Скачать или смотреть রাধামাধব ও মঙ্গলাচরণ | Gita-14/22-25

Part-2 👇
   • গীতাসাধক ধারাবাহিক সেমিনার, শ্লোক-১৪/২১-২৫...  

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা — অধ্যায় ১৪, শ্লোক ২২–২৫
এই চারটি শ্লোক একত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে শ্রীকৃষ্ণ তিনটি গুণ (সত্ত্ব, রজ, তম) যাঁর উপর প্রভাব ফেলে না, সেই গুণাতীত পুরুষের লক্ষণ ব্যাখ্যা করেছেন। নিচে শ্লোকগুলি, অনুবাদ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।

শ্লোক ১৪.২২

শ্রীভগবান উবাচ —
প্রকাশঁ চ প্রবর্ত্তিঞ্ চ মোহংৈব চ পাণ্ডব ।
ন দ্বেষ্টি সম্প্রবর্ত্তানান্ন নিবর্ত্তানিকাংক্ষতি ॥

বাংলা অনুবাদ:
শ্রীভগবান বললেন— হে পাণ্ডব! যখন প্রকাশ (সত্ত্বগুণ), প্রবৃত্তি (রজোগুণ) এবং মোহ (তমোগুণ) প্রকাশ পায়, তখন যে ব্যক্তি তাদের ঘৃণা করে না, এবং সেগুলি চলে গেলেও যিনি তাদের প্রত্যাশা করেন না— তিনি গুণাতীত।

ব্যাখ্যা:
এখানে বলা হয়েছে, গুণ যখন কাজ করে তখন গুণাতীত ব্যক্তি তাদের দ্বারা না-আনন্দিত হন, না-অসন্তুষ্ট। তিনি গুণের আগমন বা প্রস্থান— কোনোটিকেই কামনা করেন না। তিনি নিরপেক্ষ।


শ্লোক ১৪.২৩

উদাসীনবদাসীনো গুণৈর্যো ন বিকাম্প্যতে ।
গুণা বর্ত্তন্ত ইত্যেৱ যঃ তিষ্ঠতি ন ঙ্গতে ॥

বাংলা অনুবাদ:
যিনি নির্লিপ্তের মতো অবস্থান করেন, গুণের দ্বারা বিচলিত হন না এবং ভাবেন যে “গুণগণই কার্য করছে”— এমন ব্যক্তি কখনোই গুণের দ্বারা প্রভাবিত হন না।

ব্যাখ্যা:
এই শ্লোকে ভগবান বলছেন, গুণাতীত ব্যক্তি গুণকে “আমি” বা “আমার” বলে মনে করেন না। তিনি জানেন গুণগণ নিজের নিয়মে চলে। তিনি সাক্ষী রূপে থাকেন, নিজেকে কর্মফল থেকে বিচ্ছিন্ন রাখেন।


শ্লোক ১৪.২৪

সমদুঃখসুখঃ স্বস্থঃ সমলোষ্টাশ্মকাঞ্চনঃ ।
তুল্যপ্রিয়াপ্রিয়ো ধীরস্তুল্যনিন্দাত্মসংস্তুতিঃ ॥

বাংলা অনুবাদ:
তিনি সুখ-দুঃখে সম, আত্মস্থ, মাটি-পাথর-সোনাকে সমদৃষ্টি করেন, প্রিয় ও অপ্রিয় বিষয়ে সমভাবাপন্ন, এবং নিন্দা ও প্রশংসায় সমান-চেতা থাকেন।

ব্যাখ্যা:
এখানে গুণাতীত ব্যক্তির সমবৃত্তি বা সমদৃষ্টি-ভাব বোঝানো হয়েছে। তাঁর চিত্ত বাহ্য অভিজ্ঞতাগুলির দ্বারা বিচলিত হয় না।

শ্লোক ১৪.২৫

মানাপমানযোস্তুল্যস্তুল্যোমিত্রারিপক্ষযঃ ।
সর্বারম্ভপরিত্যাগী গুণাতীতঃ স উদ্যতে ॥

বাংলা অনুবাদ:
যিনি সম্মান-অপমানকে সমভাবে দেখেন, বন্ধু ও শত্রুকে সমানরূপে দেখেন, এবং সকল কর্মের আরম্ভ ত্যাগ করেন— তিনিই গুণাতীত বলে বিবেচিত হন।

ব্যাখ্যা:
এই শ্লোকে গুণাতীত পুরুষের ঔদাসীন্য ও পরিত‍্যাগের চূড়ান্ত রূপ তুলে ধরা হয়েছে। তিনি আরম্ভের (initiative) আকাঙ্ক্ষাও ত্যাগ করেছেন। তিনি নিজেকে ঈশ্বরের দাস মনে করে কাজ করেন, ফল বা স্বতন্ত্রতাকে নিজের বলে মনে করেন না।


সংক্ষেপে সারাংশ (গুণাতীত ব্যক্তির লক্ষণ):

গুণের কার্যকলাপ দেখেও সে নির্লিপ্ত থাকে

সুখ-দুঃখে সম

সম্মান-অপমানে সম

সোনা ও মাটিতে কোনো পার্থক্য দেখেন না

প্রিয়-অপ্রিয়, বন্ধু-শত্রু— সকলের প্রতি সমভাব

কর্মের সূচনায় আকর্ষণহীন