নরমাল পলিথিন পেপার কি মালচিং হিসাবে ব্যবহার করা যবে ? । আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হিসেবে মালচিং

Описание к видео নরমাল পলিথিন পেপার কি মালচিং হিসাবে ব্যবহার করা যবে ? । আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হিসেবে মালচিং

নরমাল পলিথিন পেপার কি মালচিং হিসাবে ব্যবহার করা যবে ? । আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হিসেবে মালচিং

আমরা অনেকেই মনে করি বাজারের নরমাল পলিথিন পেপার কি মালচিং হিসাবে ব্যবহার করা যবে ? কিন্তু এটা করা যাবে না, কারন নরমাল পলিথিন পেপার আর মালচিং এক না। কারন মালচিং পেপারে ২ টা কালার থাকে উপরে সাদা নিচে কালো ফলে প্লাস্টিকে ঢেকে থাকার কারণে সেখানে সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না। ফলে সালোকসংশ্লেষণ সংগ্রহ করতে না পারায় ওই অংশে আগাছা জন্মায় না। এতে মাটির পুরো খাদ্য গাছ একাই পায়। ফলে ভালো হয় ফলন কিন্তু নরমল পলিথিনে সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে ফলে সালোকসংশ্লেষণ সংগ্রহ করতে পারায় আগাছা জন্মায় ।

🔴মালচিং/মালচিং শিট কী?
👉‘মালচিং’ এসেছে ‘মালচ’ শব্দ থেকে। ‘মালচ’ শব্দের অর্থ ‘মাটি ঢেকে দেওয়া’। মৃত অথবা পুরোনো, শুকনো বা কাঁচা পাতা, বিচালি বা খড়, কচুরিপানা প্রভৃতি দিয়ে মাটি ঢেকে চাষ করার প্রথা চালু রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশে। চাষের জমিতে এসব বস্তু দিয়ে যখন ঢেকে দেওয়া হয়, তখন তাকে ‘মালচিং' বলা হয়। তবে বর্তমানে চাষাবাদ বাণিজ্যিক ও আধুনিকীকরণ হওয়ায় এ পুরোনো প্রথা বর্জন বা ত্যাগ করে এক ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে, যা ‘মালচিং শিট’ নামে পরিচিত।
👉'মালচিং শিট' আধুনিক চাষাবাদের এক উন্নত পদ্ধতি, যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ফসলের দ্রুত বৃদ্ধি হয়। তাছাড়া এ পদ্ধতির মাধ্যমে চাষের অনুকূল পরিবেশও তৈরি করা সম্ভব।
👉জমিতে চাষের জন্য প্রথমে সারি তৈরি করে তার ওপর এক ধরনের পাতলা প্লাস্টিকের থান বিছিয়ে সেই থানের ওপর ফসল অনুযায়ী ছিদ্র করতে হয়। এরপর এ ছিদ্রের ভেতর দিয়ে বীজ বা চারা রোপণ করে ফসল উৎপাদন করা হয়।

🔴 মালচিং পেপার ব্যবহারে যত সুবিধা🌱
🌱পানি সংরক্ষণঃ
ফসলের ক্ষেতে আর্দ্রতা সংরক্ষণে মালচিং বিশেষভাবে উপকারী। কারণ, মালচিং ব্যবহারের ফলে মাটির রসের বাষ্পায়ন প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ ফসল ক্ষেতের পানি সূর্যের তাপ ও বাতাসে দ্রুত উড়ে যায় না। এতে জমিতে রসের ঘাটতি পড়ে না। ঘাটতি না হওয়ায় সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বর্ষাকালে শুধু বৃষ্টির পানি হলেই চলে। কারণ, এ পানি প্লাস্টিকের ছিদ্র দিয়ে শেকড়ে পৌঁছায়। এর মাধ্যমে পানির যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণ সম্ভব। তখন আর সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মালচিং ব্যবহারের ফলে জমিতে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ আর্দ্রতা সংরক্ষণ হয়

🌱আগাছা নিয়ন্ত্রণঃ
মালচিংয়ের ছিদ্র দিয়ে রোপণ করা গাছ বেরিয়ে আসে। আর বাকি অংশটুকু ঢেকে থাকায় আগাছা বের হতে পারে না। অর্থাৎ, প্লাস্টিকে ঢেকে থাকার কারণে সেখানে সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না। ফলে সালোকসংশ্লেষণ সংগ্রহ করতে না পারায় ওই অংশে আগাছা জন্মায় না। এতে মাটির পুরো খাদ্য গাছ একাই পায়। ফলে ভালো হয় ফলন।

