Скачать или смотреть ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও আমাদের প্রতিবাদের ভাষা’ II palestine genocide

‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও আমাদের প্রতিবাদের ভাষা’

আজকের আলোচনাটা খুব সেনসিটিভ বিষয়ে সেটা নিঃসন্দেহে আপনারা টাইটেল দেখে ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরে গিয়েছেন। ফিলিস্তিনে ইসরাইলী আগ্রাসন বহুবছর ধরে চলমান। এটার বিপক্ষে আমরা ইতিপূর্ব বহুবার কথা তুলেছি, প্রতিবাদ জানিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। বর্তমান সময়ে ফিলিস্তিনে আমার ভাইদের উপর সেই বর্বরতার মাত্রাটা আরো বেড়েছে এবং সময় যত যাচ্ছে সেটা আসলে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তেই আছে। আমরা স্পষ্টত বুঝতে পারছি ইজরাইলের পরিকল্পনা হলো ফিলিস্তিনকে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। কিন্তু আমরা নিঃসন্দেহে সেটা চাই না আমরা এই বর্বরতার বিপক্ষে সব সময় ছিলাম আছি এবং থাকবো ইনশাল্লাহ। আমার ভাইদের উপরে যে অত্যাচার হচ্ছে নিপীড়ণ হচ্ছে গণহত্যা চালানো হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে সেটার জন্য ইসরাইলের প্রতি আমাদের ভেতরে দ্রোহের যে আগুন বিদ্রোহের যে আগুন সেটা কিন্তু অনেক আগেই জ্বলে উঠেছিল। আপনাদের অনেকের মত আমারও মনের ভেতরে সুপ্ত বাসনা আছে যদি ইসরাইলের বিপক্ষে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ আসে, আমি নিঃসন্দেহে কোন চিন্তা ছাড়া সে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করব না। কিন্তু সরাসরি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো সেরকম সুযোগ তো আমাদের সামনে নেই বা এখনো পর্যন্ত তৈরি হয়নি কিংবা আমরা তৈরি করতে পারি নি। সুতরাং এ মুহুর্তে আমরা বড়জোর কি করতে পারি? ফিলিস্তিনের পক্ষে বৈশ্বিক জনমত সৃষ্টিতে সহায়তা করতে পারি। সেটা করার অনেক পদ্ধতি আছে।
হ্যাঁ এখন শুধু জন্মদৃষ্টি না করে আরো কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় এই বিদ্রোহটা আরো কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় কিভাবে ফলপ্রসু করা যায় কেন হতে পারে দুটিগতভাবে সকলে এক জায়গায় বসে বা এক প্ল্যাটফর্মে এসে সেখানে আলোচনা করে নতুন পদ্ধতি বের করতে পারি যেটা দ্বারা আমার ভাইয়েরাও উপকৃত হতে পারে কিন্তু সেটা না করে আমরা যেটা করছি তা কি ঠিক হচ্ছে?

আমাদের ভাইদের উপর, বোনদের উপর, মায়েদের উপর যে হত্যাযজ্ঞ টা চালানো হচ্ছে সেটাকে আমরা জেনোসাইড বা মহা হত্যাযজ্ঞ বলছি যেটা সহিংসতার একদম চরম রূপ। আর এর বিপক্ষে আপনার জানানোর জন্য আপনি আমি যে ভাঙচুরটা করছি সেটাও সাহিংসতা। তো সহিংসতার বিপক্ষে বৈশ্বিক জনমত সৃষ্টির কাজ করতে গিয়ে আপনি নিজেই যদি সহিংসতার সাথে জড়িয়ে পড়েন, আপনাকে দেখে আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলন আরো মানুষ যোগদানের অনুপ্রেরণা পাবে বলে আপনার মনে হয়? নিশ্চয়ই পাবে না।

অ্যারিস্টোটলের বিখ্যাত একটা গ্রন্থ আছে ‘নিকোমেকিয়ান এথিক্স’ (Nicomachean Ethics) এই গ্রন্থের পঞ্চম অধ্যায়ে Doctrine of the Mean তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এক পর্যায়ে অ্যারিস্টটল খুব সুন্দর একটা কথা বলেছেন, “Anyone can become angry—that is easy. But to be angry with the right person, to the right degree, at the right time, for the right purpose, and in the right way—that is not easy."

#freefreepalestine

অর্থাৎ, "রাগান্বিত হওয়া যে কারও পক্ষে সহজ। কিন্তু সঠিক ব্যক্তির উপর, সঠিক মাত্রায়, সঠিক সময়ে, সঠিক উদ্দেশ্যে এবং সঠিক পদ্ধতিতে রাগ প্রকাশ করা—সেটাই কঠিন।"

আমি এরিস্টটলের এই কথার সাথে একমত। আমার মনে হয় আপনাদের রাগটাকে সঠিক জায়গায় প্রয়োগ করার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। আপনারা অবশ্যই আন্দোলন করুন তবে সেটা যেন নতুন করে আর কোন ব্যক্তির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সেটা খেয়াল করবেন।

ইসরাইলেরই আগ্রাসনের বিপক্ষে আমাদের এই প্রতিবাদ, আন্দোলন যতদিন আমার ভাইয়েরা মুক্তি না পাবে ততদিন চলবে। আমরা যার যার জায়গা থেকে ইসরাইলের সকল পণ্য বয়কট করব, অযথা সহিংসতা না করে বৈশ্বিক জনমত সৃষ্টিতে আমাদের সভা, সেমিনার, পদযাত্রা চলবে এবং আমরা সকলে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করব যাতে করে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের রহমতে আমার ভাইয়েরা এই জালেমদের হাত থেকে অতিসত্বর মুক্তি পেতে পারে।

আমি বিশ্বাস করি, সেই দিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে, আমার ভাইয়ের জামিলের বর্বরতা মুক্ত হবে এবং ফিলিস্তিন হয়ে উঠবে বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু। ইনশাআল্লাহ।