Скачать или смотреть মোল্লারা ইসলামের মধ্যে ফেরকা তৈরি করে আর অলি আল্লাহ মানুষেরে ইসলাম গ্রহণ করায় কাজী জাবের আল

. লাইলাতুল কদরের রহস্য অনেকেরই জানা নাই!

এইবার আমরা ‘লাইলাতুল কদর’-এর বিষয়টা নিয়ে সামান্য একটু আলোচনা করতে চাই, যদিও এই বিষয়টি মারেফতের বাণী নামক বইটাতে আগেই লিখা হয়েছে। লাইলাতুল কদরের শাব্দিক অর্থ হলো শক্তিশালী রাত্রি, অথবা মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি। লাইল অর্থ রাত্রি এবং কদর অর্থ প্রথমে শক্তিশালী তারপর মর্যাদাপূর্ণ। এই কদর রাত্রিটির মাঝেও আমরা দুইটি রূপ দেখতে পাই। একটি মেজাজি রূপ এবং অপরটি হাকিকি রূপ। মেজাজি রূপের কদর রাত্রিটি মহানবি রমজানের শেষ অংশে বেজোড় রাত্রিতে খুঁজতে বলেছেন। কেন বেজোড় রাত্রিতে খুঁজতে বললেন? কেন জোড় রাত্রিতে খুঁজতে মানা করলেন? বেজোড় দিয়ে একের কথাটি বুঝানো হয়েছে আর জোড় দিয়ে দুইয়ের কথাটি বলা হয়েছে। কেন একের কথাটি বলা হলো? কেন বেজোড় রাত্রে লাইলাতুল কদরের রাত্রিটি খুঁজতে বলা হলো? কেন জোড় রাত্রে খোঁজা নিষেধ করে দিলেন?
হাকিকি দর্শনে নফ্স তথা আমি এবং খান্নাসরূপী শয়তান, যাহা সৃষ্টিরাজ্যের কোথাও নাই কেবলমাত্র মানব নফ্সের সঙ্গে খান্নাস থাকার বিশেষ উদ্দেশ্যে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমি ও খান্নাস মিলে দুইজন তথা জোড়। সাধক যখন এই আমার ভেতরের খান্নাসরূপী শয়তানটিকে তাড়িয়ে দেবার জন্য সর্বপ্রকার লোভ-মোহ হতে হাত গুটিয়ে ধ্যান-সাধনার মোরাকাবা-মোশাহেদায় লিপ্ত থাকেন তখন সাধকের জন্য ওটাই রোজা। ওটাই সিয়াম। সিয়ামের শাব্দিক অর্থটি হলো বিরত থাকা, বর্জন করা। কার থেকে বিরত থাকব এবং কাকে বর্জন করব? আপন নফ্সের ভেতরের খান্নাসরূপী শয়তানটিকে বর্জন করার ধ্যান-সাধনাটি হলো হাকিকতের সিয়াম তথা রোজা। ধ্যান-সাধনার চূড়ান্ত পর্যায়ে তথা শেষের দিকে যখন আল্লাহর বিশেষ রহমতে খান্নাসরূপী শয়তানটিকে আপন নফ্স হতে বর্জন করা হয় তখনই নফ্স একা হয়ে যায়, এবং তখনই সেই সাধকের জন্য কদর রাত্রিটির তথা শক্তিশালী রাত্রিটির আগমন ঘটে। তখনই সাধকের ভেতরের বীজরূপী রুহটি প্রকাশিত ও বিকশিত হয়ে পড়ে।
রুহ যখন বিকশিত ও প্রকাশিত হয়ে পড়ে তখনই উহাকে বলা হয় রুহ নাজেল করা। আর যেইমাত্র রুহ নাজেল করা হয় তখন ফেরেশতাদের আগমন অবধারিত। ইহাই হাকিকতের লাইলাতুল কদর। যদি মেজাজি লাইলাতুল কদর রাত্রিটির উল্লেখ না থাকত তাহলে হাকিকতের লাইলাতুল কদরের হারিয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকত। মেজাজি লাইলাতুল কদরটি মূর্ত তথা দেখা যায় আর হাকিকি লাইলাতুল কদরটি হলে বিমূর্ত তথা দেখা যায় না। তাই যে-সাধক হাকিকি লাইলাতুল কদর রাত্রিটির সন্ধান পেয়েছেন তাঁর জীবন আল্লাহর কাছে সার্থক হবে। হাকিকি লাইলাতুল কদর যে সাধকের জীবনে ঘটেছে তিনি নিঃসন্দেহে ওলিয়ে কামেল, তিনি নিঃসন্দেহে সারাপা তথা আল্লাহ্র নুরের সাগরে অবগাহন করা একজন সাধক। এই রকম সাধকের পরিচয়টি আল্লাহ্ নিজেই রহস্যের দেয়াল দিয়ে ঢেকে রাখেন। কারণ সবাই যদি বুঝতে পারে, জানতে পারে তাহলে ‘আমি তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছি’- কথাটির আর সার্থকতাটি থাকে না। সুতরাং এক কথায় বলা যায় যে রমজানের একুশ, তেইশ, পঁচিশ, সাতাশ, উনতিরিশ এই বেজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান করাটা হলো মেজাজি লাইলাতুল কদর। এই মেজাজি লাইলাতুল কদরকে এড়িয়ে যাওয়া, কিছু একটা যা-তা মন্তব্য করা মোটেই ঠিক নয়, বরং অন্যায় বলেই ধরে নিতে চাই।

-মারেফতের গোপন দর্শন : অনেকেরই অজানা
চেরাগে জান শরীফ
ডা. বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল-সুরেশ্বরী

[ বাবা জাহাঙ্গীর লিখিত সকল বই কিনতে কল করুনঃ ০১৭১৭৬৩৬৩৫৩ ]

#babajahangir #babajahangirbd #sufism #fbpost #viraltrend #trending #babajahangirbookspdf