🌱পোকা নিয়ন্ত্রণঃ
মালচিংয়ের ফলে পোকার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। নিমাটোড বা ফসলে কৃমির আক্রমণ রোধ হয়। পলিথিন-জাতীয় এ শিটের ওপরের রঙ সিলভার, নিচের রঙ কালো। সিলভারে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়। ফলে পোকা বসতে পারে না। গাছে পোকা ধরে কম। এতে গাছ ও ফল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে৷

🌱সারের ব্যবহার হ্রাসঃ
এ পদ্ধতি ব্যবহারে জমি ও গাছে তুলনামূলক কম সার দিতে হয়। এতে চাষির খরচ কমে যায়।

🌱দ্রুত অঙ্কুরোদ্গমঃ
প্লাস্টিক শিট দিয়ে মাটি ঢেকে রাখার ফলে ঢাকা অংশের উষ্ণতা রাত ও শীতকালে তুলনামূলক তপ্ত থাকে। ফলে বীজ থেকে অঙ্কুরোদ্গম দ্রুত হয়। এছাড়া শীতকালে মালচ ব্যবহার করলে মাটিতে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা ধরে রাখা সম্ভব।

🌱ফলের রঙ ধারণঃ
প্লাস্টিক মালচিংয়ের প্রতিফলিত আলো ফলের রঙ ধারণে সহায়তা করে।

🔴মালচিং বেড করার নিয়ম🌿
🌱সবজি চাষে মালচিং পদ্ধতির ব্যবহার বেলে ও দোঁআশ মাটির ক্ষেত্রে উপযোগী। এ পদ্ধতিতে চাষ করতে হলে প্রথমে জমি তৈরি করে নিতে হবে। যেমন ৩৩ শতাংশ বা ১ বিঘা জমিতে মালচিং করার আগে মাটির সঙ্গে ৫০ মন জৈব সার ও রাসায়নিক সার যেমনঃ ড্যাপ ৪০ কেজি, পটাশ ২৫ কেজি, জিপসাম ১২ কেজি, চিলেটেড দস্তা ১ কেজি, সলু বোরন ১ কেজি, ম্যাগনেসিয়াম ৩ কেজি, কার্বোফুরান ২ কেজি, কার্বেন্ডাজিম ২০০ গ্রাম মিশিয়ে জমি চাষ দিয়ে ১ হাত বা ৪৫ সেমিঃ বেড তৈরি করতে হবে মাচা ফসলের ক্ষেত্রে৷ এক বেড থেকে আরেক বেডের দূরত্ব ৪৫ সেন্টিমিটার হওয়া উচিত। মাচা ফসলের ক্ষেত্রে ৬/৭ হাত দুরত্ব রেখে আবার বেড করবেন৷ এখানে মাচা হবে৷ পেঁপে বা যেকোন মাঠ সবজি যেমন টমেটো, বেগুন, মরিচ, ক্যাপসিকাম ইত্যাদির ক্ষেত্রে ৩- ৩.৫ ফুট প্রস্হের বেড তৈরি করবেন৷ এরপর তৈরি করা বেডে বিশেষ এ পলিথিন বিছিয়ে দিতে হবে। বিছানোর সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এ সময় পলিথিন টানটান করে বিছিয়ে দেওয়া উত্তম। এতে আগাছা জন্মানোর কোনো সুযোগ থাকবে না। পলিথিনের নিচে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বেডের দুই ধারের পলিথিন চার থেকে ছয় ইঞ্চি মাটির গভীর ঢুকিয়ে মাটি চাপা দিতে হবে, যা প্লাস্টিকগুলোকে মাটির সঙ্গে ধরে রাখতে সাহায্য করে। এখন পলিথিন বিছানো বেডে মাপযোগে ফুটো করে তাতে বীজ বপন বা চারা রোপণ করতে হবে। প্রতি ৬ ফুট পরপর পেঁপে চারা রোপন করবেন৷ ২ পাশে প্রতি ১ হাত পরপর সবজি চারা রোপন করবেন৷ মাচা ফসলের ক্ষেত্রেও ১ হাত পরপর চারা রোপন করতে হবে৷ মালচিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত হলো ড্রিপ বা বিন্দু সেচ। এমন সুযোগ যদি না থাকে তাহলে এক একটি সারির পর ছোট নালা তৈরি করেও সেচ দেওয়া যায়। প্লাস্টিকগুলো একাধিকবার একই ধরনের ফসলের চাষের ক্ষেত্র ব্যবহার করা সম্ভব।
লেখকঃ
কৃষিবিদ শিবব্রত ভৌমিক
কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি ইউনিট
পিকেএসএফ এবং সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা
ইমেইলঃ [email protected]

Комментарии

Информация по комментариям в разработке