ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু, কৌশলগত সেতুতে কার বেশি লাভ?

Описание к видео ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু, কৌশলগত সেতুতে কার বেশি লাভ?

#Bangladesh-India Moitri Setu

গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি পর্যালোচনা ও ছয়টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে ভারতের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বাংলাদেশের অনেক নদী এখন মৃতপ্রায়।

১৯৯৭ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদী মুহুরি, খোয়াই, ধরলা, দুধকুমার, মনু ও গোমতী নিয়ে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু, ভারতের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বলতে গেলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে অনেক নদী।

অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন নিয়ে বছরের পর বছর ভারত যখন স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক এমন সময় বাংলাদেশের ফেনী নদীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশলগত সেতু নির্মাণ করেছে দেশটি।

খাগড়াছড়ির রামগড়ে ফেনী নদীর ওপর ১.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ "বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুটির মাধ্যমে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে ভারতের শক্তি আরো দৃঢ় হবে।

ভারত তার "লুক ইস্ট" পলিসি বা "পূর্বদিকে তাকাও" নীতি" বাস্তবায়নে কৌশলগত এই সেতুটির সুবিধা ভালোভাবেই ভোগ করবে।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত বৈদেশিক সম্পর্ক বিস্তারের ‘লুক ইস্ট পলিসি’ ভারতের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।

লুক ইস্ট পলিসির অন্যতম লক্ষ্য ভারতকে একটি আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত করা এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চীনের কৌশলগত প্রভাব খর্ব করা।

সুতরাং, ফেনী নদীর ওপর সেতু বানানোর ভারতের ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশলকে অস্ত্র হিসেবে সহজেই ব্যবহার করতে পারতো বাংলাদেশ।

লুক ইস্ট নীতির মাধ্যমে ভারতের আঞ্চলিক মোড়ল হওয়ার খায়েশও এতে অনেকটাই খর্ব হতো।

কিন্তু, এই সুযোগটিও হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ।

কার লাভ, কার ক্ষতি?

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ফেনী নদীর ওপর নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ চলতি বছরের ৯ই মার্চ উদ্বোধন করা হয়।

এটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম ও বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়কে যুক্ত করেছে।

ফেনী নদী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত। এই সেতুর মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে ত্রিপুরা।

ভারতের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৮২.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড়ের মহামুনিতে ২৮৬ একর জমির ওপর ‘মৈত্রী সেতু’ নির্মাণ করে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৩ই জানুয়ারি সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়। এ সেতুর মোট পিলার ১২টি। এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ ৮টি ও ভারতের অংশে ৪টি।

সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের সাথে এবং ওপারে সেতু থেকে প্রায় ১২০০ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হয়েছে।

দুই লেনের এ সেতুর দুপাশে রয়েছে ফুটওয়ে।

সেতুটি চালু হলে ত্রিপুরার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারবে।

সাব্রুম থেকে চট্টগ্রাম বন্দর মাত্র ৭২ কিলোমিটার দূরে। আর আগরতলার দূরত্ব ১০৪ কিলোমিটার।

কিন্তু এতে বাংলাদেশের লাভ কতটা হবে?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এটিকে দুই দেশের মধ্যে নতুন বাণিজ্য করিডোর হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

এদিকে, বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশন সিস্টেমের অধ্যাপক ও আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির বিশেষজ্ঞ প্রবীর দে বলেছেন, "এই ব্রিজটা একটা গেমচেঞ্জার। কারণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পণ্য চলাচল যেমন এতে সহজ হবে, তেমনি চট্টগ্রাম বন্দরেরও অ্যাকসেস মিলবে অনায়াসে।"

সুতরাং এই গেমচেঞ্জার ব্রিজটার মাধ্যমে ভারতের লাভের খতিয়ান সহজেই অনুমান করা যায়।

যদিও দুই দেশের উপকারের কথাও বলেছেন প্রবীর দে।

তার মতে, এই সেতুর মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশ - উপকৃত হবে দুপক্ষই।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ২০১৫ সালের জুন মাসে যখন এই সেতু প্রকল্পের সূচনা করা হয়, তখন ঢাকাতে নরেন্দ্র মোদী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিলে যৌথভাবেই সেটির উদ্বোধন করেছিলেন।

এ সেতু থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাতের নাগালে চলে আসবে।

এই সেতুর মাধ্যমে ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরামসহ সেভেন সিস্টার হিসেবে পরিচিত ৭ রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ হয়ে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে ভারত।

এছাড়া, সেতুটির মাধ্যমে ত্রিপুরা হয়ে উঠবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লজিস্টিকাল গেটওয়ে।

Facebook :
facebook.com/Abu-Sufian-707913045885885

Twitter :
twitter.com/sufian_reporter

Комментарии

Информация по комментариям в разработке