Скачать или смотреть ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের ডিগ্রির ‘অনুমোদন নেই’। স্বীকারও করেছেন ডা. জাহাঙ্গীর। Today news

বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ অনুযায়ী, দেশের চিকিৎসকরা তাদের সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশন বা ভিজিটিং কার্ডে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি উল্লেখ করতে গেলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের তথা 'বিএমডিসির' অনুমোদন নিতে হয়।

তবে এই আইন মানেননি কিটো ডায়েটের পরামর্শদাতা ডা. জাহাঙ্গীর কবির।

বিএমডিসিতে আবেদন ও অনুমোদন ছাড়াই চারটি ডিগ্রি তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করছেন।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে ডা. জাহাঙ্গীরকে চিঠি দিয়েছে বিএমডিসি।

এদিকে, ডিগ্রি ব্যবহারের অনুমোদন পেতে বিএমডিসিতে আবেদন না করার কথা স্বীকার করেছেন ডা. জাহাঙ্গীরও।

আইন অনুযায়ী, প্র্যাকটিস করা যে কোনো চিকিৎসককে তাদের অর্জিত ডিগ্রির সদনের কপি বিএমডিসিতে জমা দিয়ে ব্যবহারের অনুমোদন নিতে হয়। বিএমডিসি সেগুলো যাচাই করে একটি নিবন্ধন নম্বর দেয়। এরপর ডিগ্রির তথ্য বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করার অনুমতি মেলে। তবে ডা. জাহাঙ্গীর কবির তার সাইনবোর্ডে, প্রেসক্রিপশনে যেসব ডিগ্রি উল্লেখ করেছেন সেগুলোর বিষয়ে কোনো আবেদনই করেননি।

ডা. জাহাঙ্গীর এমবিবিএস ছাড়াও চারটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি ব্যবহার করছেন। এগুলো হলো ডিপ্লোমা মডিউল ইন ডায়াবেটিস, ডিপ্লোমা মডিউল ইন অ্যাস্থামা, ডিপ্লোমা মডিউল ইন সিওপিডি, স্পিরো ৩৬০ স্পাইরোমেট্রি কোর্স । এর কোনোটিই ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি বিএমডিসি।

চিকিৎসকদের সংগঠন (এফডিএসআর) এর মহাসচিব চিকিৎসক ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের ব্যবহার করা ডিগ্রিগুলোর অনুমোদন বিএমডিসি দেয়নি। এগুলো আসলে মানুষকে প্রলুব্ধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। এটা এক ধরনের প্রতারণার শামিল এবং অবশ্যই নিয়ম লঙ্ঘন।’

এ বিষয়ে বিএমডিসির ডেপুটি রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘ডা. জাহাঙ্গীর কবির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে ভিডিও তৈরি করছেন। এই ভিডিওগুলোতে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশন প্যাডে বিভিন্ন ডিগ্রি ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে এমবিবিএস-এর পর বাকিগুলো বিএমডিসি থেকে অনুমোদিত নেওয়া হয় নাই।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই চিঠি হয়তো আজকালের মধ্যে উনার কাছে পৌঁছাবে। ওই চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, তিনি কেন অনুমোদন ছাড়াই ডিগ্রিগুলো ব্যবহার করছেন। আমাদের আইন অনুযায়ী, এটা কী ধরনের শাস্তিযোগ্য অপরাধ সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যাখ্যা দিতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।’

বিএমডিসির পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে চাইলে মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, তাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে যা হয়তো আজকালের মধ্যে উনার কাছে পৌঁছাবে।
আর ‘১৫ দিনে মধ্যে তার জবাব না এলে ধারাবাহিকভাবে তিনটা চিঠি তার কাছে পাঠানো হবে। এরপরেও জবাব না দিলে ডিগ্রিগুলো নকল ধরে নিয়ে র‌্যাবের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমাদের সংস্থার কর্মকর্তারা সেই অভিযানে থাকবেন।’

ডিগ্রির অনুমোদনের বিষয়ে বিএমডিসিতে আবেদন না করার কথা স্বীকার করে ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘বিএমডিসি থেকে কোনো চিঠি আমি এখনও পাইনি। যখন চিঠি আসবে তখন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। চিঠিতে কী জানতে চাওয়া হয়েছে, তা দেখে করণীয় নির্ধারণ করব।’

এর আগে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে ‘অপচিকিৎসার’ অভিযোগ তোলে চিকিৎসকদের সংগঠন এফডিএসআর।

এ অভিযোগের পর দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়ে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে বিতর্কিত ভিডিওসহ মোট তিনটি পোস্ট সরিয়ে নেয়ার কথা জানান ডা. জাহাঙ্গীর।

তবে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এফডিএসআর নেতারা বলছেন, ডা. জাহাঙ্গীরকে কিটো ডায়েট সংক্রান্ত সব ভিডিও সরাতে হবে। তা না হলে ‘অপচিকিৎসার’ অভিযোগে মামলা করা হবে তার বিরুদ্ধে। এসব ভিডিও সরিয়ে নিতে ডা. জাহাঙ্গীরকে সাত দিনের সময় দিয়েছে এফডিএসআর।



#ডা._জাহাঙ্গীর_কবির #কিটো_ডায়েট