Скачать или смотреть পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য বগুড়ার মহাস্থানগড় দুর্গনগরী

পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য বগুড়ার মহাস্থানগড় দুর্গনগরী

সংরক্ষণের অভাবে ঝুঁকিতে প্রাচীন মহাস্থানগড় নগরী

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বগুড়া জেলায় শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত মহাস্থানগড় হলো দেশের প্রাচীনতম দুর্গনগরী ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ভাণ্ডার। ইতিহাসবিদদের মতে, এটি প্রাচীন পুণ্ড্রনগরের রাজধানী ছিল এবং খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দী থেকে শুরু করে বিভিন্ন যুগে এ নগরী রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
মহাস্থানগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক খননে উঠে এসেছে প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো সভ্যতার নিদর্শন। এখানে পাওয়া গেছে মুদ্রা, মৃৎপাত্র, শিলালিপি, দুর্গের প্রাচীর, প্রাচীন মন্দির, মসজিদ ও স্তূপের ধ্বংসাবশেষ। এ নগরীর দক্ষিণ গেটে অবস্থিত ‘মহাস্থানগড় শিলালিপি’ বাংলার ইতিহাস গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত।
এ স্থান শুধু হিন্দু নয়, বৌদ্ধ ও মুসলিম সভ্যতারও সাক্ষী। গুপ্ত, পাল ও সেন রাজাদের শাসনামল থেকে শুরু করে মুসলিম শাসনকাল পর্যন্ত মহাস্থানগড়ে সভ্যতার নানা চিহ্ন আজও দৃশ্যমান। এজন্য একে বলা হয় বহুমাত্রিক ঐতিহ্যের প্রতীক।
বর্তমানে মহাস্থানগড়ে প্রতিদিন অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে আসেন। বগুড়া শহর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় সহজেই পৌঁছানো যায়। পর্যটন খাতে এর গুরুত্ব অপরিসীম। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক সংরক্ষণ ও আধুনিক অবকাঠামো গড়ে তোলা না হলে এই অমূল্য ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ইতোমধ্যে মহাস্থানগড়কে সংরক্ষণের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ইউনেস্কোও একে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে মহাস্থানগড়কে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা গেলে এটি হতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্র।