travel #bangladesh
my fb link👇
/ 1abcdswzc8
Информация по комментариям в разработке